আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে তিন হাজার মেট্রিকটন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আজ শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুলতানা আক্তার স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন রপ্তাণিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত শর্তাবলীপূরণ সাপেক্ষে তিন হাজার মেট্রিকটন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো।’আদেশে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীদের আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১২ টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর (উপসচিব, রপ্তাণি-২ শাখা,কক্ষ নং ১২৭,ভবন -৩, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা) আবেদন করতে বলা হয়েছে। উল্লিখিত তারিখের পর আবেদন গ্রহণযোগ্য হবেনা।
উল্লেখ্য, যারা আগে আবেদন করেছেন তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই।
এদিকে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ টালবাহানার অবসান। পূজোয় এ বার পশ্চিমবঙ্গবাসীর পাতে পড়বে বাংলাদেশি ইলিশ। দুর্গাপূজোর আগে একটু-আধটু নয়, রাজ্যে বাংলাদেশের ইলিশ আসছে তিন হাজার টন!
এর আগে ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশে চিঠি পাঠিয়েছিল ভারতের ‘ফিশ ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন’। সেই চিঠির প্রসঙ্গ তুলেই দুঃখ প্রকাশ করে বাংলাদেশের মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছিলেন, ‘দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে এবার ওপার বাংলায় ইলিশ পাঠাতে পারব না আমরা। বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে ইলিশ মাছ কিনে খেতে পারেন, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু ভারত নয়, কোনও দেশেই ইলিশ রফতানি করছে না বাংলাদেশ।’
কিন্তু আচমকাই সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন ঘটিয়ে ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হল। এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কি কূটনৈতিক কারণ রয়েছে? কেন না এর আগে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তিকালীন সরকার দাবি করেছিল, ইলিশের মতো ‘ক্ষুদ্র ইস্যু’ ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলবে না। ভারত থেকে ডিম আমদানির পরে আলু এবং পেঁয়াজ রফতানি স্বাভাবিক রাখার আর্জিও জানায় ইউনূসের সরকার। কিন্তু শনিবার ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেখে কূটনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতেই এই পদক্ষেপ করেছে ইউনূস সরকার।মনে করা হচ্ছে ‘কূটনৈতিক’ কারণকে মাথায় রেখেই বাংলাদেশ সরকার পুজোর আগে তিন হাজার টন ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে। যার প্রভাব পড়তে পারত দু’দেশের সম্পর্কে। বাংলাদেশ সরকার শনিবারের সিদ্ধান্তে কূটনৈতিকভাবে সব দিকই সামাল দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার ইলিশ পাঠানোর ছাড়পত্র দেওয়ায় খুশি ভারতের ‘ফিশ ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, ‘মাছ আসছে নিশ্চিত। একটা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এখন সেই জটিলতা কেটে গিয়ে ইলিশ আসছে। আমরা খুশি। উৎসবের মরসুমে পদ্মার ইলিশ এ বঙ্গের বাঙালির পাতে পড়বে।’