‘চাইতে গেলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘আমরা নই রাজাকার চাই আমরা অধিকার’ এসব স্লোগান দিয়ে সামনে রেখে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা প্রথার যৌক্তিক সমাধানের দাবিতে বগুড়ার সান্তাহারে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সমাবেশ শেষে তারা সান্তাহার জংশন অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেন ২ ঘণ্টা আটকিয়ে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর আগে, এদিন সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার সান্তাহার বিপি স্কুল থেকে শুরু করে পৌর শহরের সরকারি কলেজ হয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র স্বাধীনতা মঞ্চ ও রেলগেটে এসে ঘণ্টাব্যাপী বিভিন্ন দাবি তুলে স্লোগান দেয় তারা। এরপর সকাল ১১টায় তারা রেললাইনের উপর বসে পড়ে। এ ঘটনায় উত্তরবঙ্গের সাথে প্রায় ২ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা সকলে মেধার মূল্যায়ন চাই। এই মেধার মূল্যয়ন চাইতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের ভাইবোনদের উপর অন্যায়ভাবে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের ছেলেরা। তাদের হামলার কারণে আহত হয়ে অনেক ভাই নিহত হয়েছে। আমরা আর কোনো ভাই বোনদের হারাতে চাই না। সেই কারণে সারাদেশে চলমান ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মতো আমরাও রাস্তায় নেমেছি। প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের এই আনদোলন অব্যাহত থাকবে যতোদিন মেধার মৃল্যায়ন করা না হবে ততোদিন পর্যন্ত। সেই সাথে সরকারের কাছে অনুরোধ দ্রুত কোটা সংস্কার করা হোক।
শিক্ষার্থীরা সান্তাহার জংশন স্টেশনের রেলগেট এলাকায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থান করছে। এমন সংবাদে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা আফরোজ ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পিন্টু শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে। এবং তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে গেলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রচণ্ড রোদে আন্দোলনে প্রায় ৫০ শতাধিক শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে যান। তাদের খাবার পানি ও স্যালাইন খাইয়ে সুস্থ করেন তিনি৷ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যে আন্দোলন করা হচ্ছে এটা সঠিক উপায় নয়। হাইকোর্টে অপেক্ষাধীন অবস্থায় রয়েছে আগামী এক মাসের মধ্যে এই কোটা সংষ্কার বিষয়ে একটা সমাধান আসবে। এরপর আস্তে আস্তে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে যান।
এ প্রসঙ্গে আদমদিঘী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজেশ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘সারাদেশে যে আন্দোলন চলছিল তার ধারাবাহিকতায় সান্তাহারে শিক্ষার্থীরা আজ সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু হঠাৎ করে রেল লাইনের উপর শিক্ষার্থীরা বসে পড়ে। এরপরে কিছু সময়ের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। আমরা সকলের প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্তক অবস্থানে আছি। শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।