যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বুধবার ওয়াশিংটনের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্য দেন তিনি।
এসময় সমর্থকদের হতাশ না হওয়া আহ্বান জানান কমলা। সেইসঙ্গে ক্ষমতার পালাবদল প্রক্রিয়ায় বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহযোগিতা করারও প্রতিশ্রুতি দেন।
কমলা বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে হবে। আমি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তার বিজয়ের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।
আমরা তাকে (ট্রাম্প) এবং তার দলকে তাদের উত্তরণে সহায়তা করব এবং আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে নিযুক্ত হব।’
ডেমোক্রেটিক এই প্রার্থী জানান, পরাজয় সত্ত্বেও নির্বাচনের তিনি যে ইস্যুতে প্রচার চালিয়েছেন তার জন্য তার লড়াই বন্ধ করবেন না।
কমলা বলেন, ‘আমি পরাজয় মেনে নিচ্ছি। তবে আমাদের লড়াই থামবে না। মানুষের জন্য স্বাধীনতা, সুযোগ, মর্যাদার জন্য লড়াই করুন।’ ‘আজ আমার হৃদয় পরিপূর্ণ হয়েছে’ উল্লেখ করে কমলা বলেন, ‘আপনারা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ। আমাদের সব ভালোবাসা দেশের জন্য।’ কমলা আরও বলেন, ‘আপনারা কখনো হাল ছেড়ে দেবেন না। লড়াই চালিয়ে যাবেন। এর মধ্য দিয়ে আমেরিকা সব সময় উজ্জ্বল থাকবে।’ কমলা হ্যারিস তরুণ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এটা ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের দেশের জন্য লড়াই সবসময়ই মূল্যবান। তিনি বলেন, দুঃখিত এবং হতাশ হওয়া ঠিক আছে, কিন্তু দয়া করে জেনে রাখুন- এটা ঠিক হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘কখনও কখনও লড়াই কিছুটা সময় নেয় – এর অর্থ এই নয় যে আমরা জিতব না। হাল ছেড়ে দিও না। আপনার সেই ক্ষমতা আছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দল “শান্ত উপায়ে” লড়াই করবে।হ্যারিস বলেন যে তার কাজ পটভূমিতে চলতে থাকবে, কারণ তার দল “শান্ত উপায়ে” লড়াই করতে দেখায়। নিজের ভোটের প্রচারাভিযানের একটি স্লোগানের কথা উল্লেখ করে হ্যারিস বলেন, তারা “কঠিন কাজ” চালিয়ে যাবেন, কারণ “কঠিন কাজই ভালো কাজ”।
স্বাধীনতাকে “সমুন্নত রাখতে হবে” বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। হ্যারিস বলেছেন, আমেরিকা আমরা কখনোই গণতন্ত্রের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, সাম্য ও ন্যায়বিচারের জন্য এবং অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই ছেড়ে দেব না।
এগুলোকে সম্মান করতে হবে ও সমুন্নত রাখতে হবে। আমরা ভোটকেন্দ্রে, আদালতে এবং পাবলিক স্কোয়ারে এই লড়াই চালিয়ে যাব।
হ্যারিস নারীর স্বাধীনতার জন্য লড়াই করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার পরাজয় সত্ত্বেও, তিনি যে ইস্যুতে এতোদিন প্রচারণা চালিয়েছেন তার জন্য তার লড়াই বন্ধ হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই এমন ভবিষ্যতের জন্য লড়াই বাদ দেব না যেখানে আমেরিকানরা তাদের স্বপ্ন, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং আকাঙ্খাগুলো পূরণ করতে পারে, যেখানে আমেরিকার নারীদের তাদের নিজের শরীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে এবং তাদের কী করতে হবে তা সরকার বলে দেবে না।’
কমলা বলেন, আমি এই নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিচ্ছি। কিন্তু আমি লড়াই ছাড়ছি না।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে, আমরা কোনও প্রেসিডেন্ট বা দলের প্রতি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রতি আনুগত্য এবং আমাদের বিবেক এবং আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য করি।”
এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন কমালা। তিনি বলেন, “আমি জানি লোকেরা এই মুহূর্তে বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভব করছে। আমি সেটি বুঝতেও পেরেছি। তবে আমাদের অবশ্যই এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে হবে।”
এসময় তিনি জানান, তিনি ট্রাম্পের সাথে কথা বলেছেন এবং তার বিজয়ের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের” প্রক্রিয়ায় তারা নিয়োজিত হবেন এবং সেই প্রক্রিয়ায় তিনি সাহায্যও করবে।
হ্যারিস বলেন, “গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি” হলো ফলাফল মেনে নেওয়া। এটি গণতন্ত্রকে স্বৈরাচার থেকে আলাদা করে।