ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৃত্যুকে স্মরণ করার উপকারিতা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

মৃত্যু অবধারিত। দুদিন আগে অথবা পরে সবাইকে একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫)

মৃত্যুর স্মরণ মানুষের আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর আনুগত্য এবং পরকালীন মুক্তির পথে পরিচালিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

তাই সর্বদা মৃত্যুর প্রস্তুতি রাখার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। বারাআ (রা.) বলেন, একদা আমরা একটি জানাজায় রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে শরিক ছিলাম। তিনি একটি কবরের পাশে বসলেন, পরে কাঁদতে শুরু করলেন। এমনকি তার চোখের পানিতে মাটি ভিজে গেল।

অতঃপর তিনি বলেন, হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা। (তোমাদের অবস্থা) এর মতোই হবে, সুতরাং তোমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করো।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৯৫)

পৃথিবীতে আসার সিরিয়াল আছে, কিন্তু যাওয়ার কোনো সিরিয়াল নেই। দুনিয়ার ব্যস্ততার ভিড়ে যারা আগেভাগে মৃত্যুর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে তারাই দূরদর্শী ঈমানদার।

ইবনে উমর (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বসা ছিলাম। এ সময় জনৈক আনসারি সাহাবি তার কাছে আসে। সে রাসুল (সা.)-কে সালাম করে এবং বলে, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) সর্বাপেক্ষা উত্তম ঈমানদার কে? তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যাদের চরিত্র উত্তম। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করে সর্বাপেক্ষা দূরদর্শী ঈমানদার কে? তিনি বলেন, যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, এরাই সর্বোত্তম দূরদর্শী। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫৯)

দুনিয়ার মোহ ও শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ ইবাদত থেকে দূরে সরে পড়ে।

ব্যস্ত হয়ে পড়ে দুনিয়ার গাড়ি-বাড়ি এবং অর্থ অর্জনের প্রতিযোগিতায়। কিন্তু মৃত্যুর স্মরণ মানুষকে দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমিয়ে দেয়, অহংকার দূর করে এবং ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় ভোগবিলাস থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা বেশি করে স্বাদ বিনাশকারী মৃত্যুকে স্মরণ করো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৭; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫৮)
মৃত্যুকে স্মরণ করার বড় একটি উপায় কবর জিয়ারত করা। এতে হৃদয় বিগলিত হয়। চোখের কোণে জমে বিগলিত হৃদয়ের তপ্তজল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তোমাদের এর আগে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন থেকে কবর জিয়ারত করো। কেননা, তা দুনিয়াবিমুখতা এনে দেয় এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৭১)

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুকে স্মরণ করার উপকারিতা

আপডেট সময় : ০৬:২৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

মৃত্যু অবধারিত। দুদিন আগে অথবা পরে সবাইকে একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫)

মৃত্যুর স্মরণ মানুষের আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর আনুগত্য এবং পরকালীন মুক্তির পথে পরিচালিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

তাই সর্বদা মৃত্যুর প্রস্তুতি রাখার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। বারাআ (রা.) বলেন, একদা আমরা একটি জানাজায় রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে শরিক ছিলাম। তিনি একটি কবরের পাশে বসলেন, পরে কাঁদতে শুরু করলেন। এমনকি তার চোখের পানিতে মাটি ভিজে গেল।

অতঃপর তিনি বলেন, হে আমার প্রিয় ভাইয়েরা। (তোমাদের অবস্থা) এর মতোই হবে, সুতরাং তোমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করো।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৯৫)

পৃথিবীতে আসার সিরিয়াল আছে, কিন্তু যাওয়ার কোনো সিরিয়াল নেই। দুনিয়ার ব্যস্ততার ভিড়ে যারা আগেভাগে মৃত্যুর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে তারাই দূরদর্শী ঈমানদার।

ইবনে উমর (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বসা ছিলাম। এ সময় জনৈক আনসারি সাহাবি তার কাছে আসে। সে রাসুল (সা.)-কে সালাম করে এবং বলে, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) সর্বাপেক্ষা উত্তম ঈমানদার কে? তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যাদের চরিত্র উত্তম। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করে সর্বাপেক্ষা দূরদর্শী ঈমানদার কে? তিনি বলেন, যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, এরাই সর্বোত্তম দূরদর্শী। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫৯)

দুনিয়ার মোহ ও শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ ইবাদত থেকে দূরে সরে পড়ে।

ব্যস্ত হয়ে পড়ে দুনিয়ার গাড়ি-বাড়ি এবং অর্থ অর্জনের প্রতিযোগিতায়। কিন্তু মৃত্যুর স্মরণ মানুষকে দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমিয়ে দেয়, অহংকার দূর করে এবং ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় ভোগবিলাস থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা বেশি করে স্বাদ বিনাশকারী মৃত্যুকে স্মরণ করো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৭; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫৮)
মৃত্যুকে স্মরণ করার বড় একটি উপায় কবর জিয়ারত করা। এতে হৃদয় বিগলিত হয়। চোখের কোণে জমে বিগলিত হৃদয়ের তপ্তজল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তোমাদের এর আগে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন থেকে কবর জিয়ারত করো। কেননা, তা দুনিয়াবিমুখতা এনে দেয় এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৭১)