ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দীনের দায়ীদের জন্য নসিহত

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৪৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

নবুয়াতের একেবারে গোড়ার দিকের কথা। হেরা গুহায় হজরত জিবরাইল (আ.) রসুল (সা.)-এর কাছে অহি নিয়ে এসেছেন কয়েক মাস আগে। প্রথম দিকে অবশ্য একটু বিরতি দিয়েই অহি নাজিল হতো।

এ বিরতি রসুলের জন্য ছিল আশঙ্কা আর পেরেশানির। আশঙ্কা হলো নবুয়াতের মহান দায়িত্ব পালনের কোনো রোডম্যাপ এখনো তৈরি হয়নি। অন্যদিকে মানুষকে কীভাবে আল্লাহমুখী করা যায়, পথ দেখানো যায়- এ চিন্তায় তিনি ছিলেন পেরেশান। এমন সময় ঘটল আরেক বিপত্তি। কুরাইশ নেতারা দারুণ নদওয়ায় পরামর্শ সভা ডেকে নবীজিকে উদ্দেশ করে বিভিন্ন কটু কথা বলল। তারা বলল, ‘গাছ ছোট থাকতেই উপড়ে ফেলা হোক। আবদুল্লাহর এতিম ছেলে মুহাম্মদকে বেশি দূর এগোতে দেওয়া যাবে না।’

‘তাহলে কী করণীয়’-একজন জানতে চায়।

‘সমাজে রটিয়ে দাও মুহাম্মদ পাগল হয়ে গেছে।’ আরেকজন বলল।

‘কিন্তু সে তো পাগল না।’

‘তাহলে বল সে গণক।’

‘সে তো গণক না।’

‘বল, মুহাম্মদ জাদুকর।’

‘সে তো জাদুও দেখায় না।’

একে একে সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হয়। হওয়ারই কথা। রসুল (সা.) তো বাইরে থেকে আসা কোনো মানুষ নন। তিনি কুরাইশদেরই সন্তান। তাঁর অনুপম চারিত্রিক মাধুর্যের সাক্ষ্য এতকাল তারাই দিয়েছে। হঠাৎ কীভাবে পরম সত্যবাদী মানুষটিকে তারা পাগল-গণক-জাদুকর বলে! সেদিনের মতো সভা শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই সভার কার্যবিবরণী কীভাবে যেন নবীজি জেনে ফেলেন। কদিন হলো দাওয়াতি মিশন শুরু হয়েছে। যে কুরাইশদের সঙ্গে কাজ এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে, তারাই থামিয়ে দিতে চাইছে! মনে মনে নবীজি কিছুটা দমে গেলেন। দূরের মানুষ বিরোধিতা করলে কাছের মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলা করা যায়। কিন্তু কাছের মানুষ যদি বিরোধিতা করে তখন কোথাও আর যাওয়ার থাকে না। রসুল (সা.) মন খারাপ করে চাদর মুড়ি দিয়ে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে রইলেন।

নবীজির মন খারাপ হয়েছে কাছের মানুষরা তাঁকে দূরে ঠেলে দিয়েছে বলে। আসলে আল্লাহর খেলা অন্যরকম। কাছের মানুষ যাকে দূরে ঠেলে দেয় আল্লাহ তাঁকে বুকে টেনে নেয়। ঘুমিয়ে থাকা সন্তানের কপালে মা যেমন চুমু এঁকে মায়াভরা কণ্ঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য ডেকে তুলেন, আল্লাহও নবীজিকে পরম মমতায় ডাক দিলেন, ‘ইয়া আইয়্যুহাল মুজাম্মিল। কুমিল্লায়লা ইল্লা কালিলা।’ হে চাদর জড়ানো নবী! রাত যত গভীর হোক, ভয় পেয়ো না। দাঁড়াও।’ (তাফসিরে মাজহারি, ১০ খণ্ড, ১০২ পৃষ্ঠা)।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে বিএসটিআই ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে ৫ লক্ষ্য টাকা জরিমানা

দীনের দায়ীদের জন্য নসিহত

আপডেট সময় : ০২:৪৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নবুয়াতের একেবারে গোড়ার দিকের কথা। হেরা গুহায় হজরত জিবরাইল (আ.) রসুল (সা.)-এর কাছে অহি নিয়ে এসেছেন কয়েক মাস আগে। প্রথম দিকে অবশ্য একটু বিরতি দিয়েই অহি নাজিল হতো।

এ বিরতি রসুলের জন্য ছিল আশঙ্কা আর পেরেশানির। আশঙ্কা হলো নবুয়াতের মহান দায়িত্ব পালনের কোনো রোডম্যাপ এখনো তৈরি হয়নি। অন্যদিকে মানুষকে কীভাবে আল্লাহমুখী করা যায়, পথ দেখানো যায়- এ চিন্তায় তিনি ছিলেন পেরেশান। এমন সময় ঘটল আরেক বিপত্তি। কুরাইশ নেতারা দারুণ নদওয়ায় পরামর্শ সভা ডেকে নবীজিকে উদ্দেশ করে বিভিন্ন কটু কথা বলল। তারা বলল, ‘গাছ ছোট থাকতেই উপড়ে ফেলা হোক। আবদুল্লাহর এতিম ছেলে মুহাম্মদকে বেশি দূর এগোতে দেওয়া যাবে না।’

‘তাহলে কী করণীয়’-একজন জানতে চায়।

‘সমাজে রটিয়ে দাও মুহাম্মদ পাগল হয়ে গেছে।’ আরেকজন বলল।

‘কিন্তু সে তো পাগল না।’

‘তাহলে বল সে গণক।’

‘সে তো গণক না।’

‘বল, মুহাম্মদ জাদুকর।’

‘সে তো জাদুও দেখায় না।’

একে একে সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হয়। হওয়ারই কথা। রসুল (সা.) তো বাইরে থেকে আসা কোনো মানুষ নন। তিনি কুরাইশদেরই সন্তান। তাঁর অনুপম চারিত্রিক মাধুর্যের সাক্ষ্য এতকাল তারাই দিয়েছে। হঠাৎ কীভাবে পরম সত্যবাদী মানুষটিকে তারা পাগল-গণক-জাদুকর বলে! সেদিনের মতো সভা শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই সভার কার্যবিবরণী কীভাবে যেন নবীজি জেনে ফেলেন। কদিন হলো দাওয়াতি মিশন শুরু হয়েছে। যে কুরাইশদের সঙ্গে কাজ এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে, তারাই থামিয়ে দিতে চাইছে! মনে মনে নবীজি কিছুটা দমে গেলেন। দূরের মানুষ বিরোধিতা করলে কাছের মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলা করা যায়। কিন্তু কাছের মানুষ যদি বিরোধিতা করে তখন কোথাও আর যাওয়ার থাকে না। রসুল (সা.) মন খারাপ করে চাদর মুড়ি দিয়ে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে রইলেন।

নবীজির মন খারাপ হয়েছে কাছের মানুষরা তাঁকে দূরে ঠেলে দিয়েছে বলে। আসলে আল্লাহর খেলা অন্যরকম। কাছের মানুষ যাকে দূরে ঠেলে দেয় আল্লাহ তাঁকে বুকে টেনে নেয়। ঘুমিয়ে থাকা সন্তানের কপালে মা যেমন চুমু এঁকে মায়াভরা কণ্ঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য ডেকে তুলেন, আল্লাহও নবীজিকে পরম মমতায় ডাক দিলেন, ‘ইয়া আইয়্যুহাল মুজাম্মিল। কুমিল্লায়লা ইল্লা কালিলা।’ হে চাদর জড়ানো নবী! রাত যত গভীর হোক, ভয় পেয়ো না। দাঁড়াও।’ (তাফসিরে মাজহারি, ১০ খণ্ড, ১০২ পৃষ্ঠা)।