ঢাকা ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আইনশৃঙ্খলা বিবেচনার যন্য ছাত্র-শিক্ষকদের দাবির দ্রুত সুরাহার তাগিদ

  • Musabbir Khan
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

আইনশৃঙ্খলা বিবেচনার যন্য ছাত্র-শিক্ষকদের দাবির দ্রুত সুরাহার তাগিদ

রাজপথে এমপিওভুক্ত শিক্ষক এবং ঢাকার সাত কলেজের ছাত্রদের আন্দোলন থেকে যাতে নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে শিক্ষা সচিবকে গতকাল রোববার আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কোর কমিটির সভায় ডেকে আনা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসা, কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের ডিটেনশন বা বিশেষ আটকাদেশ দেওয়া, আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয় আলোচনা হয়।

এ ছাড়া ভোটের সময় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। তাতে বলা হয়, যারা গত তিন নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) মাঠ পর্যায়ে ছিলেন, তাদের সবাইকে আগামী নির্বাচনে দায়িত্বের বাইরে রাখা কঠিন। কারণ নির্বাচনে যে বিপুল জনবল প্রয়োজন হয়, তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে তা মেটানোর মতো বাস্তব পরিস্থিতি নেই।

অবশ্য বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব তাদের দায়িত্ব দেওয়া থেকে বিরত রাখবে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জানানো হয়, গতকাল এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা তিন দাবিতে ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়।

সভায় একটি সংস্থার প্রধান অভিমত দেন, শিক্ষকদের বিষয়টি আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত সমাধান করা উচিত। এর পরই সভা থেকে শিক্ষা সচিবকে ডেকে পাঠানো হয়। কীভাবে শিক্ষকদের দাবির বিষয়গুলোর যৌক্তিক সমাধান করা যায়, সে ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করতে সচিবকে বলা হয়।

বৈঠকে সাত কলেজের ছাত্রদের আন্দোলনের বিষয়টি তোলেন আরেক কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীরা ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন, ২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে আজ সোমবার রাজধানীর আবদুল গণি রোড ও কলেজ রোডসংলগ্ন শিক্ষা ভবন অভিমুখে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করবেন তারা। বৈঠকে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করা দরকার। রাজপথের কর্মসূচি ঘিরে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সে ব্যাপারে দৃষ্টি রাখতে বলা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করতেও শিক্ষা সচিবকে বলা হয়।

আলোচনায় অস্ত্র ও মাদক 

সূত্র জানায়, বৈঠকে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জানানো হয়, মাদক নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করতে কয়েক মাস আগে কক্সবাজারে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্রয়োজনে বড় মাদক কারবারিদের ডিটেনশন দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে তা কার্যকর হয়নি।

বৈঠকে জানানো হয়, মাদকের মামলার বড় আসামিরা জামিনে বের হয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও কক্সবাজারের ডিসিকে ডিটেনশনের বিষয়টি তদারক করতে বলা হয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়, গণমাধ্যমগুলোয় উঠে আসছে, বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র ঢুকছে। অস্ত্র প্রবেশ বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অস্ত্র কারবারিদের ওপর কড়া নজর রাখতে বলা হয় বিজিবি ও র‍্যাবকে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম

পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি আলোচনার সময় বৈঠকে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারে– এমন তথ্য নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। একে নতুন মেরূকরণ হিসেবে চিহ্নিত করে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে জেএসএসের তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য দীপায়ন খীসা দুই সংগঠনের এমন অবস্থানের বিষয়টি পুরোপুরি নাকচ করে দেন। তিনি সমকালকে বলেন, ‘জেএসএস এবং ইউপিডিএফের মধ্যে কোনো বিষয়ে ঐকমত্যের কোনো সম্ভাবনা বা আলোচনা নেই।’

ইউপিডএফের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন না ধরায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ঝটিকা মিছিল 

কোর কমিটির সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে বলা হয়, নজরদারি, গ্রেপ্তার ও আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে ঝটিকা মিছিলের সংখ্যা কমেছে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে যাতে কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে যা বলা হয় 

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে প্রায় ৮০ হাজারের বেশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।

উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বডি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিচার আইনি প্রক্রিয়ায় হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অভ্যুত্থানের সময় খোয়া যাওয়া সব অস্ত্র তো কোনো সময় উদ্ধার হয় না। কিছু অস্ত্র বাইরে থাকবেই। যদি সব অস্ত্র উদ্ধার হতো, সবকিছু স্বাভাবিক হতো, তা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগত না। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণে থাকবে’ বলেই আশা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ছেলেমেয়ে সবাই দেশে, একা ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কী করব

সম্প্রতি উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়ে সবাই দেশে। আমি একা ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কী করব? তবে কে কী চায়, এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।’

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

আইনশৃঙ্খলা বিবেচনার যন্য ছাত্র-শিক্ষকদের দাবির দ্রুত সুরাহার তাগিদ

আপডেট সময় : ০৫:৪৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

রাজপথে এমপিওভুক্ত শিক্ষক এবং ঢাকার সাত কলেজের ছাত্রদের আন্দোলন থেকে যাতে নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে শিক্ষা সচিবকে গতকাল রোববার আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কোর কমিটির সভায় ডেকে আনা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসা, কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের ডিটেনশন বা বিশেষ আটকাদেশ দেওয়া, আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নিয় আলোচনা হয়।

এ ছাড়া ভোটের সময় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। তাতে বলা হয়, যারা গত তিন নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) মাঠ পর্যায়ে ছিলেন, তাদের সবাইকে আগামী নির্বাচনে দায়িত্বের বাইরে রাখা কঠিন। কারণ নির্বাচনে যে বিপুল জনবল প্রয়োজন হয়, তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে তা মেটানোর মতো বাস্তব পরিস্থিতি নেই।

অবশ্য বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব তাদের দায়িত্ব দেওয়া থেকে বিরত রাখবে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জানানো হয়, গতকাল এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা তিন দাবিতে ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়।

সভায় একটি সংস্থার প্রধান অভিমত দেন, শিক্ষকদের বিষয়টি আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত সমাধান করা উচিত। এর পরই সভা থেকে শিক্ষা সচিবকে ডেকে পাঠানো হয়। কীভাবে শিক্ষকদের দাবির বিষয়গুলোর যৌক্তিক সমাধান করা যায়, সে ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করতে সচিবকে বলা হয়।

বৈঠকে সাত কলেজের ছাত্রদের আন্দোলনের বিষয়টি তোলেন আরেক কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীরা ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন, ২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে আজ সোমবার রাজধানীর আবদুল গণি রোড ও কলেজ রোডসংলগ্ন শিক্ষা ভবন অভিমুখে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করবেন তারা। বৈঠকে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করা দরকার। রাজপথের কর্মসূচি ঘিরে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সে ব্যাপারে দৃষ্টি রাখতে বলা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করতেও শিক্ষা সচিবকে বলা হয়।

আলোচনায় অস্ত্র ও মাদক 

সূত্র জানায়, বৈঠকে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জানানো হয়, মাদক নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করতে কয়েক মাস আগে কক্সবাজারে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্রয়োজনে বড় মাদক কারবারিদের ডিটেনশন দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে তা কার্যকর হয়নি।

বৈঠকে জানানো হয়, মাদকের মামলার বড় আসামিরা জামিনে বের হয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও কক্সবাজারের ডিসিকে ডিটেনশনের বিষয়টি তদারক করতে বলা হয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়, গণমাধ্যমগুলোয় উঠে আসছে, বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র ঢুকছে। অস্ত্র প্রবেশ বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অস্ত্র কারবারিদের ওপর কড়া নজর রাখতে বলা হয় বিজিবি ও র‍্যাবকে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম

পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি আলোচনার সময় বৈঠকে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারে– এমন তথ্য নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। একে নতুন মেরূকরণ হিসেবে চিহ্নিত করে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে জেএসএসের তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য দীপায়ন খীসা দুই সংগঠনের এমন অবস্থানের বিষয়টি পুরোপুরি নাকচ করে দেন। তিনি সমকালকে বলেন, ‘জেএসএস এবং ইউপিডিএফের মধ্যে কোনো বিষয়ে ঐকমত্যের কোনো সম্ভাবনা বা আলোচনা নেই।’

ইউপিডএফের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন না ধরায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ঝটিকা মিছিল 

কোর কমিটির সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে বলা হয়, নজরদারি, গ্রেপ্তার ও আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে ঝটিকা মিছিলের সংখ্যা কমেছে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে যাতে কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে যা বলা হয় 

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে প্রায় ৮০ হাজারের বেশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।

উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বডি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিচার আইনি প্রক্রিয়ায় হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অভ্যুত্থানের সময় খোয়া যাওয়া সব অস্ত্র তো কোনো সময় উদ্ধার হয় না। কিছু অস্ত্র বাইরে থাকবেই। যদি সব অস্ত্র উদ্ধার হতো, সবকিছু স্বাভাবিক হতো, তা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগত না। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণে থাকবে’ বলেই আশা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ছেলেমেয়ে সবাই দেশে, একা ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কী করব

সম্প্রতি উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়ে সবাই দেশে। আমি একা ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কী করব? তবে কে কী চায়, এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।’