ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

কোটালীপাড়ায় দুর্গাপূজার আনসার নিয়োগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় দুর্গাপূজার আনসার নিয়োগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।

দুর্গাপূজায় নিয়োগপ্রাপ্ত আনসারদের কাছ থেকে ৩ থেকে ৬শত টাকা নেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন মণ্ডপে ডিউটিরত আনসার সদস্যরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে ডিউটির নামে ভূয়া তালিকা দিয়ে ডিউটির টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারাও চলছে।
জানাগেছে, এ বছর কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩শত ২২ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য ২ হাজার ৬৩ জন আনসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি কমান্ডারদের মাধ্যমে এসকল আনসার সদস্য নিয়োগ দিয়েছেন।
নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিজন আনসারকে ৫দিনের ডিউটির জন্য ২৮শত ৫০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার কার্যালয়সূত্রে জানাগেছে। এই টাকা প্রতিজন আনসারকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই প্রতি আনসারের কাছ থেকে অগ্রিম ৩থেকে ৬শত টাকা নেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ডিউটিরত আনসারগণ জানিয়েছেন।
উপজেলার পশ্চিম বান্ধাবাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের ডিউটিরত আনসার বিলকিস বেগম ও নেহার বেগম বলেন, আমরা ডিউটির জন্য ৬শত টাকা করে দিয়েছে। বান্ধাবাড়ি ইউনিয়নের সহকারী কমান্ডার আব্দুল জলিল এই টাকা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আব্দুল জলিলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ভ্যান ভাড়া মাস্টাররোলসহ বিভিন্œ খরচবাবদ আমরা কিছু টাকা নিয়েছি। এই টাকা থেকে আবার কিছু টাকা অফিসের খরচবাবদও দিতে হয়েছে।
এদিকে হিরণ ইউনিয়নের পোলসার গ্রামের ৮টি পূজা মন্ডপ ঘুরে শুধু ঠাকুর বাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপে ২জন আনসার সদস্যকে ডিউটি করতে দেখা গেছে। এই ৮টি মন্ডপে ৫২ জন আনসার সদস্য ডিউটি করার কথা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হিরণ ইউনিয়নের সহকারী কমান্ডার কল্পনা বিশ্বাস তপুর মাধ্যমে এই ৫২জন আনসারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কল্পনা বিশ্বাস তপু ভুয়া নাম দিয়ে আনসার সদস্যদের ডিউটির টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা করছেন।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এই ৮ টি মণ্ডপ ঘুরে ১ টি মণ্ডপে ১ জন বাদে কোন মণ্ডপে আনসারদের পাওয়া যায় নি। কয়েকটি মণ্ডপের ডিউটির সিসি চেক করে দেখা যায় অর্ধেক নাম ভূয়া। কয়েকজন কে ফোন দিলে তারা ডিউটির তালিকায় তাদেন নাম কিভাবে আসছে তারা জানেন না।
পোলসাইর ঠাকুরবাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মণ্ডপে ডিউটি তালিকা থেকে ইমরান নামে এক আনসার সদস্যের মোবাইলে কল দিলে তিনি বাওড়ে মাছ ধরতে গেছেন বলে জানা যায়। তিনি কোন আনসার সদস্য নন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে কল্পনা বিশ্বাস তপুর কাছে জানতে চাওয়া হলে সংবাদ প্রাকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের উত্তর হাজরাবাড়ী সার্বজনীন দূর্গামন্দিরের সাধারণ সম্পাদক জানান,
তাদের ওখানে ২ টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে ১২ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকলেও ২ শিফটে ৩ জন করে আনসার সদস্য ২ টি মণ্ডপে নামমাত্র ডিউটি করে আসছেন। পূজার ৪ দিন পার হলেও ডিউটির সিসিতে থাকা বাকি আনসার সদস্যদের দেখা পাওয়া যায় নি।
পূর্ব বান্ধাবাড়ি বটতলা সার্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনার সাথে জড়িত অংশু প্রতি বাড়ৈ জানান, সকালে আনসার সদস্যরা থাকে না। বিকেল ৩ টার পরে ২ জন আসে ডিউটির জন্য।

সরেজমিন উপজেলার পূজা মণ্ডপগুলোঘুরে দেখা যায় উপজেলা সদরের আশেপাশের মণ্ডলগুলো বাদে বাকি মণ্ডপগুলোতে এমন অনিয়ম দেখা যায়। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য ডিউটির সিসিতে নাম থাকলেও বাস্তবে দেখা মিলছে না আনসার সদস্যদের।
এ যেন কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থা।

উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার রুশান খান বলেন, দূর্গাপূজায় ডিউটির জন্য আনসার সদস্যদের নিয়োগ দিতে কোন কমান্ডার বা সহকারী কমান্ডার টাকা নিয়ে থাকলে ও ডিউটিতে অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে বিএসটিআই ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে ৫ লক্ষ্য টাকা জরিমানা

কোটালীপাড়ায় দুর্গাপূজার আনসার নিয়োগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ

আপডেট সময় : ১০:৪৬:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় দুর্গাপূজার আনসার নিয়োগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।

দুর্গাপূজায় নিয়োগপ্রাপ্ত আনসারদের কাছ থেকে ৩ থেকে ৬শত টাকা নেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন মণ্ডপে ডিউটিরত আনসার সদস্যরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে ডিউটির নামে ভূয়া তালিকা দিয়ে ডিউটির টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারাও চলছে।
জানাগেছে, এ বছর কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩শত ২২ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য ২ হাজার ৬৩ জন আনসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি কমান্ডারদের মাধ্যমে এসকল আনসার সদস্য নিয়োগ দিয়েছেন।
নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিজন আনসারকে ৫দিনের ডিউটির জন্য ২৮শত ৫০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার কার্যালয়সূত্রে জানাগেছে। এই টাকা প্রতিজন আনসারকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই প্রতি আনসারের কাছ থেকে অগ্রিম ৩থেকে ৬শত টাকা নেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ডিউটিরত আনসারগণ জানিয়েছেন।
উপজেলার পশ্চিম বান্ধাবাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের ডিউটিরত আনসার বিলকিস বেগম ও নেহার বেগম বলেন, আমরা ডিউটির জন্য ৬শত টাকা করে দিয়েছে। বান্ধাবাড়ি ইউনিয়নের সহকারী কমান্ডার আব্দুল জলিল এই টাকা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আব্দুল জলিলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ভ্যান ভাড়া মাস্টাররোলসহ বিভিন্œ খরচবাবদ আমরা কিছু টাকা নিয়েছি। এই টাকা থেকে আবার কিছু টাকা অফিসের খরচবাবদও দিতে হয়েছে।
এদিকে হিরণ ইউনিয়নের পোলসার গ্রামের ৮টি পূজা মন্ডপ ঘুরে শুধু ঠাকুর বাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপে ২জন আনসার সদস্যকে ডিউটি করতে দেখা গেছে। এই ৮টি মন্ডপে ৫২ জন আনসার সদস্য ডিউটি করার কথা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হিরণ ইউনিয়নের সহকারী কমান্ডার কল্পনা বিশ্বাস তপুর মাধ্যমে এই ৫২জন আনসারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কল্পনা বিশ্বাস তপু ভুয়া নাম দিয়ে আনসার সদস্যদের ডিউটির টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা করছেন।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এই ৮ টি মণ্ডপ ঘুরে ১ টি মণ্ডপে ১ জন বাদে কোন মণ্ডপে আনসারদের পাওয়া যায় নি। কয়েকটি মণ্ডপের ডিউটির সিসি চেক করে দেখা যায় অর্ধেক নাম ভূয়া। কয়েকজন কে ফোন দিলে তারা ডিউটির তালিকায় তাদেন নাম কিভাবে আসছে তারা জানেন না।
পোলসাইর ঠাকুরবাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মণ্ডপে ডিউটি তালিকা থেকে ইমরান নামে এক আনসার সদস্যের মোবাইলে কল দিলে তিনি বাওড়ে মাছ ধরতে গেছেন বলে জানা যায়। তিনি কোন আনসার সদস্য নন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে কল্পনা বিশ্বাস তপুর কাছে জানতে চাওয়া হলে সংবাদ প্রাকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের উত্তর হাজরাবাড়ী সার্বজনীন দূর্গামন্দিরের সাধারণ সম্পাদক জানান,
তাদের ওখানে ২ টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে ১২ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকলেও ২ শিফটে ৩ জন করে আনসার সদস্য ২ টি মণ্ডপে নামমাত্র ডিউটি করে আসছেন। পূজার ৪ দিন পার হলেও ডিউটির সিসিতে থাকা বাকি আনসার সদস্যদের দেখা পাওয়া যায় নি।
পূর্ব বান্ধাবাড়ি বটতলা সার্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনার সাথে জড়িত অংশু প্রতি বাড়ৈ জানান, সকালে আনসার সদস্যরা থাকে না। বিকেল ৩ টার পরে ২ জন আসে ডিউটির জন্য।

সরেজমিন উপজেলার পূজা মণ্ডপগুলোঘুরে দেখা যায় উপজেলা সদরের আশেপাশের মণ্ডলগুলো বাদে বাকি মণ্ডপগুলোতে এমন অনিয়ম দেখা যায়। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য ডিউটির সিসিতে নাম থাকলেও বাস্তবে দেখা মিলছে না আনসার সদস্যদের।
এ যেন কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থা।

উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার রুশান খান বলেন, দূর্গাপূজায় ডিউটির জন্য আনসার সদস্যদের নিয়োগ দিতে কোন কমান্ডার বা সহকারী কমান্ডার টাকা নিয়ে থাকলে ও ডিউটিতে অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।