ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরজ গোসলের নিয়ম জানেন তো? জেনে নিন ইসলাম অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা আবারও বাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক কি রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠছে? উঠছে প্রশ্ন চাদর না দিয়ে ঘুমানো কঠিন কেন? কারণটি জানলে অবাক হবেন! সরকারি কর্মীদের মূল্যায়নে নতুন পথ, এপিএর বদলে জিপিএমএস চালু আসরানির মৃত্যু, অক্ষয়ের স্মৃতিতে ভাসছে এক সপ্তাহ আগের শুটিং মুহূর্ত স্পিনেই ৫০ ওভার! ওয়ানডে ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা, রেকর্ড ভাঙার পথে ম্যাচ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল থেকে গ্রেফতার ১৩১ জন চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, ৪ জনের মরদেহ উত্তোলন তেলাপোকা মারতে গিয়ে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল পুরো অ্যাপার্টমেন্ট

শিক্ষাবিদ প্রফেসর শায়েস্তা খান আর নেই

  • sharmin sanjida
  • আপডেট সময় : ০২:৪৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষাবিদ, ক্রীড়া সংগঠক ও ষাটের দশকে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ ছাত্রনেতা প্রফেসর শায়েস্তা খান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । নগরীর সার্জিস্কোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার ভোর পাঁচটায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ।

প্রফেসর শায়েস্তা খান কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন । আজ বাদ আসর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে জানাজা হবে । পরে মিসকিন শাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে ।

প্রফেসর শায়েস্তা খানের জন্ম ১৯৪৫ সালের ১০ জুন চট্টগ্রাম নগরের আলকরণে । তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও সরকারী কমার্স কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন । ষাটের দশকে সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ ছাত্রনেতা ছিলেন শায়েস্তা খান । গণঅভ্যুত্থানসহ তৎকালীন রাজনীতিতে তিনি অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রাখেন ।

পেশাগত জীবনে প্রফেসর শায়েস্তা খান চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ, ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন ।

খেলা অন্তপ্রাণ মানুষ ছিলেন প্রফেসর শায়েস্তা খান । ১৯৬১-৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন । ১৯৬৩-৬৪ সালে একই কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন । ১৯৬৭ সালে সরকারি কমার্স কলেজে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন । ১৯৬৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সাংঠনিক কমিটির সদস্য ছিলেন । ১৯৯০ সাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার আমৃত্যু সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ।

চিটাগং মেট্রোপলিটন কমার্স কলেজ ও উদয়ন-ছোটদের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি । ২০০১ সালে তাঁকে বর্ষসেরা ক্রীড়া সংগঠক নির্বাচিত করে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি ।

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই ‘দৈনিক মিছিল’ নামে একটি পত্রিকা বের করেন । প্রথমে স্বনামে পরে সরকারি কলেজে চাকরির কারণে নেপথ্যে থেকে পত্রিকাটির সম্পদনার কাজ চালিয়েছেন । তিনি ‘স্মৃতির জানালা খুলে চেয়ে দেখি’ শিরোনামে দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশে (২০০৫-২০০৭), ‘দেখা শোনা ভাবা’ শিরোনামে দৈনিক আজাদীতে (২০০৭-২০১২) এবং ‘ষাট দশকের ছাত্র রাজনীতি ও আমি’ শিরোনামে দৈনিক পূর্বদেশে (২০১৩-২০১৫) ধারাবাহিক কলাম লেখেন । সুপ্রভাতে ছাপা হওয়া লেখা নিয়ে ‘পঞ্চাশ দশকের চট্টগ্রাম এবং আমার ছেলেবেলা’ বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে । তিনি বিকম (অনার্স ও পাস কোর্স) শিক্ষার্থীদের জন্য রচনা করেন ‘বাণিজ্যিক ও শিল্প আইন’ নামে একটি বই ।

প্রফেসর শায়েস্তা খানের আদি নিবাস নগরের চান্দগাঁওয়ের হায়দার আলী নাজির বাড়ি । তাঁর পিতা মরহুম আজিজ উল্লাহ খান এবং মাতা মরহুমা মোহসেনা বেগম । তিনি এক পুত্র ডায়াবেটিক বিশেষজ্ঞ ডা. ইশতেয়াক আজিজ খান, কন্যা ফারজানা জেসমিন খান, জামাতা মেরিনার ক্যাপ্টেন ফসিউর রহমান ও নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন ।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরজ গোসলের নিয়ম জানেন তো? জেনে নিন ইসলাম অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি

শিক্ষাবিদ প্রফেসর শায়েস্তা খান আর নেই

আপডেট সময় : ০২:৪৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

শিক্ষাবিদ, ক্রীড়া সংগঠক ও ষাটের দশকে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ ছাত্রনেতা প্রফেসর শায়েস্তা খান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । নগরীর সার্জিস্কোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার ভোর পাঁচটায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ।

প্রফেসর শায়েস্তা খান কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন । আজ বাদ আসর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে জানাজা হবে । পরে মিসকিন শাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে ।

প্রফেসর শায়েস্তা খানের জন্ম ১৯৪৫ সালের ১০ জুন চট্টগ্রাম নগরের আলকরণে । তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও সরকারী কমার্স কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন । ষাটের দশকে সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ ছাত্রনেতা ছিলেন শায়েস্তা খান । গণঅভ্যুত্থানসহ তৎকালীন রাজনীতিতে তিনি অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রাখেন ।

পেশাগত জীবনে প্রফেসর শায়েস্তা খান চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ, ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন ।

খেলা অন্তপ্রাণ মানুষ ছিলেন প্রফেসর শায়েস্তা খান । ১৯৬১-৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন । ১৯৬৩-৬৪ সালে একই কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন । ১৯৬৭ সালে সরকারি কমার্স কলেজে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন । ১৯৬৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সাংঠনিক কমিটির সদস্য ছিলেন । ১৯৯০ সাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার আমৃত্যু সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ।

চিটাগং মেট্রোপলিটন কমার্স কলেজ ও উদয়ন-ছোটদের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি । ২০০১ সালে তাঁকে বর্ষসেরা ক্রীড়া সংগঠক নির্বাচিত করে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি ।

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই ‘দৈনিক মিছিল’ নামে একটি পত্রিকা বের করেন । প্রথমে স্বনামে পরে সরকারি কলেজে চাকরির কারণে নেপথ্যে থেকে পত্রিকাটির সম্পদনার কাজ চালিয়েছেন । তিনি ‘স্মৃতির জানালা খুলে চেয়ে দেখি’ শিরোনামে দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশে (২০০৫-২০০৭), ‘দেখা শোনা ভাবা’ শিরোনামে দৈনিক আজাদীতে (২০০৭-২০১২) এবং ‘ষাট দশকের ছাত্র রাজনীতি ও আমি’ শিরোনামে দৈনিক পূর্বদেশে (২০১৩-২০১৫) ধারাবাহিক কলাম লেখেন । সুপ্রভাতে ছাপা হওয়া লেখা নিয়ে ‘পঞ্চাশ দশকের চট্টগ্রাম এবং আমার ছেলেবেলা’ বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে । তিনি বিকম (অনার্স ও পাস কোর্স) শিক্ষার্থীদের জন্য রচনা করেন ‘বাণিজ্যিক ও শিল্প আইন’ নামে একটি বই ।

প্রফেসর শায়েস্তা খানের আদি নিবাস নগরের চান্দগাঁওয়ের হায়দার আলী নাজির বাড়ি । তাঁর পিতা মরহুম আজিজ উল্লাহ খান এবং মাতা মরহুমা মোহসেনা বেগম । তিনি এক পুত্র ডায়াবেটিক বিশেষজ্ঞ ডা. ইশতেয়াক আজিজ খান, কন্যা ফারজানা জেসমিন খান, জামাতা মেরিনার ক্যাপ্টেন ফসিউর রহমান ও নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন ।