রোববার আল জাজিরা জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজা শহরের পশ্চিমে বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলকে লক্ষ্য করে চালানো হামলায় অন্তত চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলি আক্রমণে গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকটের কারণে গাজার সকলেই খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
১০ মাসের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হাজার ১৫৩ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে অন্তত ১০ হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি এই আগ্রাসন গাজার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে বাস্তুচ্যুত করেছে, প্রায় ৫ লাখ মানুষকে ‘বিপর্যয়কর’ ক্ষুধার সম্মুখীন করেছে এবং উপত্যকাটির বেশিরভাগ হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে বলে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে।
এছাড়া ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় অবরুদ্ধ গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ইসরায়েলকে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তারপরও আন্তর্জাতিক চাপ ও নির্দেশ উপেক্ষা করেই গাজাতে গণহত্যায় মেতেছে ইসরায়েলি বাহিনী। অন্যদিকে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াতে বেড়াতে ক্লান্ত হয়ে উঠেছেন ফিলিস্তিনিরা।
১০ মাসের দীর্ঘ যুদ্ধে আপনজন, বাড়িঘর, সহায়-সম্বল সব হারিয়েছেন উপত্যকাটির বাসিন্দারা। ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তারা। আর তাই যুদ্ধের এই প্রান্তে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি চান বিধ্বস্ত গাজাবাসীরা।