শিরোনাম
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে যা জানাল বিটিআরসি পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা কাদেরের আন্দোলনকারীদের দেশে থাকার অধিকার নেই: জাফর ইকবাল স্ত্রীর দাবি নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অনশন আগামীকাল সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা শাবি ছাত্রলীগের কক্ষ থেকে পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে ২৭ শতাংশ, আগস্ট থেকে কার্যকর রাবি প্রশাসনকে সময় বেধে দিলেন আন্দোলনকারীরা রংপুর পার্ক মোড়ের নাম ‌‘শহীদ আবু সাঈদ চত্বর’ দিলেন শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু নওগাঁয় কোঠা সংস্কার মিছিল ছাত্রলীগের বাঁধায় পন্ড, উভয় পক্ষের বাহাস জামালপুরে ট্রেন ও সড়ক অবরোধ কফিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার : সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে পবিত্র আশুরার শোক মিছিল মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে পবিত্র আশুরার শোক মিছিল বিশ্ব গণমাধ্যমে কোটা আন্দোলনে নিহতের খবর পাসপোর্টের রোকনের ঘরে আলাদিনের চেরাগ নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে লাগামহীন ঘুষ বাণিজ্য : রোহিঙ্গা পাসপোর্টও হয়
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন

কেউ নাক গলালে আরও ভ’য়াবহ হা’ম’লার হুঁশিয়ারি ইরানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আপলোড সময় : রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪

সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলার দুসপ্তাহের মাথায় প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালাল ইরান। শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।

রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, মূলত ইসরাইলজুড়ে থাকা সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ওসব হামলা চালানো হয়। তবে মূল লক্ষ্য ছিল ইসরাইলের বিমান-বিধ্বংসী প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া। যদিও লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ঘাঁটি থেকে ভূপাতিত করার দাবি করেছে তেল আবিব।
কিন্তু হঠাৎ করে কেন চড়াও হলো ইরান? এই হামলা কি তবে আরেকটি বড় যুদ্ধে রূপ নেবে? কী বলছে পশ্চিমারা?

হঠাৎ করে কেন ক্ষেপল ইরান?

সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরাইলের বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা চালিয়েছে ইরানের ইসলামি বিল্পবী গার্ড। চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে থাকা ইরানি দূতাবাসে বিমান হামলায় ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পস কুদস ফোর্সের সাত কর্মকর্তা নিহত হন, যার মধ্যে দুজন উচ্চ পদস্থ জেনারেলও ছিলেন।

 

এ হামলার জন্য সরাসরি ইসরাইলকে দায়ী করা হলেও মুখে কুলুপ আঁটে নেতানিয়াহু সরকার। হামলার পরপরই দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে যায়। পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয় ইরান। সবশেষ সেই প্রতিশোধমূলক হামলার জবাব এলো শনিবার রাতে। কুদস ফোর্স জানায়, দামস্কে ইরানের দূতাবাসের হামলার পাশাপাশি ইহুদিবাদী শাসকের অগণিত অপরাধের প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালিয়েছে তারা।

হামলার মাত্রা কেমন?

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এটিই প্রথম ইসরাইলে সরাসরি ইরানের হামলা। ৩ শর বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তেহরান। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী জানায়, ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইরান।

 

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি, তেহরান সব মিলিয়ে ৩ শর বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও কামিকাজে ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। সাধাণরত ড্রোন মিসাইল উৎক্ষেপণ শেষে ঘাঁটিতে ফিরে আসলেও কামিকাজে ড্রোন-এর উলটো। লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর সেখানেই এটি ধ্বংস হয়ে যায়। অর্থাৎ এটি আত্মঘাতী একটি ড্রোন বা উইপন। তেহরানে এগুলো শাহেদ-১৩৬ নামে পরিচিত। এ অস্ত্রই শনিবার ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ক্ষতির পরিমাণ

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির দাবি, ইসরাইলের আকাশসীমায় পৌঁছানোর আগেই বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। তার দাবি ৯৯ শতাংশ হামলাই প্রতিহত করা হয়েছে। এতে ইসরাইলের সামান্য ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

 

আর ওয়াশিংটনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের ধারণা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইসরাইলের দিকে লক্ষ্য করে ছোড়া প্রায় সব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটি থেকে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে থামিয়ে দেয়া হয়।

 

এরই মধ্যে অনলাইনে বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ইসরাইলি বিমান-বিধ্বংসী প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের পাশাপাশি ইসরাইলি ভূখণ্ডে থাকা স্থাপনায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে দেখা গেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশসহ ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা বরাবরের মতো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে ইরানের হামলাকে নির্লজ্জ আক্রমণ উল্লেখ করে ঐক্যবদ্ধভাবে কূটনৈতিক জবাব দেয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।

 

এরইমধ্যে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে জরুরি ভিত্তিতে শিল্পন্নোত দেশগুলোর জোট জি সেভেনের জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন বাইডেন। অন্যদিকে, উত্তেজনা যেন না বাড়ে সেদিকে জোড় দিয়েছে চীন, জাপান ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলো।

 

জাতিসংঘেও গড়িয়েছে ইরান-ইসরাইল উত্তেজনা। সংস্থাটিতে একে অপরের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন। সিরিয়ায় কনস্যুলেট হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে এই হামলা বলে জানিয়েছে ইরান।

 

অন্যদিকে তেহরান জাতিসংঘের সনদ লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ ইসরাইলের। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছে তেল আবিব। পাশাপাশি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করারও অনুরোধ জানিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার।

 

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইরানের হামলাকে যুদ্ধ শুরুর আভাস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।  তিনি বলেন, এ অঞ্চল বা বিশ্ব কেউই আরেকটি যুদ্ধ চায় না।

উত্তেজনা আরও বাড়ার শঙ্কা

ইরান জানিয়েছে ইসরাইলি অপরাধের জন্য এই হামলা একটি সতর্কবার্তা। বড় ধরনের সামরিক অভিযান না হলেও ইসরাইলি কর্মকাণ্ডের জন্য এককালীন প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ এটি। তবে ইরানের এ হামলার কোনো প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করা হলে আরও বড় ধরনের পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাইসি প্রশাসন।

 

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি দূত মার্কিন হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইরানের সামরিক পদক্ষেপ মূলত দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে ইহুদিবাদী শাসকের আগ্রাসনের জবাব। বিষয়টি এখানেই শেষ বলে গণ্য করা যেতে পারে।

 

তবে ইসরাইল যদি আরেকটি ভুল করে তাহলে ইরানের প্রতিক্রিয়া আরও কঠোর হবে। ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা আশতিয়ানিও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনো দেশ ইরানে হামলার জন্য তাদের আকাশসীমা উন্মুক্ত করে দিলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেবে তেহরান।

 

অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, প্রতিরক্ষা এবং প্রতিশোধ যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ইসরাইল। তবে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।

 


এই বিভাগের আরও খবর