আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন, জাতীয় সংলাপ ২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৫৩ বছর পর সংস্কার, নির্বাচন নিয়ে আমাদের আলোচনা করতে হচ্ছে। ভালো হতো আমরা যদি এ বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারতাম। এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এবং আমার দল ২০১২ সাল থেকে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম শুরু করেছি। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। সেই সময়ে অনেক রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, কারাগারে নেওয়া হয়েছে। আমার দলের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের সাতশোর বেশি নেতাকর্মীকে গুম করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আয়নাঘরের কথা আপনারা সবাই জানেন। ফাঁসি দেওয়া হয়েছে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের। এরপরও আমরা কিন্তু থেমে থাকিনি। আজকে যে সোচ্চার, এটি আমরা প্রথম থেকেই ছিলাম। তখন আমরা অনেককেই আমাদের সঙ্গে পাইনি, এখন তাদের দেখছি, ভালো লাগছে! আমরা আরও অনুপ্রাণিত হচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কারের পক্ষে আমরা প্রথম থেকেই। তবে দুর্ভাগ্য আমাদের কিছু কিছু বক্তৃতা এসেছে- ‘বিএনপি সংস্কার চায় না’, এ কথাটি সঠিক নয়। প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করে একটা সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যেতে চাই আমরা। আমরা নির্বাচনের কথা বলছি কেন? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন হচ্ছে প্রধান ফটক, দরজা। আর একটা ডেমোক্রেসি’।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা এ দেশে গণতান্ত্রিক চর্চায় হয়নি। এখানে সে সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। সেই কালচার না থাকায় আমাদের বারবার বলতে হচ্ছে, এ করতে হবে ও করতে হবে, এইটা ডেমোক্রেসি, এইটা এভাবে যেতে হবে। ডেমোক্রেসি কিন্তু বারবার চর্চা প্র্যাকটিস ছাড়া গড়ে উঠবে না। হুট করে কোনো কিছু করা সম্ভব হবে না। উদাহরণ হিসেবে মির্জা ফখরুল বলেন, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে তিনটি নির্বাচন হয়েছে, সে তিনটি নির্বাচনী গ্রহণযোগ্য হয়েছে, সেটি মানুষ গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক তাত্ত্বিক বা বিশেষজ্ঞ নই। আমি মাঠ থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে এখানে এসেছি, তৃণমূল থেকে কাজ করেই এ পর্যায়ে এসেছি। ধারণা তুলে ধরে বলেন , জনগণকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু করা সম্ভব হবে না। জনগণকে তৈরি করতে হবে আপনাকে। এখানে যারা আছেন, তারা জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক করার চেষ্টা করবেন।’
‘আমরা যেন ৭১-কে ভুলে না যাই’ এই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সাল এটাকে আমরা যেন কখনো ভুলে না যাই। আমাদের চারপাশে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যে সংগ্রাম লড়াই, একাত্তরের পর থেকে সেই লড়াই সংগ্রাম প্রত্যেকে আমাদের মনে রাখা দরকার। সে লড়াই সংগ্রাম ও ছাত্রদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকে আমরা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।’