শিরোনাম
কোহলির পাশে দাঁড়ালেন গাঙ্গুলী নির্বাচিত সরকার অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো : ফখরুল ভাঙ্গায় ১৫ কেজি গাঁজাসহ ২ নারী ভুয়া সাংবাদিক আটক সদরপুরে ইজিবাইক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে কলেজ ছাত্র নিহত জালিয়াতির অভিযোগ, শিল্পী সমিতি থেকে বহিষ্কার নিপুণ আমাদের ভালো মানুষ দরকার : তারেক রহমান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সূর্য সন্তানদের ভোটার করতে হাসপাতালে যাবে ইসি আবারও রিয়ালের সভাপতি নির্বাচিত হলেন পেরেজ এসি তানজিলসহ ৩ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠাল ট্রাইব্যুনাল মান্দা মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজ্জাক ও সম্পাদক পলাশ চৌহালী উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত গার্লফ্রেন্ডকেই বিয়ে করলেন গায়ক দর্শন রাভাল ‘পিনিক’–এ ফার্স্ট লুকে অন্য রকম বুবলী উপার্জন হালাল হলে দোয়া কবুল হয় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের আয়কর নথি জব্দের আদেশ বন্দী বিনিময় সফল হবে, আশাবাদ কাতারের কোথায় আছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী তামিমের হলোটা কী! রূপগঞ্জে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালন পতনের পর স্পেনে মুসলমানের জীবন
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন

শীতকালে রোজা ও তাহাজ্জুদ

সুইটি আহামেদ
আপলোড সময় : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

পৃথিবী পরিবর্তনশীল। সব কিছুতেই পরিবর্তন আসে। সে ধারাবাহিকতায় কাল-ক্ষণেও নানা পরিবর্তন আসে। পরিবর্তন হয় ঋতুর। গরম শেষে শীত এবং শীত শেষে গরম আসে। গরম শেষে আমরা শীতের পদধ্বনি অনুভব করছি। শীতকালকে বলা হয় ইবাদতের বসন্তকাল। বিশেষত রোজা ও তাহাজ্জুদ নামাজে খুব বেশি মনোযোগী হওয়ার উপযোগী সময়। এ ব্যাপারে আমরা রাসূল (সা.)-এর হাদিস, সাহাবায়ে কেরামের আসার ও পূর্বসূরিদের আমল ও উক্তি তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ।

রাসূল (সা.) শীতকালে রোজা রাখার প্রতি বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আমির ইবনু মাসঊদ (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শীতকালের সিয়াম হলো অনায়াসলব্ধ গনিমত সম্পদের মতো। (তিরমিজি : হাদিস নং ৭৯৭)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল। এর দিন ছোট হয় ফলে মুমিন দিনের বেলা রোজা রাখে এবং রাত দীর্ঘ হয় ফলে মুমিন রাতের বেলা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে। (সুনানে কুবরা : হাদিস নং ৮৪৫৬)।

হাদিসের ব্যাখ্যায় ওলামায়ে কেরাম বলেন, শীতাকালে রোজা রাখা সহজ। কারণ, এ সময় দিন ছোট থাকে ফলো ক্ষুধায় কষ্ট করতে হয় না এবং গরমের তীব্রতা কম থাকে ফলে তৃষ্ণার কষ্ট সহ্য করতে হয় না।

সাহাবায়ে কেরাম শীতকালকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতেন এবং অভিবাদন জানাতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) শীতকালের আগমনকে অভিবাদন জানিয়ে বলতেন, শীতকে স্বাগত জানাই, যখন বরকত নাজিল হয়, রাতগুলো প্রার্থনার জন্য দীর্ঘ হয় এবং রোজার জন্য দিনগুলো ছোট হয়।

একদা হজরত আবু হুরায়রা (রা.) লোকদের লক্ষ করে বলেন, আমি কি তোমাদের অনায়াসলব্ধ গনিমতের সন্ধান দিব না? তারা বলল, হ্যাঁ, সন্ধান দিন। তিনি বললেন, শীতকালে রোজা রাখা অনায়াসলব্ধ গনিমতের মতো। (সুনানে কুবরা : হাদিস নং ৮৪৫৫)।

হজরত ইবন উমর (রা.) বলেন, শীতকাল আবেদদের গনিমতের সময়। (হিলইয়া : ১/৫১)।

ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.) বলেন, শীত মুমিনের বসন্ত হওয়ার কারণ হলো, এ সময় সে আনুগত্যের বাগানে উন্নতি লাভ করে, ইবাদতের ক্ষেত্রগুলোতে বিচরণ করে এবং সহজে নেকের কাজের মাধ্যমে তারা মুজাহাদার বাগানে হৃদয়কে উৎসর্গ করে।

হজরত হাসান বসরি (রহ.) বলতেন, শীতকাল কতইনা উত্তম সময়, এর দিন ছোট হয় ফলে মুমিন দিনের বেলা রোজা রাখে এবং রাত দীর্ঘ হয় ফলে মুমিন রাতের বেলা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে।

শীতকালে উবাইদ ইবন উমায়ের (রহ.) বলতেন, হে মুসলমানরা! কুরআন তেলাওয়াতের জন্য শীতকাল দীর্ঘ হয়েছে। সুতরাং তোমরা তেলাওয়াত করো। আর রোজা রাখার জন্য শীতকাল এসেছে। সুতরাং তোমরা রোজা রাখ।

অতএব, শীতকালে রাতের নফল নামাজ, অধিক কুরআন তেলাওয়াত ও রোজা রাখার প্রতি যত্নবান হওয়া চাই। সম্ভব হলে হজরত দাউদ (আ.)-এর মতো একদিন পরপর রোজা রাখা। আর এটা সর্বোত্তম রোজা। আব্দুল্লাহ বিন আমর (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় রোজা হলো দাউদ (আ.)-এর রোজা। আর আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় নামাজ হলো দাউদ (আ.)-এর নামাজ। তিনি অর্ধ রাতে ঘুমাতেন। অতঃপর তৃতীয় প্রহরে নামাজ পড়ে আবার ষষ্ঠভাগে ঘুমাতেন, আর তিনি একদিন পানাহার করতেন ও পরদিন রোজা রাখতেন। (বুখারি : হাদিস নং ১১৩১, মুসলিম : হাদিস নং ১১৫৯)। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা। কারণ, রাসূল (সা.) সাধারণত এ দুদিন রোজা রাখতেন। হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক মাসের সোমবার এবং বৃহস্পতিবার দিন সাওম পালন করতেন এবং পরবর্তী সপ্তাহে শুধু সোমবার। (নাসাঈ : হাদিস নং ২৩৬৬)। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে আইয়ামে বিজ তথা চন্দ্র মাসের ১৩/১৪/১৫ তারিখ রোজা রাখা। রাসূল (সা.) প্রতি মাসে এ তিন দিন রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও রোজা রাখতে বলতেন। আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমার খলিল ও বন্ধু নবি (সা.) আমাকে তিনটি কাজের অসিয়ত (বিশেষ আদেশ) করেছেন, মৃত্যু পর্যন্ত তা আমি পরিত্যাগ করব না। তা হলো, (১) প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম, (২) সালাতুজ-জুহা এবং (৩) বেতর (সালাত) আদায় করে শয়ন করা। (মুসলিম : হাদিস নং ৭২১)। তাও যদি সম্ভব না হয় মাসের যে কোনো সময় তিন দিন রোজা রাখা। আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম পালন করল সে যেন সারা বছর সাওম পালন করল। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহতায়ালা কুরআনে সত্যই বলেছেন, যে ব্যক্তি একটি ভালো কাজ করবে তাকে তার দশগুণ সওয়াব দেওয়া হবে। (নাসাঈ : হাদিস নং ২৪০৯)।


এই বিভাগের আরও খবর