শিরোনাম
যশোররে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ ফরিদপুরে চুরি করতে গিয়ে চিনে ফেলায় হত্যা, অতঃপর আটক ৩ পত্নীতলায় দুই ভুয়া চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকের জেলা জরিমানা নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন নওগাঁয় বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা কুষ্টিয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ১০০ বোতল ফেনসিডিল সহ ০২ জন গ্রেফতার কক্সবাজারে খুলনার টিপু হত্যায় জড়িত তিনজন সিলেট থেকে গ্রেফতার কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদশী পিস্তল গুলিসহ  আটক ২ জীবনের ছুটে যাওয়া নামাজ কীভাবে আদায় করব? নতুন মূল্য নির্ধারণ: ১২ কেজির এলপিজি’র দাম ১৪৫৯ টাকা হেলমান্দের পথে-প্রান্তরে হাজার বছরের ঐতিহ্য বগুড়ায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দিনাজপুরে জিংক সমৃদ্ধ ধান সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কর্মশালা গাজায় যুদ্ধ করতে চায় না অনেক ইসরায়েলি সেনা ঘণ্টায় ২০০০ ডলার দিয়ে দমকলকর্মী ভাড়া করছে লস অ্যাঞ্জেলেসের ধনীরা চট্টগ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও তার ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী পাকিস্তান সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর গ্রেফতার জালিমের করুণ পরিণতি
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

যেভাবে কাটাব পবিত্র জুমাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

আমরা প্রায়ই আমাদের দৈনন্দিন কাজ এবং সময়সীমার মধ্যে এতটাই জড়িয়ে যাই যে শুক্রবারের পবিত্রতাকে অবহেলা করি। এ ছাড়া আসন্ন সপ্তাহান্তের উত্তেজনায় মেতে থাকি, ফলে শুক্রবারের বরকতপূর্ণ সময়টিকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে ভুলে যাই।

শুক্রবার বা জুমার দিন হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয়তম দিন, যা অসংখ্য ফজিলত ও বরকতে পূর্ণ। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জুমার দিন শুরু হয় বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর এবং শেষ হয় শুক্রবার মাগরিবের সময়। তাই মুসলমানদের উচিত এই দিনের ইবাদত আগের রাত থেকেই শুরু করা।

জুমার দিনের গুরুত্ব রাসুল (সা.)-এর নিম্নোক্ত বাণীতে স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে : ‘সবচেয়ে উত্তম দিন যেদিন সূর্য উদিত হয় তাহলো শুক্রবার। এই দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিন তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন এবং এই দিন তিনি তা থেকে বের হয়ে আসেন। এ ছাড়া কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।’ (মুসলিম)

কীভাবে এই পবিত্র দিনটি যথাযথভাবে কাটাবেন?

নিম্নলিখিত কয়েকটি পরামর্শ অনুসরণ করে আপনি আপনার শুক্রবারকে অর্থবহ করে তুলতে পারেন :

১. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা

শুক্রবার কোনো সাধারণ দিন নয়, তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং প্রস্তুতিতে বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। এই দিনে প্রত্যেক মুসলিমের উচিত গোসল করা, নখ কাটা, দাঁত ব্রাশ করা, পরিষ্কার ও সুন্দর পোশাক পরা এবং অ্যালকোহলমুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করা। বিশেষত জুমার নামাজের আগে এই কাজগুলো করা উচিত।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন জুমার নামাজে উপস্থিত হবে, তখন তাকে গোসল করা উচিত।’

(বুখারি, হাদিস : ২১৩৩)

২. খুতবা শোনা এবং জামাতে জুমার নামাজ আদায় করা

পুরুষদের জন্য এটি বাধ্যতামূলক যে তারা জুমার দিন তাদের পার্থিব কাজকর্ম তাড়াতাড়ি শেষ করে মসজিদে যথাসময়ে পৌঁছবে। জুমার খুতবা শোনা সুন্নাহ এবং তা শোনা প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি জুমার দিনে ফেরেশতারা মসজিদের প্রতিটি দরজায় অবস্থান নেয় এবং আগতদের নাম সময় অনুযায়ী লিখে রাখে। ইমাম যখন মিম্বারে বসেন, তখন তারা তাদের নথি বন্ধ করে খুতবা শুনতে বসে।’ (বুখারি)

এছাড়া, প্রত্যেক মুসলিম পুরুষের জন্য জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা বাধ্যতামূলক। কোরআনে আল্লাহ তাআলা  বলেছেন, ‘হে ইমানদারগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ছেড়ে দাও। এটি তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯)

৩. অধিক পরিমাণে দোয়া করা

জুমার দিনে দোয়া কবুলের বিশেষ সময় রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যখন কোনো মুসলিম দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা তাকে প্রদান করেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)

বিশেষত আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া কবুলের সময়। তাই দুপুর বা আসরের পর সময় বের করে নির্জনে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজনগুলো তুলে ধরুন এবং আল্লাহর কাছ থেকে আপনার প্রার্থনাগুলো কবুল করানোর এই সুযোগ কাজে লাগান।

৪. সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা

সুরা কাহফ তিলাওয়াত করার মাধ্যমে পাপ মোচন, আল্লাহর বরকত লাভ এবং কিয়ামতের দিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবার সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুটি শুক্রবারের মধ্যে নুর (আলো) থাকবে।’ (সুনান আল-কুবরা : ৫৮৫৬)

তিনি আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জাল থেকে রক্ষা পাবে।’ (মুসলিম)

৫. রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা

আল্লাহ তাআলার স্মরণের পাশাপাশি রাসুল (সা.)-এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা উচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো শুক্রবার। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, এই দিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন, এই দিন শিঙা ফুঁক দেওয়া হবে এবং এই দিন সব কিছু নিস্তেজ হয়ে যাবে। তাই আমার প্রতি অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো, কারণ তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছানো হবে।’ (আবু দাউদ)

৬. ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করা

জুমার দিন হলো পাপ মোচনের সুবর্ণ সুযোগ। তাই যত বেশি সম্ভব ইস্তিগফার করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

৭. গরিব ও অভাবীদের সাহায্য করা

জুমার দিন দান-সদকাহ করার মাধ্যমে বরকত ও সওয়াব বৃদ্ধি পায়। গরিব, এতিম বা কোনো অভাবী ব্যক্তিকে সাহায্য করা যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দান-সদকা রাগকে ঠেকিয়ে রাখে এবং খারাপ মৃত্যুকে দূরে সরিয়ে দেয়।’ (তিরমিজি)

এ ছাড়া এই দিন বেশি বেশি জিকির-আজকার, তিলাওয়াত, নফল নামাজ ও যেকোনো নেক আমল করা যেতে পারে। আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সবাইকে জুমার দিন যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করেন।


এই বিভাগের আরও খবর