ঢাকা ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সহকারী এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রনভীরের উদ্যোগে মসজিদ নির্মান সুন্দরগঞ্জে মালতোলা হিলফুল ফুজুল সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ঘর উপহার গাজীপুরে বিএসটিআই ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে ৫ লক্ষ্য টাকা জরিমানা ভোলায় নৌবাহিনীর অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক “নিয়মিত ঘুম, তবুও চোখের চারপাশ শুকনো—অজানা কারণ জেনে নিন” দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভাবনীয় সাফল্য ‘ভগবৎ চ্যাপ্টার ওয়ান: রাক্ষস’— কী আছে এই সিনেমায়? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুনর্নিয়োগ, পদ সংখ্যা ১২৭ জন্মদিনে উচ্চ স্বরে গান, ভিনিসিয়ুসের বিরুদ্ধে মামলা রূপনগরের আগুন: তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন

১৭ হাজার বছর আগের বরফযুগের শিশুর তুন জীবন ও মৃত্যুর কারণ উন্মোচিত

  • Mst Sweety
  • আপডেট সময় : ০৮:৩০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

প্রায় ১৭ হাজার বছর আগে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে বরফযুগে বসবাস করা এক শিশুর জীবন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন। ১৯৯৮ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ মাউরো কালাত্তিনি ইতালির মনোপোলি অঞ্চলের গ্রোত্তা দেলে মুরা গুহা থেকে শিশুটির অবশিষ্টাংশ আবিষ্কার করেন। গবেষণায় জানা গেছে, শিশুটি সম্ভবত জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল।

ডিএনএ বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, শিশুটি ছিল ছেলে এবং তার চোখ ছিল নীল। গায়ের রঙ ছিল গাঢ় এবং চুল ছিল কোঁকড়া ও গাঢ় বাদামি থেকে প্রায় কালো। তবে তার শারীরিক বিকাশ ছিল দুর্বল এবং নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহের ফলে সে জন্মগ্রহণ করেছিল। শিশুটির কবরের পাশে কোনো কবরসামগ্রী পাওয়া যায়নি। তাকে দুটি পাথরের স্ল্যাবের নিচে সমাহিত করা হয়েছিল, যা ওই গুহায় পাওয়া একমাত্র কবর।

২০ সেপ্টেম্বর নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই শিশুর জীবন ও চেহারা সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এটি দক্ষিণ ইউরোপের প্রাচীন মানুষের জনসংখ্যা নিয়ে মূল্যবান তথ্য দিয়েছে।

ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকুলার নৃতাত্ত্বিক আলেসান্দ্রা মোডি বলেন, জেনেটিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শিশুটির বাবা-মা ছিল নিকট সম্পর্কের—সম্ভবত প্রথম চাচাতো ভাই-বোন। এই ধরনের ঘটনা প্যালিওলিথিক যুগে বিরল হলেও নীয়লিথিক যুগে তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে।

বোলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক নৃতত্ত্বের অধ্যাপক স্তেফানো বেনাজ্জি বলেন, আমাদের কাজটি বরফযুগের প্রাথমিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় উন্মোচন করেছে। বিভিন্ন বিশ্লেষণ পদ্ধতির সমন্বয়ে আমরা এই শিশুটির বেড়ে ওঠা ও জীবনযাপনের অবস্থা সম্পর্কে এমন তথ্য জানতে পেরেছি, যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে এ গবেষণায় তার মায়ের জীবন এবং সে সময়কার শিকারি-সংগ্রাহক গোষ্ঠীর জীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে।

সিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ শিশুটির শারীরিক বিকাশ বোঝার ভিত্তি তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তেফানো রিচি বলেন, বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতির সমন্বয়ে এই শিশুর জীবন ও মৃত্যুর বিবরণ অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে।

গবেষকরা মনে করছেন, বরফযুগের এই শিশুর জীবন বিশ্লেষণ প্রাচীন মানুষের জীবনযাত্রা, শারীরিক অবস্থা এবং সামাজিক ব্যবস্থার অনেক অজানা দিক উন্মোচনে সহায়তা করবে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

সহকারী এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রনভীরের উদ্যোগে মসজিদ নির্মান

১৭ হাজার বছর আগের বরফযুগের শিশুর তুন জীবন ও মৃত্যুর কারণ উন্মোচিত

আপডেট সময় : ০৮:৩০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রায় ১৭ হাজার বছর আগে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে বরফযুগে বসবাস করা এক শিশুর জীবন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন। ১৯৯৮ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ মাউরো কালাত্তিনি ইতালির মনোপোলি অঞ্চলের গ্রোত্তা দেলে মুরা গুহা থেকে শিশুটির অবশিষ্টাংশ আবিষ্কার করেন। গবেষণায় জানা গেছে, শিশুটি সম্ভবত জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল।

ডিএনএ বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, শিশুটি ছিল ছেলে এবং তার চোখ ছিল নীল। গায়ের রঙ ছিল গাঢ় এবং চুল ছিল কোঁকড়া ও গাঢ় বাদামি থেকে প্রায় কালো। তবে তার শারীরিক বিকাশ ছিল দুর্বল এবং নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহের ফলে সে জন্মগ্রহণ করেছিল। শিশুটির কবরের পাশে কোনো কবরসামগ্রী পাওয়া যায়নি। তাকে দুটি পাথরের স্ল্যাবের নিচে সমাহিত করা হয়েছিল, যা ওই গুহায় পাওয়া একমাত্র কবর।

২০ সেপ্টেম্বর নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই শিশুর জীবন ও চেহারা সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এটি দক্ষিণ ইউরোপের প্রাচীন মানুষের জনসংখ্যা নিয়ে মূল্যবান তথ্য দিয়েছে।

ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকুলার নৃতাত্ত্বিক আলেসান্দ্রা মোডি বলেন, জেনেটিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শিশুটির বাবা-মা ছিল নিকট সম্পর্কের—সম্ভবত প্রথম চাচাতো ভাই-বোন। এই ধরনের ঘটনা প্যালিওলিথিক যুগে বিরল হলেও নীয়লিথিক যুগে তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে।

বোলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক নৃতত্ত্বের অধ্যাপক স্তেফানো বেনাজ্জি বলেন, আমাদের কাজটি বরফযুগের প্রাথমিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় উন্মোচন করেছে। বিভিন্ন বিশ্লেষণ পদ্ধতির সমন্বয়ে আমরা এই শিশুটির বেড়ে ওঠা ও জীবনযাপনের অবস্থা সম্পর্কে এমন তথ্য জানতে পেরেছি, যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে এ গবেষণায় তার মায়ের জীবন এবং সে সময়কার শিকারি-সংগ্রাহক গোষ্ঠীর জীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে।

সিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ শিশুটির শারীরিক বিকাশ বোঝার ভিত্তি তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তেফানো রিচি বলেন, বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতির সমন্বয়ে এই শিশুর জীবন ও মৃত্যুর বিবরণ অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে।

গবেষকরা মনে করছেন, বরফযুগের এই শিশুর জীবন বিশ্লেষণ প্রাচীন মানুষের জীবনযাত্রা, শারীরিক অবস্থা এবং সামাজিক ব্যবস্থার অনেক অজানা দিক উন্মোচনে সহায়তা করবে।