ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশ খেলেছে ৬১ শতাংশ ডট বল জাপানি প্যাভিলিয়নে মঙ্গলের উল্কাপিণ্ড, দর্শকদের ছোঁয়ার সুযোগ সংসদের ২৫৫ পদে একটিও না পাওয়া ছাত্রদল, জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির ২৩৪ পদে জুলাই যোদ্ধাদের’ সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত: আসিফ মাহমুদ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার জুলাই থেকে দ্রুততর হবে শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুন, উৎস কার্গো ভিলেজে শৈলকূপায় জিয়া সাইবার ফোর্স এর আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সহকারী এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রনভীরের উদ্যোগে মসজিদ নির্মান সুন্দরগঞ্জে মালতোলা হিলফুল ফুজুল সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ঘর উপহার গাজীপুরে বিএসটিআই ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে ৫ লক্ষ্য টাকা জরিমানা

দুপুরে হালকা বিশ্রাম নেওয়ার সুফল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:২১:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

দুপুরে কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়াকে আরবিতে ‘কায়লুলাহ’ বলা হয়। যদি রাতের সময় যথেষ্ট পরিমাণে ঘুম না হয় বা কোনো কারণে রাতের ঘুম পূর্ণ না হয়, তবে দুপুরে কিছু সময় ঘুমানো উচিত। এটি ইসলামী শিক্ষা এবং প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নাহর অংশ। সাহাবায়ে কিরামের আমল থেকেও জানা যায় যে তাঁরা দুপুরে কায়লুলাহ (দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম) করতেন।

সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমরা নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতাম, এরপর কায়লুলাহ (দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম) করতাম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৪১)

একাধিক হাদিসে দুপুরে ঘুমানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দুপুরে কিছুক্ষণ ঘুমাও, কারণ শয়তান কায়লুলাহ করে না।’ (মুজামুল আওসাত, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৩, হাদিস : ২৮)

আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘দুপুরে কিছুক্ষণ ঘুমালে রাতের ঘুম পূর্ণ করার পাশাপাশি তাহাজ্জুদের জন্য ওঠা সহজ হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৯৩)

চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম

ইংল্যান্ডের স্লিপ রিসার্চ ল্যাবরেটরির পরিচালক অধ্যাপক জিম হর্ন বলেন, ‘দুপুর ২টা থেকে ৪টার মধ্যে মানবদেহে কিছু প্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটে। এ সময় বেশির ভাগ মানুষের শরীর ক্লান্ত অনুভব করে এবং ঘুম পায়। যদি এই সময় ২০ মিনিটের জন্য ঘুমানো যায়, তবে কাজ করার শক্তি বেড়ে যায় এবং শরীরে সজীবতা ও আরাম অনুভূত হয়।’ (Sleeplessness – Assessing Sleep Need in Society Today)

পাকিস্তানের বিখ্যাত সাংবাদিক জাভেদ চৌধুরী লিখেছেন, ‘মানব অভ্যাস নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ৯৯ শতাংশ ভুল সিদ্ধান্ত দুপুর ২টা থেকে ৪টার মধ্যে নেওয়া হয়।

গবেষণা আরো বলছে, সবচেয়ে বেশি ভুল সিদ্ধান্ত দুপুর ২টা ৫০ থেকে ৩টার মধ্যে নেওয়া হয়। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বুঝেছেন, আমরা মানুষ, টানা সাত ঘণ্টার বেশি সক্রিয় থাকতে পারি না। সাত ঘণ্টা পর আমাদের মস্তিষ্ককে মোবাইল ফোনের ব্যাটারির মতো রিচার্জ করার প্রয়োজন হয়। যদি আমরা এটি রিচার্জ না করি, তবে আমাদের মস্তিষ্ক ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমাদের ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়।’

গবেষকরা আরো আবিষ্কার করেন যে আমরা যদি সকাল ৭টায় জেগে উঠি, তবে দুপুর ২টার মধ্যে আমাদের সাত ঘণ্টা পূর্ণ হয়ে যায়।

এর পর থেকে আমাদের মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়তে শুরু করে এবং আমরা একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকি। তাই যদি আমরা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে চাই, তবে আমাদের উচিত দুপুর ২টার পর বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ করা এবং অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য দুপুরে ঘুমানো।
এই ৩০ মিনিটের হালকা ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের ব্যাটারি আবার চার্জ করে দেয়, যা আমাদের ভালো ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে।

দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে অল্প সময়ের জন্য আরাম বা ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে সতেজ করে তোলে, যা আমাদের কর্মদক্ষতা বাড়ায় এবং আরো কার্যকর করে তোলে। (Hattar, Saad. G. Jordanian Scientist Determines Single Cell Could Control Bodzs Internal Clock. Jordanian)

প্রকৃতির প্রজ্ঞা

সৃষ্টিকর্তার নিখুঁত সৃষ্টিতে লক্ষ করুন, গ্রীষ্মের দিনগুলো দীর্ঘ হয় এ জন্যই যে দুপুরে যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে, শ্রমজীবী মানুষ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারে এবং তার পরও তাদের কাজের সময় পূর্ণ হয়। অন্যদিকে, শীতের দিনগুলো ছোট হওয়ায় মানুষ বিশ্রাম না নিয়েও কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ খেলেছে ৬১ শতাংশ ডট বল

দুপুরে হালকা বিশ্রাম নেওয়ার সুফল

আপডেট সময় : ০৬:২১:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দুপুরে কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়াকে আরবিতে ‘কায়লুলাহ’ বলা হয়। যদি রাতের সময় যথেষ্ট পরিমাণে ঘুম না হয় বা কোনো কারণে রাতের ঘুম পূর্ণ না হয়, তবে দুপুরে কিছু সময় ঘুমানো উচিত। এটি ইসলামী শিক্ষা এবং প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নাহর অংশ। সাহাবায়ে কিরামের আমল থেকেও জানা যায় যে তাঁরা দুপুরে কায়লুলাহ (দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম) করতেন।

সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমরা নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতাম, এরপর কায়লুলাহ (দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম) করতাম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৪১)

একাধিক হাদিসে দুপুরে ঘুমানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দুপুরে কিছুক্ষণ ঘুমাও, কারণ শয়তান কায়লুলাহ করে না।’ (মুজামুল আওসাত, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৩, হাদিস : ২৮)

আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘দুপুরে কিছুক্ষণ ঘুমালে রাতের ঘুম পূর্ণ করার পাশাপাশি তাহাজ্জুদের জন্য ওঠা সহজ হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৯৩)

চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দ্বিপ্রাহরিক বিশ্রাম

ইংল্যান্ডের স্লিপ রিসার্চ ল্যাবরেটরির পরিচালক অধ্যাপক জিম হর্ন বলেন, ‘দুপুর ২টা থেকে ৪টার মধ্যে মানবদেহে কিছু প্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটে। এ সময় বেশির ভাগ মানুষের শরীর ক্লান্ত অনুভব করে এবং ঘুম পায়। যদি এই সময় ২০ মিনিটের জন্য ঘুমানো যায়, তবে কাজ করার শক্তি বেড়ে যায় এবং শরীরে সজীবতা ও আরাম অনুভূত হয়।’ (Sleeplessness – Assessing Sleep Need in Society Today)

পাকিস্তানের বিখ্যাত সাংবাদিক জাভেদ চৌধুরী লিখেছেন, ‘মানব অভ্যাস নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ৯৯ শতাংশ ভুল সিদ্ধান্ত দুপুর ২টা থেকে ৪টার মধ্যে নেওয়া হয়।

গবেষণা আরো বলছে, সবচেয়ে বেশি ভুল সিদ্ধান্ত দুপুর ২টা ৫০ থেকে ৩টার মধ্যে নেওয়া হয়। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বুঝেছেন, আমরা মানুষ, টানা সাত ঘণ্টার বেশি সক্রিয় থাকতে পারি না। সাত ঘণ্টা পর আমাদের মস্তিষ্ককে মোবাইল ফোনের ব্যাটারির মতো রিচার্জ করার প্রয়োজন হয়। যদি আমরা এটি রিচার্জ না করি, তবে আমাদের মস্তিষ্ক ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমাদের ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়।’

গবেষকরা আরো আবিষ্কার করেন যে আমরা যদি সকাল ৭টায় জেগে উঠি, তবে দুপুর ২টার মধ্যে আমাদের সাত ঘণ্টা পূর্ণ হয়ে যায়।

এর পর থেকে আমাদের মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়তে শুরু করে এবং আমরা একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকি। তাই যদি আমরা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে চাই, তবে আমাদের উচিত দুপুর ২টার পর বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ করা এবং অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য দুপুরে ঘুমানো।
এই ৩০ মিনিটের হালকা ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের ব্যাটারি আবার চার্জ করে দেয়, যা আমাদের ভালো ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে।

দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে অল্প সময়ের জন্য আরাম বা ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে সতেজ করে তোলে, যা আমাদের কর্মদক্ষতা বাড়ায় এবং আরো কার্যকর করে তোলে। (Hattar, Saad. G. Jordanian Scientist Determines Single Cell Could Control Bodzs Internal Clock. Jordanian)

প্রকৃতির প্রজ্ঞা

সৃষ্টিকর্তার নিখুঁত সৃষ্টিতে লক্ষ করুন, গ্রীষ্মের দিনগুলো দীর্ঘ হয় এ জন্যই যে দুপুরে যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে, শ্রমজীবী মানুষ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারে এবং তার পরও তাদের কাজের সময় পূর্ণ হয়। অন্যদিকে, শীতের দিনগুলো ছোট হওয়ায় মানুষ বিশ্রাম না নিয়েও কাজ চালিয়ে যেতে পারে।