ঢাকা ০৭:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদলের দুই নেতা, অভিযোগ উঠল কার বিরুদ্ধে? নতুন দামে আজ থেকে স্বর্ণ বিক্রয় শুরু, ভরির মূল্য কত? সন্ধ্যায় দলীয় বৈঠকে অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা ‘রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ প্যানেল অনিয়মের অভিযোগে ভোট থেকে দূরে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় স্বল্প সময়ে প্রস্তুতির সেরা টিপস দেয়ালে শিশুর আঁকা মুছার ৪টি সহজ এবং কার্যকর উপায় স্পাউস ভিসার মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণা সাংবাদিককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দিলেন শ্রমিকলীগ নেতা কিস্তির টাকা তুলে ইজিবাইক কিনে শেষ সম্বল ইজিবাইক হারিয়ে আজ নিঃস্ব হান্নান বিশ্বাস সেলেনার স্বামী বেনি ব্ল্যাঙ্কোর বাড়িতে ডলার ভর্তি ব্যাগ, পাউরুটির চেয়ার ও গোপন সিঁড়ি ছাড়াও আরও কী আছে?

ছুটির পর পুরোদমে প্রচারণা শুরু, এক প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

  • Musabbir Khan
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৮:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

ছুটির পর পুরোদমে প্রচারণা শুরু, এক প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

দুর্গাপূজার ছুটির শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের প্রচারণা পুরোদমে শুরু হয়েছে। প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে নির্বাচনের এই প্রচারণা। আজ রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়, শাটল ট্রেন ও সড়কে অবস্থান করে দেখা গেছে এ চিত্র।

এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। বন্ধ ক্যাম্পাসেই বিভিন্ন আবাসিক হল, ক্যাম্পাসের আশপাশের কটেজ ও ভাড়া বাসায় প্রচারণা চালান প্রার্থীরা। তবে এটি ছিল তুলনামূলক ধীর। এখন ক্যাম্পাস খোলায় শিক্ষার্থী ও প্রার্থী উভয়ের উপস্থিতি বেড়েছে।

আজ সরেজমিনে দেখা যায়, প্রার্থীরা হাতে প্রচারপত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন। আবার এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর, রেলওয়ে স্টেশন, বিভিন্ন অনুষদ, শহীদ মিনার, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়ি—সব জায়গায় নির্বাচনী আমেজ দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেদওয়ান হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ দেখে ভালো লাগছে। চাকসু নির্বাচন পর্যন্ত এ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশা করছি। প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমানের কার্যক্রম দেখছি আমরা। সেই ভিত্তিতে চাকসু নির্বাচনে ভোট দেব।’

ইশতেহার ঘোষণা

এদিকে চাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে ‘সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামের একটি প্যানেল। রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে বলে জানান প্রার্থীরা। এতে তাঁরা ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় চাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ইশতেহারের বিষয়ে জানানো হয়।

এতে প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী তাওসিফ মুত্তাকী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ দেখেছি। এর সুন্দর কাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কোম্পানি থেকে করা হয়েছে। আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে চাই, সেটা দুই উপায়ে করতে পারি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের মাধ্যমে, আরেকটি সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে।’

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা সভাপতি; অর্থাৎ উপাচার্যের ক্ষমতার লোপের কথা বলেছি। চাকসুর সভাপতি যেকোনো সময় চাকসু ভেঙে দিতে পারেন। এমন ক্ষমতা যদি উপাচার্যের কাছে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে এটি আর কাজ করবে না। আমরা এ ক্ষমতা লোপ করতে কাজ করব।’

সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদ ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। এসব ইশতেহারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ১. শিক্ষার্থীদের পরিচয় গোপন রেখে অভিযোগ ও মতামত জানানোর সুযোগ, মতামত জানানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব বিষয় নিষ্পত্তি করা। ২. চাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা, মেয়াদ শেষে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন নিশ্চিত করার আইনি বিধান প্রণয়ন করা। ৩. প্রক্টরিয়াল বডিতে একজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা। ৪. শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম চালু ও শতভাগ অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

এ ছাড়া লাইভ শাটল ট্রেন ট্র্যাকিং, আবাসন সমস্যা সমাধান, মেডিকেল সেবার মান বৃদ্ধিসহ গবেষণা, সেমিনার, পাঠচক্র ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

তিন দশক পর সপ্তম চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৫ অক্টোবর। একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে হল সংসদ নির্বাচনও। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার। এর মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন ও ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী চাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী আছেন ৯০৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। হল সংসদে নির্বাচন করবেন ৪৮৬ জন।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদলের দুই নেতা, অভিযোগ উঠল কার বিরুদ্ধে?

ছুটির পর পুরোদমে প্রচারণা শুরু, এক প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

দুর্গাপূজার ছুটির শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের প্রচারণা পুরোদমে শুরু হয়েছে। প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে নির্বাচনের এই প্রচারণা। আজ রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়, শাটল ট্রেন ও সড়কে অবস্থান করে দেখা গেছে এ চিত্র।

এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। বন্ধ ক্যাম্পাসেই বিভিন্ন আবাসিক হল, ক্যাম্পাসের আশপাশের কটেজ ও ভাড়া বাসায় প্রচারণা চালান প্রার্থীরা। তবে এটি ছিল তুলনামূলক ধীর। এখন ক্যাম্পাস খোলায় শিক্ষার্থী ও প্রার্থী উভয়ের উপস্থিতি বেড়েছে।

আজ সরেজমিনে দেখা যায়, প্রার্থীরা হাতে প্রচারপত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন। আবার এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর, রেলওয়ে স্টেশন, বিভিন্ন অনুষদ, শহীদ মিনার, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়ি—সব জায়গায় নির্বাচনী আমেজ দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেদওয়ান হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ দেখে ভালো লাগছে। চাকসু নির্বাচন পর্যন্ত এ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশা করছি। প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমানের কার্যক্রম দেখছি আমরা। সেই ভিত্তিতে চাকসু নির্বাচনে ভোট দেব।’

ইশতেহার ঘোষণা

এদিকে চাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে ‘সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামের একটি প্যানেল। রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে বলে জানান প্রার্থীরা। এতে তাঁরা ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় চাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ইশতেহারের বিষয়ে জানানো হয়।

এতে প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী তাওসিফ মুত্তাকী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ দেখেছি। এর সুন্দর কাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কোম্পানি থেকে করা হয়েছে। আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে চাই, সেটা দুই উপায়ে করতে পারি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের মাধ্যমে, আরেকটি সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে।’

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা সভাপতি; অর্থাৎ উপাচার্যের ক্ষমতার লোপের কথা বলেছি। চাকসুর সভাপতি যেকোনো সময় চাকসু ভেঙে দিতে পারেন। এমন ক্ষমতা যদি উপাচার্যের কাছে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে এটি আর কাজ করবে না। আমরা এ ক্ষমতা লোপ করতে কাজ করব।’

সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদ ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। এসব ইশতেহারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ১. শিক্ষার্থীদের পরিচয় গোপন রেখে অভিযোগ ও মতামত জানানোর সুযোগ, মতামত জানানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব বিষয় নিষ্পত্তি করা। ২. চাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা, মেয়াদ শেষে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন নিশ্চিত করার আইনি বিধান প্রণয়ন করা। ৩. প্রক্টরিয়াল বডিতে একজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা। ৪. শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম চালু ও শতভাগ অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

এ ছাড়া লাইভ শাটল ট্রেন ট্র্যাকিং, আবাসন সমস্যা সমাধান, মেডিকেল সেবার মান বৃদ্ধিসহ গবেষণা, সেমিনার, পাঠচক্র ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

তিন দশক পর সপ্তম চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৫ অক্টোবর। একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে হল সংসদ নির্বাচনও। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার। এর মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন ও ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী চাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী আছেন ৯০৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। হল সংসদে নির্বাচন করবেন ৪৮৬ জন।