চলন্ত ট্রেনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে পাঁচ তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলা করেন।
রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সোমবার দুপুরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনসহ নয়জনকে আসামি করে লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলা হয়। গতকাল রোববার বিকেলে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে ঘটনাটি ঘটে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। দুর্গাপূজার ছুটি শেষে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে স্বামীসহ ট্রেনে ওঠেন ওই শিক্ষার্থী। ট্রেনটি হবিগঞ্জের মাধবপুরের মনতলা রেলস্টেশন এলাকায় পৌঁছানোর পর কয়েকজন তরুণ এসে তাঁদের উদ্দেশে বিভিন্ন ধরনের অশালীন কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। তাঁদের আচরণে আপত্তি জানালে গালাগাল ও উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। একপর্যায়ে বিকেল পাঁচটার দিকে ট্রেনটি কুমিল্লা রেলস্টেশনের কাছাকাছি এলে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর স্বামীও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ট্রেনে ওঠার পর কিছু তরুণ অশালীন আচরণ শুরু করেন। বাধা দিলে তাঁরা উল্টো হুমকি দেন এবং তাঁর স্ত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। ট্রেনটি কুমিল্লা রেলস্টেশনের কাছে পৌঁছালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্টেশনে অবস্থান নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রেলওয়ে পুলিশ ও কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার পুলিশের সহায়তায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
আটক তরুণেরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার তানভীর হোসেন, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ফাহিম হাসান, কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার তাহমনি আহাম্মেদ, চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার মো. নাঈম উদ্দিন ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মো. ফাহিম হোসেন। এ ছাড়া মামলায় তাহাসিন আহম্মেদ, মো. নাঈম উদ্দিন, ফাহিম হোসেন ও মো. নাজমুল নামে আরও চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা পলাতক।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছিলাম, ট্রেনে কিছু ছেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে ইভ টিজিং করছে। ঘটনাটি শুনে আমরা স্টেশনে যাই। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সহায়তায় আমরা পাঁচজনকে আটক করি। বিষয়টি যেহেতু ট্রেনে ঘটেছে, তাই আমরা লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলা করার জন্য বলেছি।’
লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি বলেন, অভিযোগের পর মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।