কলকাতা সিআইডির এক বিবৃতিতে আজ রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে। সিআইডির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, পরীক্ষার পর এই হাড়গুলোর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। খালে তল্লাশি চলছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভাঙরের বিজয়গঞ্জ বাজারের বাগজোলা খালের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু লম্বা হাড়ের অংশ রয়েছে।
ঘটনাস্থলে থাকা সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (সিএফএসএল) বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে হাড়গুলো মানবশরীরের বলে তাঁদের মনে হচ্ছে।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেন কলকাতার সিআইডি পুলিশের অধীনে ১৪ দিনের রিমান্ডে আছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে তাঁকে বারাসাতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১৪ দিনের হেফাজতে চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
নেপালে আটক হওয়া সিয়াম হোসেনকে গত শুক্রবার ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এই হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত দুই দেশ মিলিয়ে মোট পাঁচজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশে, বাকি দুজন কলকাতায়। বাংলাদেশে গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন সৈয়দ আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান। ভারতে আছেন জিহাদ হাওলাদার ও সিয়াম হোসেন।
দুই দেশের পুলিশ এর আগে বলেছিল, কলকাতার ফ্ল্যাটে খুন করার পর আনোয়ারুল আজীমের লাশ টুকরা টুকরা করা হয়। এরপর দেহের খণ্ডিত অংশগুলো গুম করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জিহাদ ও সিয়াম। গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদের দেওয়া তথ্যে এর আগে কলকাতার খালে দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়েও লাশ বা কোনো দেহাংশ পাওয়া যায়নি।
কলকাতার যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল খুন হয়েছেন বলা হচ্ছে, সেখানকার সেপটিক ট্যাংক থেকে কিছু মাংসের টুকরা উদ্ধার করেছিল সেখানকার পুলিশ। কিন্তু সেটা আনোয়ারুলের কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ জন্য ডিএনএ পরীক্ষা দরকার।
ডিএনএ নমুনা দিতে আনোয়ারুলের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ভারতের ভিসা করিয়ে রেখেছেন। তিনি জানান, ভারতের পুলিশ বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ভারতে গিয়ে ডিএনএ নমুনা দিতে হবে।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম গত ১২ মে দর্শনা সীমান্ত হয়ে কলকাতায় যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে তিনি খুন হন। ২২ মে তাঁর খুন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুই দেশের পুলিশ। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তিনি খুনের পর নেপালের কাঠমান্ডু হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান বলে পুলিশ বলছে।