ফ্যান চালিয়ে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমানো কিংবা এসির হাওয়ায় শীতল হয়ে ওঠা ঘরে কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমানোর দৃশ্য খুব অপরিচিত নয়। এমনকি বেশ গরমেও পাতলা একটা চাদর গায়ে দিয়ে ঘুমান কেউ কেউ।
চাদরজাতীয় কিছু একটা গায়ে দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস অনেক ক্ষেত্রেই গড়ে ওঠে শৈশবে। মা-বাবার আদরে বড় হতে হতে হুট করেই একটা বয়সে জীবনে আসে কিছু পরিবর্তন, যখন আলাদা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হয় শিশুটিকে।
আদরের স্পর্শ থেকে বঞ্চিত অনুভব করার সেই স্মৃতিই হতে পারে বড় হয়ে যাওয়ার পরও চাদরজাতীয় কিছু একটা মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাসের কারণ। আবার তেমন কোনো স্মৃতি না থাকলেও কেবল একটা স্বস্তির জন্যই চাদর জড়িয়ে ঘুমানোর অভ্যাস হয়ে যায় কারও কারও।
শিশুকে আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দেন মা কিংবা বাবা। তাঁদের স্পর্শে, পরম নিরাপত্তায়, নিশ্চিন্তে ঘুমানোর একটা অভ্যাস গড়ে ওঠে তখন থেকেই। অনেক শিশু রোজ ঘুমায় মাকে জড়িয়েই। তবে মমতার সেই স্পর্শ থেকে বেরিয়ে আসতে হয় একটা সময়।
একলা হয়ে পড়ার সেই বয়সটা থেকেই ঘুমের সময় চাদরজাতীয় কিছু জড়িয়ে নেওয়া অপরিহার্য হয়ে উঠতে পারে কারও কারও জন্য। ওই চাদরটিই যেন মমতার স্পর্শের একটা বিকল্প হয়ে দাঁড়ায়। মায়ের উষ্ণতার একটু পরশ যেন মেলে তাতেই।
একসময় সবকিছু থেকে আগলে রাখতেন মা। মা পাশে থাকা মানে কোনো বিপদের ভয় নেই। মাকে জড়িয়ে থাকলে অন্ধকারের অজানা আতঙ্কও কেটে যেত সে সময়। মায়ের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর ওই এক পরত কাপড়েই নিরাপত্তার সেই অনুভূতিটা খুঁজে পান অনেকে।
স্বস্তি ও শিথিলায়ন
আরামদায়ক একটা চাদর, কাঁথা বা কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমানো স্বস্তির মনে হয় অনেকের কাছেই। ঘুমের সময় দেহকে শিথিল করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে তা। সারা দিনের সব মানসিক চাপ আর চিন্তার পাহাড় দূরে সরিয়ে ঘুমের জন্য স্বস্তিদায়ক একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয় এভাবে।
একবার এই অভ্যাস গড়ে উঠলে তা থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন। গায়ে একটা কিছু না জড়িয়ে আর আরাম পাওয়া যায় না তখন। ঠিকঠাক ঘুম আসার জন্য তাই সেটা রাখতেই হয় গায়ে।
ভালো লাগার অনুভূতি
কম্বল, চাদর বা কাঁথা জড়িয়ে থাকার সময় দেহে খানিকটা সেরোটোনিন নিঃসরণ হয়। আমাদের ভালো লাগার অনুভূতির সঙ্গে এই হরমোনটি সরাসরি জড়িয়ে থাকে।
সেরোটনিনের কারণে সৃষ্টি হয় সুন্দর এক অনুভূতি। এই অনুভূতি নিয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন বলে কেউ কেউ গায়ে চাদরজাতীয় কিছু জড়িয়ে রাখার চর্চাটি ধরে রাখেন।