সৌদি আরবের তেল-বহির্ভূত বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে বলে জানিয়েছে রিয়াদ ব্যাংকের পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই)। আজ রোববার প্রকাশিত এক সমীক্ষার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বাড়তি উৎপাদন এ প্রবৃদ্ধিকে চালিত করেছে বলে সমীক্ষায় জানা যায়।
পিএমআই সূচক থেকে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে সূচকের মান ৫৭.৮ এ পৌঁছেছে, যা আগস্ট মাসে ছিল ৫৬.৪। মার্চ মাসের পর থেকে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে। পিএমআই স্কোর ৫০-এর ওপরে থাকা মানে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।
শক্তিশালী বাজার, নতুন গ্রাহক পাওয়া এবং প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যস্ততা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের কাছ থেকে কাজ পাওয়ার পরিমাণ টানা দ্বিতীয় মাসের মতো বেড়েছে। শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাহিদার কারণে নতুন অর্ডারের উপ-সূচক আগস্টের ৬০.১ থেকে বেড়ে সেপ্টেম্বরে ৬৩.৩-এ দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে উৎপাদন প্রবৃদ্ধিও ফেব্রুয়ারি থেকে দ্রুততম হারে বেড়েছে। এর প্রভাবে সেপ্টেম্বরে নিয়োগের হারও বেড়ে যায়। চাহিদা বৃদ্ধি এবং কাজের চাপ সামলানোর জন্য কোম্পানিগুলো লোক নিয়োগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
রিয়াদ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ নায়েফ আল-গাইথ বলেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসের সমীক্ষাটি বেসরকারি খাতের শক্তিশালী রূপকে তুলে ধরেছে, যা একদিকে খরচের চাপ সামলাচ্ছে, অন্যদিকে দৃঢ় চাহিদা এবং নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে।’
বাজেট-পূর্ব বিবৃতিতে ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে সৌদি আরব সরকার। এর মধ্যে তেল-বহির্ভূত খাতের প্রবৃদ্ধি আনুমানিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে, যা মূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান বাড়ার কারণে সম্ভব হবে।
ভবিষ্যতের ব্যবসা নিয়ে আশা বেড়েছে কোম্পানিগুলোর। ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং সরকারের আসন্ন বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পগুলো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী অবস্থানে আছে তারা।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া তেল-বহির্ভূত বেসরকারি কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনে সফলতা এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) অঞ্চল থেকে গ্রাহক বাড়তে থাকায় এ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
এই পিএমআই জরিপের তথ্য ম্যানুফ্যাকচারিং, নির্মাণ, পাইকারি, খুচরা এবং পরিষেবা খাত জুড়ে প্রায় ৪০০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের এই পিএমআই স্কোর আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়েও এগিয়ে গেছে। এই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কুয়েতের স্কোর ছিল যথাক্রমে ৫৪.২ এবং ৫২.২।