ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজীপুরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার, স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা “নির্মাতা অমিতাভ রেজা আবার বিয়ে করলেন” “২০১৪, ’১৮ ও ’২৪–এর মতো নির্বাচন হলে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা: গোলাম পরওয়ার” ২৬ টুকরায় উদ্ধার হওয়া আশরাফুলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। লালমনিরহাটে ইএসডিও ও ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান রাজধানীতে অস্থিরতা: বাড্ডা-শাহজাদপুরে দুই বাসে আগুন, ধানমন্ডিতে ককটেল বিস্ফোরণ মোহাম্মদপুরে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুপারিশ ঐকমত্য কমিশনের সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাকিস্তানে ফের আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১২

আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম

  • NEWS21 staff Musabbir khan
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম

ইসলাম হলো আল্লাহর সামনে এবং তাঁর নির্দেশের সামনে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে দ্বিধাহীন চিত্তে নিখাদরূপে সমর্পণ করা। এত ত্যাগ ও কোরবানির পরও আল্লাহপাক ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন—‘হে ইবরাহিম, পুরোপুরিভাবে দ্বিধাহীন নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে সমর্পণ করো।’

ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কোনোরূপ প্রশ্ন উত্থাপন ব্যতিরেকেই জবাব দিলেন, ‘রাব্বুল আলামিন, দ্যুলোক ভূলোক সব কিছুর রব, সৃজন, পালন ও পরিপূর্ণতা দানকর্তার সামনে আমি সমর্পিত হলাম।’

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৩১)

অন্য এক আয়াতে ইসলামের স্বরূপ উন্মোচিত করে ইবরাহিম আলাইহিস সালামের মৌখিক ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই আমার চেহারা ফিরিয়ে নিলাম সেই মহান সত্তার প্রতি—যিনি আসমানসমূহ এবং এই জমিন সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।

অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে একমাত্র তাঁরই প্রতি আমি মনোনিবেশ করলাম। আর আমি তো নই মুশরিকদের মধ্যে।’
(সুরা : আনআম, আয়াত : ৭৯)

মানুষের স্বভাব ও মেজাজ সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া তো আর কেউ জানে না। আর কারো নেই মনুষ্য জাতির সম্যক জ্ঞান ও উপলব্ধি। একমাত্র তাঁরই আছে পরিপূর্ণ অবহিতি।
মানুষের স্বভাব চাহিদার অনুকূল করে আল্লাহ পাক বিধান দিয়েছেন ইসলামের। এতে মানব স্বভাবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নেই কোনো কিছু। মানব চাহিদার আনুকূল্যের প্রতি ইঙ্গিত করে ইরশাদ হচ্ছে—‘আল্লাহ প্রদত্ত স্বভাব, যার ওপর তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে।’
(সুরা : রুম, আয়াত : ৩০)

আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম
আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম

অন্য এক স্থানে একে ‘আল্লাহর রং’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আল্লাহর রং। আর রং হিসেবে আল্লাহর চেয়ে বেশি সুন্দর রং আর কার হবে?’

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৩৮)

রঙে যদি কোনো কিছু চুবানো হয়, দ্রবণসিক্ত হয়, তখন যেমন সুতায় সুতায় সেই রং মিশে যায়, চুল পরিমাণ জায়গাও এর বাইরে থাকে না; তেমনি মানুষের অঙ্গে অঙ্গে, শিরায় শিরায়, পরতে পরতে স্বভাব আশ্রিত এই দ্বিনের রং এঁটে যায়, ছড়িয়ে যায়, মিশে যায়। জীবনের কোনো কিছু এর বাইরে থাকে না। স্বভাব আর দ্বিন একাকার হয়ে যায়।

ইসলামে মানব স্বভাবের বাইরে কোনো কিছু কারো অনুভব হলে তা হবে উপলব্ধির বিভ্রম, কোনো কিছু দেখা গেলে তা হবে দৃষ্টির বিভ্রম এবং এর স্বভাব রোগাক্রান্ত বলে হবে বিবেচ্য। ধরা হবে, স্বভাব বিচ্যুতি ঘটেছে তার। যেমন—কোনো কোনো রোগে মানুষের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়, মিষ্টিও তখন তিতা মনে হয়; এর অর্থ এই নয় যে মিষ্টির মিষ্টতা নষ্ট হয়ে গেছে, বরং এটি এ কথারই প্রমাণ দেয় যে সে রোগাক্রান্ত, সে অসুস্থ। সুতরাং তার চিকিৎসার দরকার সবার আগে। তাকে প্রথমে সুস্থ, নীরোগ হতে হবে। তবেই এই অবস্থা থেকে তার পরিত্রাণ ঘটবে। তেমনি একজনের স্বভাব বিকৃতি দেখা দিলেই তার কাছে ইসলামকে অস্বাভাবিক মনে হবে। মূল সত্যে এখনো পৌঁছতে পারেনি সে। কারণ চরম সত্য আর ইসলাম একই জিনিস। সত্যের পরম স্তরে পৌঁছতে পারলে ইসলাম ও স্বভাব একাকার হয়ে যায়। কোনো দ্বন্দ্ব আর ব্যতিক্রম থাকে না কিছুতেই।

বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিজ্ঞান যখন সত্যের সন্ধান পায়, সত্যের স্তরে পৌঁছতে সক্ষম হয়, সেখানে সে ইসলামকে পায়, ইসলামকেই দেখে। সংঘাত ও সংঘর্ষের থাকে না কিছুই। কারণ সত্য সর্বদাই একমেবাদ্বিতীয়ম, দুসরা নেই এখানে। সংঘর্ষ সেখানেই হয় যেখানে মানব আবিষ্কৃত বিজ্ঞান ও দর্শন সত্যের কাছে পৌঁছতে না পারে। মানব স্বভাবের পূর্ণতায় বিজ্ঞান ও ইসলাম একাকার হয়ে যায়। স্বভাব রঞ্জনে রঞ্জিত সেখানে একই রঙে। তাই সবাইকেই এই দ্বিধাহীন সমর্পণের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, আল্লাহর পথই তো পথ আর আমরা আদিষ্ট হয়েছি সমর্পিত হতে রাব্বুল আলামিনের হুজুরে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৭১)

এই আত্মসমর্পণ, এই আত্মনিবেদনই তো হেদায়েত। ইরশাদ হয়েছে, এরা সমর্পিত ও বিসর্জিত হলে তবেই হেদায়েত পেল। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ২০)

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার, স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা

আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম

আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম হলো আল্লাহর সামনে এবং তাঁর নির্দেশের সামনে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে দ্বিধাহীন চিত্তে নিখাদরূপে সমর্পণ করা। এত ত্যাগ ও কোরবানির পরও আল্লাহপাক ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন—‘হে ইবরাহিম, পুরোপুরিভাবে দ্বিধাহীন নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে সমর্পণ করো।’

ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কোনোরূপ প্রশ্ন উত্থাপন ব্যতিরেকেই জবাব দিলেন, ‘রাব্বুল আলামিন, দ্যুলোক ভূলোক সব কিছুর রব, সৃজন, পালন ও পরিপূর্ণতা দানকর্তার সামনে আমি সমর্পিত হলাম।’

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৩১)

অন্য এক আয়াতে ইসলামের স্বরূপ উন্মোচিত করে ইবরাহিম আলাইহিস সালামের মৌখিক ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই আমার চেহারা ফিরিয়ে নিলাম সেই মহান সত্তার প্রতি—যিনি আসমানসমূহ এবং এই জমিন সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।

অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে একমাত্র তাঁরই প্রতি আমি মনোনিবেশ করলাম। আর আমি তো নই মুশরিকদের মধ্যে।’
(সুরা : আনআম, আয়াত : ৭৯)

মানুষের স্বভাব ও মেজাজ সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া তো আর কেউ জানে না। আর কারো নেই মনুষ্য জাতির সম্যক জ্ঞান ও উপলব্ধি। একমাত্র তাঁরই আছে পরিপূর্ণ অবহিতি।
মানুষের স্বভাব চাহিদার অনুকূল করে আল্লাহ পাক বিধান দিয়েছেন ইসলামের। এতে মানব স্বভাবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নেই কোনো কিছু। মানব চাহিদার আনুকূল্যের প্রতি ইঙ্গিত করে ইরশাদ হচ্ছে—‘আল্লাহ প্রদত্ত স্বভাব, যার ওপর তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে।’
(সুরা : রুম, আয়াত : ৩০)

আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম
আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত হেদায়েতের পথে ইসলাম

অন্য এক স্থানে একে ‘আল্লাহর রং’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আল্লাহর রং। আর রং হিসেবে আল্লাহর চেয়ে বেশি সুন্দর রং আর কার হবে?’

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৩৮)

রঙে যদি কোনো কিছু চুবানো হয়, দ্রবণসিক্ত হয়, তখন যেমন সুতায় সুতায় সেই রং মিশে যায়, চুল পরিমাণ জায়গাও এর বাইরে থাকে না; তেমনি মানুষের অঙ্গে অঙ্গে, শিরায় শিরায়, পরতে পরতে স্বভাব আশ্রিত এই দ্বিনের রং এঁটে যায়, ছড়িয়ে যায়, মিশে যায়। জীবনের কোনো কিছু এর বাইরে থাকে না। স্বভাব আর দ্বিন একাকার হয়ে যায়।

ইসলামে মানব স্বভাবের বাইরে কোনো কিছু কারো অনুভব হলে তা হবে উপলব্ধির বিভ্রম, কোনো কিছু দেখা গেলে তা হবে দৃষ্টির বিভ্রম এবং এর স্বভাব রোগাক্রান্ত বলে হবে বিবেচ্য। ধরা হবে, স্বভাব বিচ্যুতি ঘটেছে তার। যেমন—কোনো কোনো রোগে মানুষের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়, মিষ্টিও তখন তিতা মনে হয়; এর অর্থ এই নয় যে মিষ্টির মিষ্টতা নষ্ট হয়ে গেছে, বরং এটি এ কথারই প্রমাণ দেয় যে সে রোগাক্রান্ত, সে অসুস্থ। সুতরাং তার চিকিৎসার দরকার সবার আগে। তাকে প্রথমে সুস্থ, নীরোগ হতে হবে। তবেই এই অবস্থা থেকে তার পরিত্রাণ ঘটবে। তেমনি একজনের স্বভাব বিকৃতি দেখা দিলেই তার কাছে ইসলামকে অস্বাভাবিক মনে হবে। মূল সত্যে এখনো পৌঁছতে পারেনি সে। কারণ চরম সত্য আর ইসলাম একই জিনিস। সত্যের পরম স্তরে পৌঁছতে পারলে ইসলাম ও স্বভাব একাকার হয়ে যায়। কোনো দ্বন্দ্ব আর ব্যতিক্রম থাকে না কিছুতেই।

বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিজ্ঞান যখন সত্যের সন্ধান পায়, সত্যের স্তরে পৌঁছতে সক্ষম হয়, সেখানে সে ইসলামকে পায়, ইসলামকেই দেখে। সংঘাত ও সংঘর্ষের থাকে না কিছুই। কারণ সত্য সর্বদাই একমেবাদ্বিতীয়ম, দুসরা নেই এখানে। সংঘর্ষ সেখানেই হয় যেখানে মানব আবিষ্কৃত বিজ্ঞান ও দর্শন সত্যের কাছে পৌঁছতে না পারে। মানব স্বভাবের পূর্ণতায় বিজ্ঞান ও ইসলাম একাকার হয়ে যায়। স্বভাব রঞ্জনে রঞ্জিত সেখানে একই রঙে। তাই সবাইকেই এই দ্বিধাহীন সমর্পণের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, আল্লাহর পথই তো পথ আর আমরা আদিষ্ট হয়েছি সমর্পিত হতে রাব্বুল আলামিনের হুজুরে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৭১)

এই আত্মসমর্পণ, এই আত্মনিবেদনই তো হেদায়েত। ইরশাদ হয়েছে, এরা সমর্পিত ও বিসর্জিত হলে তবেই হেদায়েত পেল। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ২০)