ঢাকা ১২:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজীপুরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার, স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা “নির্মাতা অমিতাভ রেজা আবার বিয়ে করলেন” “২০১৪, ’১৮ ও ’২৪–এর মতো নির্বাচন হলে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা: গোলাম পরওয়ার” ২৬ টুকরায় উদ্ধার হওয়া আশরাফুলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। লালমনিরহাটে ইএসডিও ও ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান রাজধানীতে অস্থিরতা: বাড্ডা-শাহজাদপুরে দুই বাসে আগুন, ধানমন্ডিতে ককটেল বিস্ফোরণ মোহাম্মদপুরে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুপারিশ ঐকমত্য কমিশনের সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাকিস্তানে ফের আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১২

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের পরামর্শ নেয়ার গুরুত্ত

  • NEWS21 staff Musabbir khan
  • আপডেট সময় : ০৬:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের পরামর্শ নেয়ার গুরুত্ত

মুসলিম সমাজ আলেমদের দ্বারা নানাভাবে উপকৃত হয়। তাদের দ্বারা সমাজের চারিত্রিক, আত্মিক, ধর্মীয় ও জ্ঞানগত চাহিদা পূর্ণ হয়। তাদের দ্বারা ইসলামী বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধ, ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক বন্ধন, ইসলামী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য টিকে থাকে। এ জন্য যে মুসলিম সমাজে আলেম ও ইমামদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়, সে সমাজের মানুষ আত্মিক ও আধ্যাত্মিক শক্তিতে, ভালো কাজের উদ্দীপনায়, সুপথ অনুসরণে এগিয়ে যায়।

আলেমদের কাছে আছে কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান। তাদের সংস্পর্শে মানুষ খুঁজে পায় নিজের আসল পরিচয়। শিখতে পারে আল্লাহর বিধি-বিধান। জানতে পারে হালাল-হারাম।

তাদের সংস্পর্শে এসেই অন্ধকারজগতের মানুষ সন্ধান পায় আলোকিত জীবনের। মৃত হৃদয়গুলো হয় পুনরুজ্জীবিত। দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে উন্মত্ত মানুষ আখিরাতমুখী জীবন ধারণ করে। তারা পৃথিবীর জন্য রহমত।

তারা উম্মতের জন্য বরকত। পরমহিতৈষী ও মঙ্গলকামী। তাদের কাছে ইসলাম সবার আগে।
আলেম ও জাহেলের মধ্যে পার্থক্য : ইলম আল্লাহ প্রদত্ত এক অফুরন্ত নিয়ামত, যা জ্ঞানী ও মূর্খদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলুন! যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান?’

(সুরা : জুমার, আয়াত : ৯)

তিনি অন্যত্র বলেন, ‘বলুন! অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? আলো ও অন্ধকার কি এক হতে পারে?’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ১৬)

আলেমরা আল্লাহর একত্ববাদের রাজসাক্ষী : আল্লাহ তাআলা আলেমদের বানিয়েছেন নিজ একত্ববাদের অন্যতম সাক্ষী হিসেবে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। ফেরেশতারা এবং ন্যায়নিষ্ঠ আলেমরাও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই।’
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮)

আলেমরাই কোরআনের সঠিক ব্যাখ্যা বুঝতে সক্ষম : মহান আল্লাহ মানবতার হেদায়েতের জন্য কোরআন নাজিল করেছেন। কিন্তু এই কোরআন সবাই অনুধাবন করতে পারে না। শুধু আলেমরাই সঠিকভাবে কোরআন অনুধাবন করতে সক্ষম। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব নাজিল করেছেন। যার মধ্যে কিছু আয়াত আছে মুহকাম বা সুস্পষ্ট অর্থবোধক। আর এগুলো হলো কিতাবের মূল। আর কিছু আয়াত রয়েছে মুতাশাবিহ বা অস্পষ্ট অর্থবোধক। অতঃপর যাদের অন্তরে বক্রতা আছে, তারা অস্পষ্ট আয়াতগুলোর পেছনে পড়ে ফিতনা সৃষ্টির জন্য এবং তাদের মনমতো ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য। অথচ এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আর গভীর জ্ঞানীরা বলে, আমরা এগুলোতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। সব কিছু আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানীরা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।’

(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৭)

দ্বিন শেখানো আলেমের দায়িত্ব : মানুষকে দ্বিন শেখানো আলেমদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব আল্লাহ আলেমদের ওপরই ন্যস্ত করেছেন। সাধারণ মানুষ আলেমদের কাছ থেকে দ্বিন শিখে তা মানুষের মধ্যে প্রচার করবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের সবাই একসঙ্গে অভিযানে বের হওয়া সংগত নয়, তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বের হয় না কেন, যাতে তারা দ্বিন সম্পর্কে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে যাতে তারা সতর্ক হয়।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১২২)

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের অনুসরণ করতে হবে : কোরআনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের সঙ্গেই আলেমদের আনুগত্য করার  নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহর নির্দেশ মান্য করো, অনুসরণ করো রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা কর্তৃত্বসম্পন্ন (ন্যায়পরায়ণ শাসক ও আলেম) তাদের।’

(সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৯)

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের দ্বারস্থ হতে হবে : পৃথিবীর মানুষকে কখনো না কখনো আলেমের মুখাপেক্ষী হতে হয়। আমল বাস্তবায়নের জন্য আলেমদের থেকে জ্ঞান লাভ করা জরুরি। যেকোনো শরয়ি সমস্যা নিরসনে তাঁদের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা নিজেই। তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘অতএব, জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস করো, যদি তোমাদের জানা না থাকে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৩)

আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী : আলেমদের অস্তিত্ব ছাড়া কোনো মুসলিম সমাজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। প্রতিটি মুসলিম সমাজে দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ও আলেমরা কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। তাদের সংগ্রাম ও সান্নিধ্যে বদলে যায় জীবন। যেমন বদলে যেত নবী-রাসুলদের সান্নিধ্যে। এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী। তাঁরা কোনো স্বর্ণমুদ্রা বা রৌপ্যমুদ্রার উত্তরাধিকার রেখে যান না, তাঁরা রেখে যান জ্ঞানের উত্তরাধিকার।’

(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৬৪১)

NEW21
NEW21

আলেম ব্যক্তিই সালাতের ইমাম হবেন : সালাতে ইমাম হওয়া একটি সম্মানের বিষয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)সহ সাহাবিদের যোগ্য ব্যক্তিরা ইমামতি করেছেন। আর ইমাম হওয়ার জন্য দ্বিনি জ্ঞানে পারদর্শীরাই বেশি হকদার। আবু মাসউদ আনসারি (রা.)-কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াতে বেশি পারদর্শী সে লোকদের ইমামতি করবে। যদি কোরআন পাঠে সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বেশি হাদিস জানে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৮২; তিরমিজি, হাদিস : ২৩৫)

আলেমরাই বিবেকসম্পন্ন হয়ে থাকেন : আল্লাহ বলেন, ‘এসব দৃষ্টান্ত আমরা বর্ণনা করি মানুষের জন্য। অথচ তা কেউ অনুধাবন করে না, জ্ঞানীরা ছাড়া।’

(সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৩)

আল্লাহ তাআলা এই আয়াতে তাদের আলেম বলেছেন, যারা আল্লাহ ও রাসুল বর্ণিত দৃষ্টান্ত বোঝে। আমর ইবনে মুররা বলেন, আমি যখন এমন কোনো আয়াতে পৌঁছি, যা আমার বোধগম্য নয়, তখন মনে খুব দুঃখ পাই। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘এসব উদাহরণ আমি মানুষের জন্য দিই, শুধু জ্ঞানীরাই তা বোঝে।’

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার, স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের পরামর্শ নেয়ার গুরুত্ত

আপডেট সময় : ০৬:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

মুসলিম সমাজ আলেমদের দ্বারা নানাভাবে উপকৃত হয়। তাদের দ্বারা সমাজের চারিত্রিক, আত্মিক, ধর্মীয় ও জ্ঞানগত চাহিদা পূর্ণ হয়। তাদের দ্বারা ইসলামী বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধ, ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক বন্ধন, ইসলামী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য টিকে থাকে। এ জন্য যে মুসলিম সমাজে আলেম ও ইমামদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়, সে সমাজের মানুষ আত্মিক ও আধ্যাত্মিক শক্তিতে, ভালো কাজের উদ্দীপনায়, সুপথ অনুসরণে এগিয়ে যায়।

আলেমদের কাছে আছে কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান। তাদের সংস্পর্শে মানুষ খুঁজে পায় নিজের আসল পরিচয়। শিখতে পারে আল্লাহর বিধি-বিধান। জানতে পারে হালাল-হারাম।

তাদের সংস্পর্শে এসেই অন্ধকারজগতের মানুষ সন্ধান পায় আলোকিত জীবনের। মৃত হৃদয়গুলো হয় পুনরুজ্জীবিত। দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে উন্মত্ত মানুষ আখিরাতমুখী জীবন ধারণ করে। তারা পৃথিবীর জন্য রহমত।

তারা উম্মতের জন্য বরকত। পরমহিতৈষী ও মঙ্গলকামী। তাদের কাছে ইসলাম সবার আগে।
আলেম ও জাহেলের মধ্যে পার্থক্য : ইলম আল্লাহ প্রদত্ত এক অফুরন্ত নিয়ামত, যা জ্ঞানী ও মূর্খদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলুন! যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান?’

(সুরা : জুমার, আয়াত : ৯)

তিনি অন্যত্র বলেন, ‘বলুন! অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? আলো ও অন্ধকার কি এক হতে পারে?’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ১৬)

আলেমরা আল্লাহর একত্ববাদের রাজসাক্ষী : আল্লাহ তাআলা আলেমদের বানিয়েছেন নিজ একত্ববাদের অন্যতম সাক্ষী হিসেবে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। ফেরেশতারা এবং ন্যায়নিষ্ঠ আলেমরাও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই।’
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮)

আলেমরাই কোরআনের সঠিক ব্যাখ্যা বুঝতে সক্ষম : মহান আল্লাহ মানবতার হেদায়েতের জন্য কোরআন নাজিল করেছেন। কিন্তু এই কোরআন সবাই অনুধাবন করতে পারে না। শুধু আলেমরাই সঠিকভাবে কোরআন অনুধাবন করতে সক্ষম। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব নাজিল করেছেন। যার মধ্যে কিছু আয়াত আছে মুহকাম বা সুস্পষ্ট অর্থবোধক। আর এগুলো হলো কিতাবের মূল। আর কিছু আয়াত রয়েছে মুতাশাবিহ বা অস্পষ্ট অর্থবোধক। অতঃপর যাদের অন্তরে বক্রতা আছে, তারা অস্পষ্ট আয়াতগুলোর পেছনে পড়ে ফিতনা সৃষ্টির জন্য এবং তাদের মনমতো ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য। অথচ এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আর গভীর জ্ঞানীরা বলে, আমরা এগুলোতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। সব কিছু আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানীরা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।’

(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৭)

দ্বিন শেখানো আলেমের দায়িত্ব : মানুষকে দ্বিন শেখানো আলেমদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব আল্লাহ আলেমদের ওপরই ন্যস্ত করেছেন। সাধারণ মানুষ আলেমদের কাছ থেকে দ্বিন শিখে তা মানুষের মধ্যে প্রচার করবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের সবাই একসঙ্গে অভিযানে বের হওয়া সংগত নয়, তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বের হয় না কেন, যাতে তারা দ্বিন সম্পর্কে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে যাতে তারা সতর্ক হয়।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১২২)

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের অনুসরণ করতে হবে : কোরআনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের সঙ্গেই আলেমদের আনুগত্য করার  নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহর নির্দেশ মান্য করো, অনুসরণ করো রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা কর্তৃত্বসম্পন্ন (ন্যায়পরায়ণ শাসক ও আলেম) তাদের।’

(সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৯)

দ্বিনি বিষয়ে আলেমদের দ্বারস্থ হতে হবে : পৃথিবীর মানুষকে কখনো না কখনো আলেমের মুখাপেক্ষী হতে হয়। আমল বাস্তবায়নের জন্য আলেমদের থেকে জ্ঞান লাভ করা জরুরি। যেকোনো শরয়ি সমস্যা নিরসনে তাঁদের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা নিজেই। তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘অতএব, জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস করো, যদি তোমাদের জানা না থাকে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৩)

আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী : আলেমদের অস্তিত্ব ছাড়া কোনো মুসলিম সমাজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। প্রতিটি মুসলিম সমাজে দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ও আলেমরা কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। তাদের সংগ্রাম ও সান্নিধ্যে বদলে যায় জীবন। যেমন বদলে যেত নবী-রাসুলদের সান্নিধ্যে। এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী। তাঁরা কোনো স্বর্ণমুদ্রা বা রৌপ্যমুদ্রার উত্তরাধিকার রেখে যান না, তাঁরা রেখে যান জ্ঞানের উত্তরাধিকার।’

(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৬৪১)

NEW21
NEW21

আলেম ব্যক্তিই সালাতের ইমাম হবেন : সালাতে ইমাম হওয়া একটি সম্মানের বিষয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)সহ সাহাবিদের যোগ্য ব্যক্তিরা ইমামতি করেছেন। আর ইমাম হওয়ার জন্য দ্বিনি জ্ঞানে পারদর্শীরাই বেশি হকদার। আবু মাসউদ আনসারি (রা.)-কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াতে বেশি পারদর্শী সে লোকদের ইমামতি করবে। যদি কোরআন পাঠে সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বেশি হাদিস জানে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৮২; তিরমিজি, হাদিস : ২৩৫)

আলেমরাই বিবেকসম্পন্ন হয়ে থাকেন : আল্লাহ বলেন, ‘এসব দৃষ্টান্ত আমরা বর্ণনা করি মানুষের জন্য। অথচ তা কেউ অনুধাবন করে না, জ্ঞানীরা ছাড়া।’

(সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৩)

আল্লাহ তাআলা এই আয়াতে তাদের আলেম বলেছেন, যারা আল্লাহ ও রাসুল বর্ণিত দৃষ্টান্ত বোঝে। আমর ইবনে মুররা বলেন, আমি যখন এমন কোনো আয়াতে পৌঁছি, যা আমার বোধগম্য নয়, তখন মনে খুব দুঃখ পাই। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘এসব উদাহরণ আমি মানুষের জন্য দিই, শুধু জ্ঞানীরাই তা বোঝে।’