ঢাকা ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মক্কা ও মদিনায় জানাজার নামাজ

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

ক্কা ও মদিনায় প্রতিদিনই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ জন্য অবশ্যই জানাজার নিয়ম জানা উচিত।
জানাজার নামাজের ফরজ তিনটি: ১. নিয়ত করা ২. দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা ৩. চার তাকবির বলা।
জানাজার নামাজের সুন্নত তিনটি: ১. প্রথম তাকবিরের পর সানা, ২. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ শরিফ পাঠ করা। ৩. তারপর তৃতীয় তাকবিরের পর দোয়া পড়বেন। এর পর চতুর্থ তাকবির দিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।

সংক্ষেপে জানাজার নিয়ম হলো মৃত ব্যক্তিকে সামনে রেখে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য সবাই একত্র হয়ে দাঁড়াবেন। চারবার ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবির বলবেন।
জানাজার নিয়ত : আরবিতে নিয়ত জানা না থাকলে মনে মনে এ নিয়ত করবেন, ‘আমি জানাজার ফরজে কেফায়া নামাজ চার তাকবিরসহ এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আদায়ের নিয়ত করছি।’

এর পর কান পর্যন্ত হাত ওঠাবে এবং তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবর) বলতে হবে। এরপর সানা পড়তে হবে–
উচ্চারণ : ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, সকল প্রশংসা আপনার। আপনি সব ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতি থেকে পবিত্র। আপনার নাম মঙ্গল ও বরকতপূর্ণ, আপনার মহত্ত্ব অতি বিরাট, আপনার প্রশংসা অতি মহত্ত্বপূর্ণ এবং একমাত্র আপনি ছাড়া আর কোনো প্রভু নেই।’
এর পর (দ্বিতীয়) তাকবির বলে দরুদ পাঠ করবেন। এই তাকবিরে হাত ওঠাবেন না–

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা-আ-লি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা-আ-লি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা-আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা-আ-লি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করুন, যেভাবে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত মহিমান্বিত। হে আল্লাহ, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর বরকত দান করুন, যেভাবে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর বরকত দান করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত।’ (নাসাঈ ১২৯১)
জানাজার দোয়া : তারপর তৃতীয় তাকবির বলে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করবেন। তখনও হাত ওঠাবেন না। তারপর চতুর্থ তাকবির বলবেন। তখনও হাত ওঠাবেন না। এর পর ডান ও বাঁ দিকে সালাম ফেরাবেন।

ইমাম তাকবির উচ্চৈঃস্বরে বলবেন এবং বাকি দোয়া-দরুদ অনুচ্চ স্বরে পড়বেন। মুক্তাদিরা সবই অনুচ্চ স্বরে তাকবির ও দোয়া-দরুদ পড়বেন।
মৃত ব্যক্তি যদি বালেগ পুরুষ বা নারী হন, তবে এই দোয়া পড়া–

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাগফির লি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়েবিনা ওয়া সগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উনছানা, আল্লাহুম্মা মান আহয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ইমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আজরাহু ওয়া আলা তুদিল্লানা বা-দাহু।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত ও মৃতদের, উপস্থিত এবং গায়েবদের, ছোট ও বড়দের এবং আমাদের নারী-পুরুষ সবাইকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাকে জীবিত রাখবেন, তাকে ইসলামের ওপরই জীবিত রাখুন। যাকে মৃত্যু দান করবেন, তাকে ইমানের সঙ্গেই মৃত্যু দিন। হে আল্লাহ, এর সওয়াব থেকে আমাদের বঞ্চিত করবেন না এবং এর পর আমাদের পথভ্রষ্ট করবেন না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২০১, তিরমিজি, হাদিস : ১০২৪)

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

মক্কা ও মদিনায় জানাজার নামাজ

আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ক্কা ও মদিনায় প্রতিদিনই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ জন্য অবশ্যই জানাজার নিয়ম জানা উচিত।
জানাজার নামাজের ফরজ তিনটি: ১. নিয়ত করা ২. দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা ৩. চার তাকবির বলা।
জানাজার নামাজের সুন্নত তিনটি: ১. প্রথম তাকবিরের পর সানা, ২. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ শরিফ পাঠ করা। ৩. তারপর তৃতীয় তাকবিরের পর দোয়া পড়বেন। এর পর চতুর্থ তাকবির দিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।

সংক্ষেপে জানাজার নিয়ম হলো মৃত ব্যক্তিকে সামনে রেখে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য সবাই একত্র হয়ে দাঁড়াবেন। চারবার ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবির বলবেন।
জানাজার নিয়ত : আরবিতে নিয়ত জানা না থাকলে মনে মনে এ নিয়ত করবেন, ‘আমি জানাজার ফরজে কেফায়া নামাজ চার তাকবিরসহ এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আদায়ের নিয়ত করছি।’

এর পর কান পর্যন্ত হাত ওঠাবে এবং তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবর) বলতে হবে। এরপর সানা পড়তে হবে–
উচ্চারণ : ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, সকল প্রশংসা আপনার। আপনি সব ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতি থেকে পবিত্র। আপনার নাম মঙ্গল ও বরকতপূর্ণ, আপনার মহত্ত্ব অতি বিরাট, আপনার প্রশংসা অতি মহত্ত্বপূর্ণ এবং একমাত্র আপনি ছাড়া আর কোনো প্রভু নেই।’
এর পর (দ্বিতীয়) তাকবির বলে দরুদ পাঠ করবেন। এই তাকবিরে হাত ওঠাবেন না–

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা-আ-লি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা-আ-লি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা-আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা-আ-লি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করুন, যেভাবে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত মহিমান্বিত। হে আল্লাহ, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর বরকত দান করুন, যেভাবে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর বরকত দান করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত।’ (নাসাঈ ১২৯১)
জানাজার দোয়া : তারপর তৃতীয় তাকবির বলে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করবেন। তখনও হাত ওঠাবেন না। তারপর চতুর্থ তাকবির বলবেন। তখনও হাত ওঠাবেন না। এর পর ডান ও বাঁ দিকে সালাম ফেরাবেন।

ইমাম তাকবির উচ্চৈঃস্বরে বলবেন এবং বাকি দোয়া-দরুদ অনুচ্চ স্বরে পড়বেন। মুক্তাদিরা সবই অনুচ্চ স্বরে তাকবির ও দোয়া-দরুদ পড়বেন।
মৃত ব্যক্তি যদি বালেগ পুরুষ বা নারী হন, তবে এই দোয়া পড়া–

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাগফির লি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়েবিনা ওয়া সগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উনছানা, আল্লাহুম্মা মান আহয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ইমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আজরাহু ওয়া আলা তুদিল্লানা বা-দাহু।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত ও মৃতদের, উপস্থিত এবং গায়েবদের, ছোট ও বড়দের এবং আমাদের নারী-পুরুষ সবাইকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাকে জীবিত রাখবেন, তাকে ইসলামের ওপরই জীবিত রাখুন। যাকে মৃত্যু দান করবেন, তাকে ইমানের সঙ্গেই মৃত্যু দিন। হে আল্লাহ, এর সওয়াব থেকে আমাদের বঞ্চিত করবেন না এবং এর পর আমাদের পথভ্রষ্ট করবেন না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২০১, তিরমিজি, হাদিস : ১০২৪)