ছেলেটির পাজুড়ে সাদা ও লাল দাগ এবং শার্টের নিচে আরো অনেক দাগ রয়েছে। সে গাজার অনেকের মধ্যে একজন, যারা ত্বকের সংক্রমণে ভুগছে, যার মধ্যে রয়েছে খোসপাঁচড়া থেকে চিকেন পক্স, উকুন, ইমপেটিগো, ফুসকুড়ি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ফিলিস্তিনি অঞ্চলে তীব্র অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এলওয়ান বলেন, ‘আমরা মাটিতে, বালিতে ঘুমাই, যেখানে আমাদের নিচ থেকে কীট বেরিয়ে আসে।
এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার মা-বাবারা তাদের সন্তানদের ভূমধ্যসাগরে গিয়ে গোসল করতে বলেন। যুদ্ধের ফলে যে দূষণ তৈরি হয়েছে তা মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলোকে ধ্বংস করেছে এবং রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
এলওয়ান আরো বলেন, ‘সমুদ্র পুরোটাই এখন নর্দমা। এমনকি আবর্জনা ও শিশুর ন্যাপকিনও সমুদ্রে ফেলা হয়।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৯৬ হাজার ৪১৭টি খোসপাঁচড়া ও উকুনের, ৯ হাজার ২৭৪টি চিকেন পক্সের, ৬০ হাজার ১৩০টি ত্বকের র্যাশের এবং ১০ হাজার ০৩৮টি ইমপেটিগোর কেস নথিভুক্ত করা হয়েছে।
দেইর এল-বালাহ ক্যাম্পে একটি অস্থায়ী ক্লিনিক পরিচালনাকারী ফার্মাসিস্ট সামি হামিদের (৪৩)মতে, খোসপাঁচড়া ও চিকেন পক্স উপকূলীয় ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ক্লিনিকের দুই ছেলে তাদের হাতে, পায়ে, পিঠে ও পেটে ছড়িয়ে থাকা প্রচুর ফোসকা ও দাগ দেখায়।
হামিদ নিজেও বাস্তুচ্যুত। ওষুধের অভাবে তিনি চুলকানি প্রশমিত করতে ছেলেদের ত্বকে ক্যালামাইন লোশন ঘষেন। তিনি বলেন, শিশুদের ত্বক ‘গরম আবহাওয়া ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে’ ভুগছে।
গাজায় ডক্টরস উইদাউট বর্ডারের (এমএসএফ) মেডিক্যাল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মাদ আবু মুগাইসিব বলেন, শিশুরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ ‘তারা বাইরে খেলে, যেকোনো কিছু স্পর্শ করে, না ধুয়ে যেকোনো কিছু খায়’।
তিনি আরো বলেন, গরম আবহাওয়া ঘাম ও ময়লা জমা বাড়িয়ে দেয়, যা র্যাশ ও অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। এগুলো চুলকালে সংক্রমণের কারণ হয়। মানুষ আর ঘরে বাস করছে না। সঠিক স্বাস্থ্যবিধিও নেই।
ফার্মাসিস্ট হামিদ জানান, তার দল সম্প্রতি একটি অস্থায়ী স্কুল পরিদর্শন করেছে, যেখানে ৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৪ জনের খোসপাঁচড়া ছিল।