লিবিয়া হয়ে নৌকায় করে সাগরপথে ইউরোপ যাত্রাকালে তিউনিসীয় উপকূলে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জন অভিবাসী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশি সংখ্যক লোকই বাংলাদেশি নাগরিক বলে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস।
স্থানীয় সময় শনিবার ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
দূতাবাস জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লিবিয়া উপকূল থেকে ৫২ জনের একদল অভিবাসীর সাগরপথে ইউরোপ যাত্রাকালে তিউনিসীয় উপকূলে তাদের বহনকারী নৌকাটিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
পরবর্তী সময়ে তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী নৌকাটি থেকে ৯ জন অভিবাসীর মৃতদেহ এবং ৪৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারী অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
দূতাবাস জানায়, উদ্ধার বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দূতাবাস তিউনিসিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং আইওএমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে।
এছাড়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারদের সঙ্গে সাক্ষাৎপূর্বক তাদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণ এবং মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশিদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে দূতাবাসের একটি টিমকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তিউনিসিয়া পাঠানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
দূতাবাস বলছে, আন্তর্জাতিক অভিবাস সংস্থার তথ্যমতে বিভিন্ন দেশের উপকূল হতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টাকালে ২০২৩ সালে তিন হাজারেরও বেশি অভিবাসী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং নিখোঁজ হয়েছেন।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ অবৈধ অভিবাসনের বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। লিবিয়া ও তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী তাদের ওপর কঠোর নজরদারি জোরদার করেছে। ফলে বর্তমানে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ।
ঝুঁকি নিয়ে এভাবে ইউরোপ যাত্রা না করতে বাংলাদেশি অভিবাসীদের সতর্ক করেছে দূতাবাস। দূতাবাস বলছে, সবাইকে দালাল ও পাচারকারীদের প্ররোচনা-প্রতারণায় পড়ে জীবনের ঝুঁকি না নেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
এছাড়া লিবিয়ায় কর্মরত/বসবাসরত প্রবাসীদেরকে বর্ণিত বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতদেরকেও সতর্ক করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।