শিরোনাম
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে যা জানাল বিটিআরসি পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা কাদেরের আন্দোলনকারীদের দেশে থাকার অধিকার নেই: জাফর ইকবাল স্ত্রীর দাবি নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অনশন আগামীকাল সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা শাবি ছাত্রলীগের কক্ষ থেকে পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে ২৭ শতাংশ, আগস্ট থেকে কার্যকর রাবি প্রশাসনকে সময় বেধে দিলেন আন্দোলনকারীরা রংপুর পার্ক মোড়ের নাম ‌‘শহীদ আবু সাঈদ চত্বর’ দিলেন শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু নওগাঁয় কোঠা সংস্কার মিছিল ছাত্রলীগের বাঁধায় পন্ড, উভয় পক্ষের বাহাস জামালপুরে ট্রেন ও সড়ক অবরোধ কফিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার : সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে পবিত্র আশুরার শোক মিছিল মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে পবিত্র আশুরার শোক মিছিল বিশ্ব গণমাধ্যমে কোটা আন্দোলনে নিহতের খবর পাসপোর্টের রোকনের ঘরে আলাদিনের চেরাগ নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে লাগামহীন ঘুষ বাণিজ্য : রোহিঙ্গা পাসপোর্টও হয়
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ অপরাহ্ন

শাহজালালে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে ভয়াবহ কারসাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় : সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে ভয়াবহ কারসাজির তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কারসাজির হোতাদের চিহ্নিত করতে চার কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে।

সূত্র জানান, বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা সাতটি ব্যাংকের শাখায় কর্মরতদের তথ্য চেয়ে রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক। একইভাবে দুই মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপরাধীদের শনাক্ত করতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছেও চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ফুটেজ। গতকাল ছয় ব্যক্তির তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে।

৫ ফেব্রুয়ারি শাহজালালের টার্মিনাল-২-এ গোপনে তদারকি করে দুদকের একটি দল। ওই তদারকিতে থাকা দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিমানবন্দরে অনেকে বিদেশ থেকে এসে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের বুথের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় করছেন। অর্থাৎ ডলারকে টাকায় এনক্যাশ করছেন। কিন্তু কারও কারও হাতে সেই মুদ্রা বিনিময়ে ভাউচার দেখা যায়নি। এর মধ্যে একজন বিদেশফেরত যাত্রীকে দুদক কর্মকর্তারা ব্যাংকের বুথে কর্মরতদের কাছে গিয়ে ভাউচার নিয়ে আসার কথা বলেন। তখন ওই যাত্রীকে একটি ভাউচার দেওয়া হয়, কিন্তু সে ভাউচারের সিল-স্বাক্ষর ছিল না। বিষয়টি আমলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে দুদক কর্মকর্তারা সরকারি একটি ব্যাংকের বুথে অভিযান চালান। সেখানে কর্মরত ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি তাৎক্ষণিক কারসাজির বিষয়টি স্বীকার করেন।

দুদক বলছে, আইন, বিধি ও নিয়ম অনুযায়ী ফরেন কারেন্সি এনক্যাশমেন্ট ভাউচার এনক্যাশমেন্টকারীকে দিতে হয়। বিদেশ থেকে যারাই আসবেন, তারা ব্যাংকের বুথে গিয়ে নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয়তা এবং ঠিকানা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা জমা দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে তার বিনিময়ে টাকা ও ভাউচার নিয়ে নেবেন। এসব তথ্য তাৎক্ষণিক ব্যাংকের সার্ভারে এন্ট্রি করার কথা। এ সার্ভারটি সরাসরি প্রধান কার্যালয় থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু বুথগুলোয় এসবের কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। বরং ১০০ যাত্রী বুথে এলে ২০ জনেরটা এন্ট্রি করা হতো। অর্থাৎ প্রতিদিন বিমানবন্দরে ২১ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন, এর ৮০ শতাংশই চলতি বছরে ভাউচার ছাড়াই বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করেছেন। অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, সরকারি একটি ব্যাংকের বুথে গিয়ে পুরনো ১৩টি ভাউচার জব্দ করা হয়। এসবের মধ্যে গত বছরের ১৯ অক্টোবর সালমা নামে এক নারী ১ হাজার রিয়ালের বিনিময়ে টাকা নেন এবং একই দিনে নারগিস নামে আরেক নারী ১ হাজার ৮৫১ রিয়ালের বিনিময়ে টাকা নেন। এ দুজনের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের বিষয়টি ব্যাংকের সার্ভারে এন্ট্রি করা হয়। কিন্তু বাকি ১১ জনের কোনো তথ্য ব্যাংকের সার্ভার কিংবা রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করা হয়নি।

এর মধ্যে গত বছরের ২১ জুলাই জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তি ৬৩০ রিয়াল জমা দিয়ে টাকা নেন, একই দিন মোস্তাফিজুর নামে আরেক ব্যক্তি ১ হাজার ৭০০ রিয়াল দিয়ে টাকা নেন। ১৭ জুন ফটিক ও সাইফুল নামে দুই ব্যক্তি ১৭০ করে সিঙ্গাপুরি ডলার দিয়ে টাকা নেন। পরদিন ১৮ জুন মুশফিক নামে আরেক ব্যক্তি একই পরিমাণ সিঙ্গাপুরি ডলারের বিনিময়ে সমপরিমাণ টাকা নেন। ২ জুন মোহাম্মদ আলী ও আলম নামে দুই ব্যক্তি যথাক্রমে ৫০০ ও ২৯ করে সিঙ্গাপুরি ডলারের বিনিময়ে সমপরিমাণ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু এসব কোনো কিছুই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি।

এ অভিযানের পরদিনই দুদকের তৎকালীন সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, দেশে ফেরা প্রবাসী শ্রমিকদের কাছে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করছে একটি চক্র। এ অনিয়মে জড়িত সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা ও কিছু মানি এক্সচেঞ্জার। এ অনিয়মের ফলে প্রতিদিন আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে ব্যাংকিং খাত বঞ্চিত হচ্ছে। এ অপরাধে জড়িতরা অবৈধভাবে কেনা ডলার, ইউরো, রিয়াল, রিঙ্গিত, পাউন্ড, দিনার ও অন্যান্য ফরেন কারেন্সি সংগ্রহ করে বিদেশি মুদ্রা পাচারকারী, বিদেশি মুদ্রার কালোবাজারি ও বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের অবৈধভাবে সরবরাহ করেন।

দুদক সূত্র জানান, অসাধু ব্যাংকাররা ব্যাংকের টাকা ব্যবহার করে তা ব্যাংকিং চ্যানেলে সংগৃহীত না দেখিয়ে নিজেরাই কিনে বাইরে বিক্রি করেন; যা পরবর্তী সময়ে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আবার বিদেশে পাচার হয়ে যায়। বিদেশি মুদ্রার কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারদের এক চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।


এই বিভাগের আরও খবর