ঢাকা ০৯:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেরিয়ে এলো ঢাবিতে বর্বর হত্যাকাণ্ডের আসল ঘটনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:০১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ ঘটনায় অভিযোগে শাহবাগ থানায় করা হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

 

জানা গেছে, বরিশাল বিএম কলেজের মেধাবী ছাত্র তোফাজ্জাল মা-বাবার মৃত্যুর পর কয়েকবছর ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। গত বছর ক্যানসারে মারা যান তার একমাত্র ভাইটিও। ফলে পৃথিবীতে আপন বলতে আর কেউ ছিলোনা তার। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ স্বজন ও পরিচিতদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে খাবার খেতেন।

খাবারের সন্ধ্যানে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ছুটে যান তোফাজ্জল। মামলার এজহার থেকে জানা যায়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৮টায় ফজলুল হক মুসলিম হলের গেইটে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে  থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। পরে হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নেয়া সে ‘মোবাইল চুরি করেছে’ বলে এলোপাথারী চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। পরবর্তীতে সে মানসিক রোগি বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়।

এজহারে বলা হয়েছে, পরবর্তীতে দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সাথে পেছনে হাত বেধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পরে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষকদের জানালে, তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেল নেয়া হয়।
এদিকে তোফাজ্জালকে চুরির দায়ে নির্মম ভাবে হত্যার আগে, ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার এক আত্মীয়। তার মামতো বোন বলেন, ফোন করে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কি তোফাজ্জলের মামা? তখন আমার আব্বু ধরছে, তখন বলছে তোফাজ্জলকে আমরা ধরেছি, সে হলে আছে, ওকে নিতে হলে ৩৫ হাজার টাকা দিতে হবে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ওকে মারছে তারপর ভাত খাওয়ায়েছে, তারপর আবার মারছে, এটা কোন জায়গায় আছে এমন করতে হবে? এ সময় তিনি অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তিও দাবি করেন।

 

অন্যদিকে বর্বর এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার বাদি জানান, হত্যাকারিরা প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত। তাদেরকে দ্রুতই বহিষ্কার করা হবে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

বেরিয়ে এলো ঢাবিতে বর্বর হত্যাকাণ্ডের আসল ঘটনা

আপডেট সময় : ০৪:০১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ ঘটনায় অভিযোগে শাহবাগ থানায় করা হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

 

জানা গেছে, বরিশাল বিএম কলেজের মেধাবী ছাত্র তোফাজ্জাল মা-বাবার মৃত্যুর পর কয়েকবছর ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। গত বছর ক্যানসারে মারা যান তার একমাত্র ভাইটিও। ফলে পৃথিবীতে আপন বলতে আর কেউ ছিলোনা তার। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ স্বজন ও পরিচিতদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে খাবার খেতেন।

খাবারের সন্ধ্যানে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ছুটে যান তোফাজ্জল। মামলার এজহার থেকে জানা যায়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৮টায় ফজলুল হক মুসলিম হলের গেইটে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে  থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। পরে হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নেয়া সে ‘মোবাইল চুরি করেছে’ বলে এলোপাথারী চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। পরবর্তীতে সে মানসিক রোগি বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়।

এজহারে বলা হয়েছে, পরবর্তীতে দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সাথে পেছনে হাত বেধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পরে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষকদের জানালে, তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেল নেয়া হয়।
এদিকে তোফাজ্জালকে চুরির দায়ে নির্মম ভাবে হত্যার আগে, ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার এক আত্মীয়। তার মামতো বোন বলেন, ফোন করে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কি তোফাজ্জলের মামা? তখন আমার আব্বু ধরছে, তখন বলছে তোফাজ্জলকে আমরা ধরেছি, সে হলে আছে, ওকে নিতে হলে ৩৫ হাজার টাকা দিতে হবে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ওকে মারছে তারপর ভাত খাওয়ায়েছে, তারপর আবার মারছে, এটা কোন জায়গায় আছে এমন করতে হবে? এ সময় তিনি অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তিও দাবি করেন।

 

অন্যদিকে বর্বর এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার বাদি জানান, হত্যাকারিরা প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত। তাদেরকে দ্রুতই বহিষ্কার করা হবে।