ঢাকা ০৭:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নতুন দামে আজ থেকে স্বর্ণ বিক্রয় শুরু, ভরির মূল্য কত? সন্ধ্যায় দলীয় বৈঠকে অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা ‘রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ প্যানেল অনিয়মের অভিযোগে ভোট থেকে দূরে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় স্বল্প সময়ে প্রস্তুতির সেরা টিপস দেয়ালে শিশুর আঁকা মুছার ৪টি সহজ এবং কার্যকর উপায় স্পাউস ভিসার মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণা সাংবাদিককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দিলেন শ্রমিকলীগ নেতা কিস্তির টাকা তুলে ইজিবাইক কিনে শেষ সম্বল ইজিবাইক হারিয়ে আজ নিঃস্ব হান্নান বিশ্বাস সেলেনার স্বামী বেনি ব্ল্যাঙ্কোর বাড়িতে ডলার ভর্তি ব্যাগ, পাউরুটির চেয়ার ও গোপন সিঁড়ি ছাড়াও আরও কী আছে? কঙ্গনা বললেন, রাজনীতি হলো সবচেয়ে কম বেতনের চাকরি

আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলিদের গান-নৃত্য

  • Musabbir Khan
  • আপডেট সময় : ০৬:১১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৩ বার পড়া হয়েছে

আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলিদের গান-নৃত্য

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আবারও অবৈধ ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শতাধিক অবৈধ বসতকারী দলে দলে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেখানে তারা নিহত মার্কিন ডানপন্থি কর্মী চার্লি কার্কের জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠানও আয়োজন করে। খবর আনাদোলুর।

হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম স্রুগিম জানিয়েছে, এই প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কট্টর-ডানপন্থি এবং ইসরায়েলি পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ইয়েহুদা গ্লিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আল আকসায় ইহুদিদের প্রবেশাধিকারের পক্ষে সক্রিয় প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।

চার্লি কার্ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।

ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা জানিয়েছে, বসতকারীরা আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর সেখানে ইহুদি আচার পালন করে, গান গায় ও নৃত্য করে। আসন্ন ইহুদি নববর্ষকে কেন্দ্র করে এই ধরনের তৎপরতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা। ওয়াফার মতে, কট্টর-ডানপন্থি বসতকারীরা বড় আকারে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও জানিয়েছিল, ইহুদি ধর্মীয় উৎসব সামনে রেখে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হবে।

জেরুজালেমের ইসলামিক এনডাওমেন্টস ডিরেক্টরেট বলছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী হিসেবে কট্টর ডানপন্থি নেতা ইতামার বেন-গভির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আল-আকসায় উসকানিমূলক কর্মসূচি ও হামলা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।

আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের কাছে মক্কা ও মদিনার পর বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান। তবে ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে দাবি করে, যেখানে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দির ছিল বলে তারা বিশ্বাস করে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরটি সংযুক্ত করার ঘোষণা দেয়। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই এই দখল ও সংযুক্তিকে বৈধতা দেয়নি। ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, বসতকারীদের এ ধরনের হামলা পূর্ব জেরুজালেমকে ‘ইহুদিকরণ’ করার বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ, যার মাধ্যমে শহরের আরব ও ইসলামী পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে।

ফিলিস্তিনিরা স্পষ্ট জানিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতকারীদের হাতে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অন্তত ১ হাজার ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ।

এদিকে, গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রায় দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব ধরনের বসতি সরিয়ে নেওয়া উচিত।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

নতুন দামে আজ থেকে স্বর্ণ বিক্রয় শুরু, ভরির মূল্য কত?

আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলিদের গান-নৃত্য

আপডেট সময় : ০৬:১১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আবারও অবৈধ ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শতাধিক অবৈধ বসতকারী দলে দলে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেখানে তারা নিহত মার্কিন ডানপন্থি কর্মী চার্লি কার্কের জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠানও আয়োজন করে। খবর আনাদোলুর।

হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম স্রুগিম জানিয়েছে, এই প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কট্টর-ডানপন্থি এবং ইসরায়েলি পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ইয়েহুদা গ্লিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আল আকসায় ইহুদিদের প্রবেশাধিকারের পক্ষে সক্রিয় প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।

চার্লি কার্ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।

ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা জানিয়েছে, বসতকারীরা আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর সেখানে ইহুদি আচার পালন করে, গান গায় ও নৃত্য করে। আসন্ন ইহুদি নববর্ষকে কেন্দ্র করে এই ধরনের তৎপরতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা। ওয়াফার মতে, কট্টর-ডানপন্থি বসতকারীরা বড় আকারে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও জানিয়েছিল, ইহুদি ধর্মীয় উৎসব সামনে রেখে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হবে।

জেরুজালেমের ইসলামিক এনডাওমেন্টস ডিরেক্টরেট বলছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী হিসেবে কট্টর ডানপন্থি নেতা ইতামার বেন-গভির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আল-আকসায় উসকানিমূলক কর্মসূচি ও হামলা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।

আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের কাছে মক্কা ও মদিনার পর বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান। তবে ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে দাবি করে, যেখানে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দির ছিল বলে তারা বিশ্বাস করে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরটি সংযুক্ত করার ঘোষণা দেয়। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই এই দখল ও সংযুক্তিকে বৈধতা দেয়নি। ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, বসতকারীদের এ ধরনের হামলা পূর্ব জেরুজালেমকে ‘ইহুদিকরণ’ করার বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ, যার মাধ্যমে শহরের আরব ও ইসলামী পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে।

ফিলিস্তিনিরা স্পষ্ট জানিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতকারীদের হাতে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অন্তত ১ হাজার ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ।

এদিকে, গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রায় দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব ধরনের বসতি সরিয়ে নেওয়া উচিত।