শিরোনাম
যশোররে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ ফরিদপুরে চুরি করতে গিয়ে চিনে ফেলায় হত্যা, অতঃপর আটক ৩ পত্নীতলায় দুই ভুয়া চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকের জেলা জরিমানা নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন নওগাঁয় বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা কুষ্টিয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ১০০ বোতল ফেনসিডিল সহ ০২ জন গ্রেফতার কক্সবাজারে খুলনার টিপু হত্যায় জড়িত তিনজন সিলেট থেকে গ্রেফতার কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদশী পিস্তল গুলিসহ  আটক ২ জীবনের ছুটে যাওয়া নামাজ কীভাবে আদায় করব? নতুন মূল্য নির্ধারণ: ১২ কেজির এলপিজি’র দাম ১৪৫৯ টাকা হেলমান্দের পথে-প্রান্তরে হাজার বছরের ঐতিহ্য বগুড়ায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দিনাজপুরে জিংক সমৃদ্ধ ধান সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কর্মশালা গাজায় যুদ্ধ করতে চায় না অনেক ইসরায়েলি সেনা ঘণ্টায় ২০০০ ডলার দিয়ে দমকলকর্মী ভাড়া করছে লস অ্যাঞ্জেলেসের ধনীরা চট্টগ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও তার ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী পাকিস্তান সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর গ্রেফতার জালিমের করুণ পরিণতি
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

কবরের প্রথম আজাব ভয়ংকর চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় : সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

কুয়াশার চাদর জড়িয়ে শীত এসেছে প্রকৃতির ঘরে। শীত মানেই জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকা। শীত মানেই কুণ্ডুলী পাকিয়ে শুয়ে থাকা। শীত মানেই আলসেমি। শীত মানেই বেলা-অবেলায় বিশ্রামের ডাক। শীত আসে মানুষকে ঘরে ফেরাতে। শীত আসে মানুষকে বিছানায় টানতে। শীত আসলে আল্লাহর এক বিশেষ রহমত। ব্যস্ততা থেকে দূরে সরিয়ে আমাদের শরীরকে অলস করে দিলেও কলব কিন্তু চিন্তার সময় পায় এই শীতের সময়ই। শীতে দিনের চেয়ে রাত বড় হয়। এ সময় আগে আগে বিছানায় চলে যাই আমরা। চোখে তো ঘুম আসে না। আবার যখন ঘুম ভেঙে যায় তখনো সকালের অনেক বাকি। বেকার বিছানায় শুয়ে থাকা ছাড়া কোনো কাজ নেই। তখন মন চিন্তা করে। নেক মানুষের নেক চিন্তা, বদমানুষের বদ চিন্তা। তবে একটা চিন্তা কমবেশি সবার মনেই আসে- মৃত্যু খুব কাছে। আর কত দিন বাঁচব এ দুনিয়ায়? কীভাবে মারা যাব আমি? মারা গেলে আমার স্বজনরা কত দিন কাঁদবে? কত দিন আমাকে মনে রাখবে? এ ধরনের চিন্তা আমাদের মনে জাগে। যারা নেককার, মৃত্যুর জিকির তাদের আরও আল্লাহওয়ালা বানায়। আর যারা বদলোক, মৃত্যুর জিকির তাদের মনে ছায়া ফেলে না। তারা ভাবে, মৃত্যু অনেক দেরি আছে। তার আগে তওবা করে ভালো হয়ে যাব। আফসোস! তওবার আশায় যারা দিনের পর দিন গোনাহর সাগরে হাবুডুবু খায়, তাদের নসিবে সচরাচর তওবা জোটে না। মৃত্যু বড় যন্ত্রণাদায়ক সত্য। সবাইকে একদিন মরতে হবে। এ দুনিয়ায় কেউ চিরদিন থাকবে না। যখন মালাকুল মওত এসে আমাদের নফস কবজ করবে, তখন আমরা দুনিয়ার মানুষের চোখে মরা লাশ হয়ে যাব। আসলে সত্যিকারের জীবন তখন থেকেই শুরু। দুনিয়ার এক টুকরো জিন্দেগিতে আমরা যা করেছি, কবরের জীবনে তার ফল পাওয়া শুরু হবে। ভালো করলে ভালো ফল। খারাপ করলে খারাপ ফল। তবে একটা আজাব আছে, যা সবাইকেই কমবেশি পেতে হবে। সেটা হলো, কবরের চাপ। মানুষকে যখন কবরে রাখা হবে তখন দুই দিক থেকে এমন প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হবে, মুহূর্তেই জীবনের সব সুখ-শান্তি তিতা হয়ে যাবে। ভারতের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আহমদ সাঈদ দেলভী (রহ.) তাঁর বিখ্যাত ‘মওত কা ঝাটকা’ গ্রন্থে হাদিসের কিতাব ঘেঁটে কবরের চাপসংক্রান্ত পনেরোটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। সেখান থেকে কয়েকটি হাদিস শোনাচ্ছি আপনাদের। আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘সবাইকে কবর চাপ দেবে। কেউ যদি কবরের চাপ থেকে বাঁচতে পারত তাহলে আমার প্রিয় সাহাবি সাদ ইবনে মুয়াজ বাঁচতে পারত’ (মুসনাদে আহমাদ ও বায়হাকী)। সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) ছিলেন রসুল (সা.)-এর প্রিয়তম সাহাবির একজন। খুব নেককার মানুষ ছিলেন তিনি। হাদিসের ভাষ্যমতে, তাঁর মৃত্যুর সময় আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল। আকাশে দরজাগুলো সাদের সম্মানে খুলে দেওয়া হয়। এমন জলিলে কদর সাহাবিও কবরের চাপ থেকে বাঁচতে পারেননি। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘সাদ এমন নেককার মানুষ, তার মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছে। তার সম্মানে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সে সাদকেও কবর চাপ দিতে ছাড়েনি। তবে আল্লাহতায়ালা তার কবরকে প্রশস্ত করে দিয়েছেন।’ (নাসায়ী ও বায়হাকী)। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘সাদকে কবরে রাখার পর রসুল (সা.) কয়েকবার সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার পড়লেন।’ হুজুরের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও তাসবি পড়লাম। রসুল (সা.) বললেন, ‘এই নেককার সাদের কবর সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তাসবিহ পড়ার পর আল্লাহ তার কবর প্রশস্ত করে দিয়েছেন।’ (মুসনাদে আহমাদ ও তিবরানি)।

বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়, সাদ (রা.) প্রস্রাব থেকে পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে বেখেয়াল ছিলেন। তাই কবর তার ওপর সংকীর্ণ হয়ে যায়। হজরত হাসান (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেন, ‘সাদকে কবর এমন চাপ দিয়েছে, চাপের চোটে সে চুলের মতো চিকন হয়ে যায়। তার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আমি দোয়া করলাম, হে আল্লাহ! সাদের কষ্ট দূর করে দিন। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করে সাদের কবর প্রশস্ত করে দিয়েছেন।’ (বায়হাকী)।

কবরের চাপের ব্যাপারে সাহাবি ও তাবেয়িরা সব সময় ভীত থাকতেন। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘আমরা রসুলের যত হাদিস শুনেছি সবচেয়ে ভয়ংকর ছিল কবরের চাপ দেওয়ার হাদিস। বিশেষ করে জলিলে কদর সাহাবি সাদও যখন কবরের চাপ থেকে বাঁচতে পারেননি, তখন আমাদের মতো মানুষের কী উপায় হবে, এ চিন্তায় আমরা পেরেশান।’ (মুসান্নিফে আবদুর রাজ্জাক)। কবরের চাপের ভয়ে হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) পুরোপুরি বিমর্ষ হয়ে পড়েন। একদিন তিনি বিষণ্ন মুখে নবীজিকে বলেন, ‘ওগো দয়াল নবী! যেদিন আপনার মুখে কবরের চাপের হাদিস শুনেছি সেদিন থেকে কলিজায় আমার ভয় ঢুকে গেছে। আমার কিছুই ভালো লাগে না। ভয়ে আমার অন্তর শুকিয়ে গেছে।’ ভয় কাটানোর জন্য নবীজি বললেন, ‘ভয় পেও না আয়েশা। কবর মুমিন-কাফের সবাইকে চাপ দেবে এ কথা সত্য। তবে মুমিনের জন্য সে চাপ একেবারেই হালকা করা হবে।


এই বিভাগের আরও খবর