অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা ‘বিদ্রোহ দমনের’ সকল নিয়মকানুন লঙ্ঘন করেছে এবং একে কেবলমাত্র ‘ফিলিস্তিনি জাতিকে ধ্বংস করার’ পরিকল্পিত প্রচেষ্টা বলেই ব্যাখ্যা করা যায়। মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সাবেক বিশ্লেষক ও সুইজারল্যান্ডের গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল জ্যাক বাউড এমন মন্তব্য করেছেন।
রাশিয়ার নিউজ চ্যানেল আরটিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাউড বলেন, ইসরাইল রাজনৈতিক দিক দিয়ে হামাস সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছে না যেটা সাধারণত বিদ্রোহ দমনের ক্ষেত্রে করা হয়। তিনি বলেন, বরং তেল আবিব নৃশংস উপায় অবলম্বন করছে যার একমাত্র লক্ষ্য গোটা ফিলিস্তিনি জাতিকে ধ্বংস করা।
ইহুদিবাদী যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যেদিন গাজা থেকে পণবন্দিদের উদ্ধার করার পর আবার গাজায় আগ্রাসন শুরু করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন সেদিনই কর্নেল বাউডের এ সাক্ষাৎকার প্রচারিত হলো।
নেতানিয়াহু গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা আগ্রাসনের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বহুবার হামাসের বিরুদ্ধে ‘সার্বিক বিজয়ের’ দাবি করেছেন, কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা হিসেবে তিনি গাজা উপত্যকার ওপর ‘পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠার কথাও তুলে ধরেছেন।
গাজায় মোতায়েন ইসরাইলি সেনা
কর্নেল বাউড এ সম্পর্কে বলেন, ইসরাইল রাজনৈতিক উপায়ে হামাস সমস্যার সমাধান করতে এ কারণে চায় না যে, তেল আবিব মূর্খ বা যুদ্ধের নিয়ম জানে না বরং ইসরাইল জাতি হিসেবে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে চায়।
ন্যাটোর সাবেক এ কর্নেল সরাসরি বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শুধুমাত্র ইহুদিরা বসবাস করবে- ইসরাইল শুরু থেকেই এই নীতি অবলম্বন করে এসেছে। এই নীতি বাস্তবায়ন করার কাজে যেকোনো পাশবিকতা চালাতে তারা পিছপা হবে না। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ফিলিস্তিন নামক ভূখণ্ডকে ফিলিস্তিনি জনগণমুক্ত করা।
ইসরাইলি যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কখনই গাজাকে নির্জন উপত্যকায় পরিণত করার কথা বলেননি। তবে তার মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী স্মোটরিচ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী বেন গাভির গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে বিতাড়িত করার দাবি তুলেছেন। এমনকি তারা পরমাণু বোমা মেরে গাজাকে শেষ করে দেয়ার কথাও বলেছেন। গত বছর ইসরাইলের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের ফাঁস হয়ে যাওয়া এক দলিলে দেখা গেছে, সেখানে গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে মিশরে কিংবা কোনো পশ্চিমা দেশে শরণার্থী হিসেবে পাঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।