গেব্রিয়েসাস বিবিসি রেডিওকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের হামলার পর তার কানে এখনো রিং বাজছে। তিনি সানায় একটি ফ্লাইটে ওঠার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ওই হামলা করা হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা বজায় রাখার গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
সেদিন ইসরায়েলি বিমান হামলা সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ইয়েমেনের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ওই আক্রমণগুলোকে বিদ্রোহীদের ‘সামরিক লক্ষ্য’ বলে অভিহিত করেছে। ১৯ ডিসেম্বরের পর এটি ইয়েমেনে ইসরায়েলের দ্বিতীয়বার হামলা। এর আগে বিদ্রোহীরাও ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বৃহস্পতিবারের হামলার দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কাছাকাছি একটি ভারী বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছিলাম। পরে সেটি ফের ঘটছিল বলে আমার মনে হচ্ছিল। শব্দটি এতটাই, এতটাই জোরালো ছিল…আসলে এতটাই বধির করে দেওয়ার মতো।
গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘এটি (হামলা) আমাদের পাশের ডিপারচার লাউঞ্জে আঘাত হেনেছিল এবং পরে নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারে।
‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’
হুতি উপপরিবহন মন্ত্রী ইয়াহিয়া আল-সায়ানি বলেছেন, এই হামলায় চারজন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে। টেড্রোস জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের পক্ষ থেকে ইয়েমেনে সফর করছিলেন, যা আটকে পড়া জাতিসংঘ কর্মীদের মুক্তির চেষ্টা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার একটি মিশনের অংশ ছিল।
ওই বিমানবন্দরে তার উপস্থিতি সম্পর্কে ইসরায়েল জানার বিষয়ে গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘আমাদের ফ্লাইট ও অন্যান্য তথ্য আন্তর্জাতিকভাবে জানা থাকে। সুতরাং আমি অনুমান করি, যারা জানতে চায়, তারা জানে। আমি তেমনটাই অনুমান করছি। তবে আমি মনে করি, ইসরায়েলকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা উচিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় যে আমি সেখানে ছিলাম কিনা…যদি এটি একটি বেসামরিক স্থাপনা হয়, তাহলে তা সুরক্ষিত থাকা উচিত, আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে। তারা জানত কিনা, তা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়…আন্তর্জাতিক আইনকে শ্রদ্ধা করতে হবে।’
ডব্লিউএইচওপ্রধান জানান, তিনি একটি ডিপারচার লাউঞ্জ দেখেছেন, যেখানে বেসামরিক নাগরিকরা ছিল এবং বেসামরিক বিমানগুলো পার্ক করা ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি যা জানি তা হলো, এটি একটি বেসামরিক বিমানবন্দর। যদি কিছু অন্যথা থাকে, আমি তা দেখিনি। তবে আমি জানি, এটি তখন বেসামরিক ফ্লাইট সেবা প্রদান করছিল।’
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এক্সে ওই হামলার ভিডিও পোস্ট করেছেন এবং ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার সহকর্মী ও বিমানবন্দর কর্মীদের, যারা ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক হামলার’ সময় তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ও তার দল নিরাপদে জর্দানে পাড়ি জমিয়েছেন।
সূত্র : এএফপি