জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন। উচ্চপর্যায়ে আলোচনা শেষে জানানো যাবে।
আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড এবং মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কাছে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এ আয়োজনে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডে শহীদ ৫৮ জন এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ১৯ জনের পরিবারের প্রত্যেককে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে একজন সাংবাদিক উপদেষ্টার কাছে জানতে চান, ‘গতকাল আপনার যাঁরা সতীর্থ ছিলেন বা এখনো আছেন, তাঁরা বলছেন যে আপনারা গণ–অভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্ব করছেন না। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকার থেকে এখন পদত্যাগ করা উচিত। আপনারা যদি গণ–অভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্ব করতেন, তাহলে তাঁদের এভাবে মার খেতে হতো না—এটা তাঁদের ভাষ্য।’
জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমার সতীর্থ জুলাই গণ–অভ্যুথানে অংশগ্রহণ করা সব রাজনৈতিক দল থেকে বাংলাদেশের সব মানুষ। আপনি কার কথা বলতেছেন, আমি আসলে স্পষ্ট না।’
এ সময় ওই সাংবাদিক বলেন, ‘গতকাল যারা আন্দোলন করেছিল সংসদ ভবনের সামনে।’
তখন আসিফ মাহমুদ আবার জানতে চান, ‘গতকাল সংসদ ভবনের সামনে কারা আন্দোলন করেছিল?’
ওই সাংবাদিক বলেন, ‘জুলাইয়ে আহতরা।’
এর জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং আহত ব্যক্তিদের পাশে বসেই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তো যেটা হয়েছে, সেটা অনেকঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং সেখানে হামলার সঙ্গে কারা জড়িত ছিল, সেটাও আমরা দেখছি, কথা বলছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলছি। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা শেষে হয়তো কিছু জানানো যাবে।’
এ সময় সাংবাদিক পদত্যাগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই প্রশ্নটা এখানে রিলেভেন্ট (প্রাসঙ্গিক) বলে মনে হচ্ছে না।’
‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভের পর গতকাল শুক্রবার সকালে প্রাচীর টপকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন শতাধিক ব্যক্তি। পুলিশ কর্মকর্তা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা রাত থেকে তাঁদের অনেক বোঝানোর পরও তাঁরা সরেননি। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়।
গতকাল দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর তাঁরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। তাঁরা ভাঙচুর করেন পুলিশের বাসসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ও সড়কে টায়ার, কাঠ জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে দেন। দুই ঘণ্টা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর বৃষ্টির মধ্যে বিকেলের আগে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে শেরেবাংলা নগর থানায় চারটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।