ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এটি গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এবার জিপিএ–৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। বোর্ডে শতভাগ ফেলের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এবার এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের ৭৯ হাজার ২৩৭ শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। পরীক্ষায় অংশ নেন ৭৫ হাজার ৮৫৫ জন। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছেন ৩৯ হাজার ৯৬ জন। পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৬৮৪ শিক্ষার্থী। শাখাভিত্তিক পাসের হার সবচেয়ে কম ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত চার বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে জিপিএ-৫ কম পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এবার ২ হাজার ৬৪৮ জন জিপিএ–৫ পেলেও ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৮২৬ জন, ২০২৩ সালে ৩ হাজার ২৪৪ জন এবং ২০২২ সালে ৫ হাজার ২৮ শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন। এ বছর পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ হলেও গত বছর ছিল ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ। ২০২৩ সালে ৭০ দশমিক ৪৪ এবং ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
৩ কলেজে শতভাগ পাস
ময়মনসিংহ বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় তিনটি কলেজের সব শিক্ষার্থী পাস করেছেন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ, জেলার ঈশ্বরগঞ্জের চরজিথর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আবদুল জব্বার রাবেয়া খাতুন গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ।
১৫ কলেজের কেউ পাস করেননি
এবার এই বোর্ডের ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেননি। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ৭টি, জামালপুরের ২টি, শেরপুরের ২টি ও নেত্রকোনার ৪টি কলেজ আছে। এই ১৫টি কলেজ থেকে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন ১৩২ জন। এর মধ্যে ১০ জনের বেশি পরীক্ষার্থী ছিল চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থী ২ থেকে ৯–এর ঘরে ছিল।
বোর্ড চেয়ারম্যানের কথা
ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পাসের হার কম হওয়ার নানা কারণ আছে। এর মধ্যে আছে মনোযোগের অভাব, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার অভাব, ভালো মানের শিক্ষকের অভাব ইত্যাদি। বিশেষ করে ইংরেজি, আইসিটি, হিসাববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের দক্ষ শিক্ষকের অভাব আছে। এ ছাড়া আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, চরাঞ্চল, হাওর অঞ্চল ও সীমান্ত অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ–সুবিধার ঘাটতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষার বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ থেকে উত্তরণ ঘটানোর চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান।