ঢাকা ০৮:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাড়ি চালিয়ে গির্জায় ঢুকে গুলি চালায় বন্দুকধারী, আগুন দেয় ভবনে

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৪১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে একটি গির্জায় বন্দুকধারীর গুলি এবং ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও আটজন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বন্দুকধারী গাড়ি চালিয়ে গির্জাটির ভেতরে ঢুকে পড়ে সেখানে গুলি চালায় এবং ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর-বিবিসি  

কর্মকর্তারা বলছেন, চার্চ অব জিসাস ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেইন্টস গির্জাটির অবস্থান ডেট্রয়েট থেকে একশ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমের একটি শহরে। হামলাটি হয়েছে রোববারের প্রার্থনার সময় যেখানে কয়েকশ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। 

সন্দেহভাজন হামলাকারী মিশিগানের বার্টনের থমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড। তিনি গির্জারই কার পার্ক এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার তদন্ত করছে। তারা বলছেন, হামলার উদ্দেশ্য এখনো তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। নিহতদের মধ্যে দুজন গুলিতে আহত হয়ে মারা গেছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে সেখানকার পুলিশ প্রধান উইলিয়াম রেনেই জানিয়েছেন। তিনি জানান, গির্জাতে আগুন ধরে গেলে তাতে গির্জার ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং কিছু লোক এখনো নিখোঁজ আছে।

এর আগে তিনি বলেছিলেন, বন্দুকধারী যখন গাড়ি চালিয়ে ভবনে ভেতরে ঢুকে পড়ে তখন গির্জার প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছিলেন কয়েক শত মানুষ। এরপর এক অ্যাসল্ট স্টাইলের রাইফেল দিয়ে তিনি গুলি চালাতে শুরু করেন। ‘গির্জার ভেতরেই কয়েকজনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়,’ বলছিলেন পুলিশ প্রধান।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জানিয়ে তিনি বলেন গুলিবিনিময়ের পর হামলাকারীকে নিরস্ত্র করা হয়। গোলাগুলির আট মিনিট পর ওই ব্যক্তি মারা যায়। ‘আমরা এখনো চেষ্টা করছি কখন হামলা শুরু হলো এবং গুলি কখন বন্ধ হলো তা নির্ধারণের জন্য। আমাদের বিশ্বাস সন্দেহভাজন ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবেই এটি করেছে,’ বলেছেন তিনি।

ঘটনার পর কাজ করছে পুলিশ

ঘটনার পর কাজ করছে পুলিশ

হামলার মোটিভ বোঝার জন্য তদন্তকারীরা সন্দেহভাজনক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি ও তার ফোন রেকর্ডস পরীক্ষা করছেন। এফবিআই এই তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা ইতোমধ্যেই ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, বোমা বিশেষজ্ঞসহ অন্যদের মোতায়েন করেছে বলে এফবিআইয়ের ডেট্রয়েট ফিল্ড অফিস জানিয়েছে।

মিশিগান রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র কিম ভেট্টের সাংবাদিকদের বলেছেন, আরও কয়েকটি জায়গায় বোমার হুমকির বিষয়টি নিয়েও কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। ‘সেসব জায়গা আমরা ক্লিয়ার করেছি,’ বলেছেন তিনি। ওদিকে গির্জার পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে প্রার্থনা চলাকালে বন্দুকধারীর গুলি চালানোর খবর নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ‘বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা শান্তি ও সবার সুস্থতা কামনা করি।’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, তদন্তে সহায়তার জন্য একশ এফবিআই এজেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন গির্জায় গুলির বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি এফবিআইয়ের নেতৃত্বে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে তিনি একে ‘আমেরিকায় আবারো খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিত হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি গির্জায় প্রার্থনার সময় হামলাকে হৃদয়বিদারক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমের ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘যেকোনো জায়গায় সহিংসতা, বিশেষ করে প্রার্থনাস্থলে- অগ্রহণযোগ্য’।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর মিট রমনি দেশটির অন্যতম সুপরিচিত মরমন রাজনীতিক। তিনি এই ঘটনাকে ট্রাজেডি হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আমার ভাই ও বোনেরা এবং তাদের গির্জা সহিংসতার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।’

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাড়ি চালিয়ে গির্জায় ঢুকে গুলি চালায় বন্দুকধারী, আগুন দেয় ভবনে

আপডেট সময় : ০২:৪১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে একটি গির্জায় বন্দুকধারীর গুলি এবং ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও আটজন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বন্দুকধারী গাড়ি চালিয়ে গির্জাটির ভেতরে ঢুকে পড়ে সেখানে গুলি চালায় এবং ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর-বিবিসি  

কর্মকর্তারা বলছেন, চার্চ অব জিসাস ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেইন্টস গির্জাটির অবস্থান ডেট্রয়েট থেকে একশ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমের একটি শহরে। হামলাটি হয়েছে রোববারের প্রার্থনার সময় যেখানে কয়েকশ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। 

সন্দেহভাজন হামলাকারী মিশিগানের বার্টনের থমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড। তিনি গির্জারই কার পার্ক এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার তদন্ত করছে। তারা বলছেন, হামলার উদ্দেশ্য এখনো তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। নিহতদের মধ্যে দুজন গুলিতে আহত হয়ে মারা গেছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে সেখানকার পুলিশ প্রধান উইলিয়াম রেনেই জানিয়েছেন। তিনি জানান, গির্জাতে আগুন ধরে গেলে তাতে গির্জার ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং কিছু লোক এখনো নিখোঁজ আছে।

এর আগে তিনি বলেছিলেন, বন্দুকধারী যখন গাড়ি চালিয়ে ভবনে ভেতরে ঢুকে পড়ে তখন গির্জার প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছিলেন কয়েক শত মানুষ। এরপর এক অ্যাসল্ট স্টাইলের রাইফেল দিয়ে তিনি গুলি চালাতে শুরু করেন। ‘গির্জার ভেতরেই কয়েকজনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়,’ বলছিলেন পুলিশ প্রধান।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জানিয়ে তিনি বলেন গুলিবিনিময়ের পর হামলাকারীকে নিরস্ত্র করা হয়। গোলাগুলির আট মিনিট পর ওই ব্যক্তি মারা যায়। ‘আমরা এখনো চেষ্টা করছি কখন হামলা শুরু হলো এবং গুলি কখন বন্ধ হলো তা নির্ধারণের জন্য। আমাদের বিশ্বাস সন্দেহভাজন ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবেই এটি করেছে,’ বলেছেন তিনি।

ঘটনার পর কাজ করছে পুলিশ

ঘটনার পর কাজ করছে পুলিশ

হামলার মোটিভ বোঝার জন্য তদন্তকারীরা সন্দেহভাজনক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি ও তার ফোন রেকর্ডস পরীক্ষা করছেন। এফবিআই এই তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা ইতোমধ্যেই ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, বোমা বিশেষজ্ঞসহ অন্যদের মোতায়েন করেছে বলে এফবিআইয়ের ডেট্রয়েট ফিল্ড অফিস জানিয়েছে।

মিশিগান রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র কিম ভেট্টের সাংবাদিকদের বলেছেন, আরও কয়েকটি জায়গায় বোমার হুমকির বিষয়টি নিয়েও কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। ‘সেসব জায়গা আমরা ক্লিয়ার করেছি,’ বলেছেন তিনি। ওদিকে গির্জার পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে প্রার্থনা চলাকালে বন্দুকধারীর গুলি চালানোর খবর নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ‘বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা শান্তি ও সবার সুস্থতা কামনা করি।’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, তদন্তে সহায়তার জন্য একশ এফবিআই এজেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন গির্জায় গুলির বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি এফবিআইয়ের নেতৃত্বে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে তিনি একে ‘আমেরিকায় আবারো খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিত হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি গির্জায় প্রার্থনার সময় হামলাকে হৃদয়বিদারক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমের ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘যেকোনো জায়গায় সহিংসতা, বিশেষ করে প্রার্থনাস্থলে- অগ্রহণযোগ্য’।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর মিট রমনি দেশটির অন্যতম সুপরিচিত মরমন রাজনীতিক। তিনি এই ঘটনাকে ট্রাজেডি হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আমার ভাই ও বোনেরা এবং তাদের গির্জা সহিংসতার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।’