ঢাকা ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজীপুরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার, স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা “নির্মাতা অমিতাভ রেজা আবার বিয়ে করলেন” “২০১৪, ’১৮ ও ’২৪–এর মতো নির্বাচন হলে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা: গোলাম পরওয়ার” ২৬ টুকরায় উদ্ধার হওয়া আশরাফুলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। লালমনিরহাটে ইএসডিও ও ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান রাজধানীতে অস্থিরতা: বাড্ডা-শাহজাদপুরে দুই বাসে আগুন, ধানমন্ডিতে ককটেল বিস্ফোরণ মোহাম্মদপুরে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুপারিশ ঐকমত্য কমিশনের সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাকিস্তানে ফের আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১২

বিবাহিত মেয়ের ওপর মা-বাবার অধিকার—কতটুকু ন্যায্য, কতটুকু সীমিত

  • NEWS21 staff Musabbir khan
  • আপডেট সময় : ০৪:১১:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৩২ বার পড়া হয়েছে

বিবাহিত মেয়ের ওপর মা-বাবার অধিকার—কতটুকু ন্যায্য, কতটুকু সীমিত

কোরআন ও হাদিসে মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা ছেলেমেয়ে সবার জন্য প্রযোজ্য। কেননা ‘সন্তান’ বলতে ‘ছেলেমেয়ে’ উভয়কেই বোঝানো হয়েছে। আর মা-বাবার জন্য সামর্থ্য অনুপাতে খরচ করা, তাঁদের খিদমত করা এক প্রকার ‘সদাচরণ’।

সুতরাং মা-বাবা যদি এমন দরিদ্র হয় যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম এবং অন্যদিকে মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে তার ওপর মা-বাবার ভরণ-পোষণ ওয়াজিব।

এ ক্ষেত্রে যদি তার সচ্ছল অন্য ভাইবোন থাকে, তবে তাদের ওপরও ভরণ-পোষণ সমানভাবে ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অভাবগ্রস্ত মা-বাবার খরচ না দিলে গুনাহগার হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫৬৪)।

কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমার রব আদেশ করেছেন যে তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত কোরো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো…।’ (সুরা : ইসরা/বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৩)।

অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কী তারা ব্যয় করবে? বলে দাও- যে বস্তুই তোমরা ব্যয় করো, তা হবে পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়-আপনজনের জন্য। ’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৫)।

ইবন মুনজির (রহ.) বলেন, ওলামায়ে কিরাম এ ব্যাপারে একমত যে সন্তান যদি সামর্থ্যবান হয় এবং মা-বাবা যদি গরিব হন, তাহলে তাঁদের জন্য খরচ করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব। (আল মুগনি : ১১/৩৭৫)।

আর যদি পিতা-মাতা সচ্ছল হয় কিংবা সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান না হয়, তাহলে মা-বাবার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাওয়া। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)।

সুতরাং মেয়ে/মেয়েদের প্রতি সংক্ষেপে ইসলামের নির্দেশ হলো-

১. সর্বাবস্থায় মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ এবং তাঁদের যথাসাধ্য   খিদমত করবে। তাঁদের খোঁজখবর নেবে। তাঁদের প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখবে। তাঁদের শরিয়তসম্মত আদেশ মেনে চলবে। যথাযথভাবে খেয়াল রাখবে তাঁরা যেন কষ্ট না পায়।

NEW21
NEW21

২. সামর্থ্যবান হলে নিজের মোহর থেকে অথবা নিজ মালিকানাধীন অন্য সম্পদ থেকে মা-বাবার জন্য খরচ করবে।

৩. সামর্থ্যবান না হলে মা-বাবার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। তবে এ ক্ষেত্রে মেয়ে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পিতা-মাতাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবে। এ ক্ষেত্রে মেয়েরা ঘরোয়া পরিবেশে শিক্ষকতা করে বা কোনো হস্তশিল্প (যেমন-সেলাইয়ের কাজ) বা হাঁস-মুরগি পালন করে তাঁদের সহযোগিতা করতে পারে। স্বামীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে শরিয়তের সীমায় বৈধ হয়- এমন যেকোনো কর্মসংস্থানে যোগ দিয়ে উপার্জন করতে পারে।

৪. সন্তান হিসেবে মেয়ে তার মা-বাবাকে জাকাত বা সদকা দিতে পারবে না। তবে স্বামীকে মহব্বতের সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ির খিদমত করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এমনকি তাঁর জাকাত/সদকা থেকে হলেও। কিন্তু স্বামীর অগোচরে তাঁর সম্পদ থেকে পিতা-মাতাকে কিছু দেওয়া জায়েজ হবে না। তবে স্বামীর সন্তুষ্টির সঙ্গে হলে কোনো সমস্যা নেই।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার, স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা

বিবাহিত মেয়ের ওপর মা-বাবার অধিকার—কতটুকু ন্যায্য, কতটুকু সীমিত

আপডেট সময় : ০৪:১১:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

কোরআন ও হাদিসে মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা ছেলেমেয়ে সবার জন্য প্রযোজ্য। কেননা ‘সন্তান’ বলতে ‘ছেলেমেয়ে’ উভয়কেই বোঝানো হয়েছে। আর মা-বাবার জন্য সামর্থ্য অনুপাতে খরচ করা, তাঁদের খিদমত করা এক প্রকার ‘সদাচরণ’।

সুতরাং মা-বাবা যদি এমন দরিদ্র হয় যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম এবং অন্যদিকে মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে তার ওপর মা-বাবার ভরণ-পোষণ ওয়াজিব।

এ ক্ষেত্রে যদি তার সচ্ছল অন্য ভাইবোন থাকে, তবে তাদের ওপরও ভরণ-পোষণ সমানভাবে ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অভাবগ্রস্ত মা-বাবার খরচ না দিলে গুনাহগার হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫৬৪)।

কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমার রব আদেশ করেছেন যে তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত কোরো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো…।’ (সুরা : ইসরা/বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৩)।

অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কী তারা ব্যয় করবে? বলে দাও- যে বস্তুই তোমরা ব্যয় করো, তা হবে পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়-আপনজনের জন্য। ’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৫)।

ইবন মুনজির (রহ.) বলেন, ওলামায়ে কিরাম এ ব্যাপারে একমত যে সন্তান যদি সামর্থ্যবান হয় এবং মা-বাবা যদি গরিব হন, তাহলে তাঁদের জন্য খরচ করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব। (আল মুগনি : ১১/৩৭৫)।

আর যদি পিতা-মাতা সচ্ছল হয় কিংবা সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান না হয়, তাহলে মা-বাবার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাওয়া। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)।

সুতরাং মেয়ে/মেয়েদের প্রতি সংক্ষেপে ইসলামের নির্দেশ হলো-

১. সর্বাবস্থায় মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ এবং তাঁদের যথাসাধ্য   খিদমত করবে। তাঁদের খোঁজখবর নেবে। তাঁদের প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখবে। তাঁদের শরিয়তসম্মত আদেশ মেনে চলবে। যথাযথভাবে খেয়াল রাখবে তাঁরা যেন কষ্ট না পায়।

NEW21
NEW21

২. সামর্থ্যবান হলে নিজের মোহর থেকে অথবা নিজ মালিকানাধীন অন্য সম্পদ থেকে মা-বাবার জন্য খরচ করবে।

৩. সামর্থ্যবান না হলে মা-বাবার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। তবে এ ক্ষেত্রে মেয়ে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পিতা-মাতাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবে। এ ক্ষেত্রে মেয়েরা ঘরোয়া পরিবেশে শিক্ষকতা করে বা কোনো হস্তশিল্প (যেমন-সেলাইয়ের কাজ) বা হাঁস-মুরগি পালন করে তাঁদের সহযোগিতা করতে পারে। স্বামীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে শরিয়তের সীমায় বৈধ হয়- এমন যেকোনো কর্মসংস্থানে যোগ দিয়ে উপার্জন করতে পারে।

৪. সন্তান হিসেবে মেয়ে তার মা-বাবাকে জাকাত বা সদকা দিতে পারবে না। তবে স্বামীকে মহব্বতের সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ির খিদমত করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এমনকি তাঁর জাকাত/সদকা থেকে হলেও। কিন্তু স্বামীর অগোচরে তাঁর সম্পদ থেকে পিতা-মাতাকে কিছু দেওয়া জায়েজ হবে না। তবে স্বামীর সন্তুষ্টির সঙ্গে হলে কোনো সমস্যা নেই।