শিরোনাম
নির্বাচিত সরকার অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো : ফখরুল ভাঙ্গায় ১৫ কেজি গাঁজাসহ ২ নারী ভুয়া সাংবাদিক আটক সদরপুরে ইজিবাইক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে কলেজ ছাত্র নিহত জালিয়াতির অভিযোগ, শিল্পী সমিতি থেকে বহিষ্কার নিপুণ আমাদের ভালো মানুষ দরকার : তারেক রহমান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সূর্য সন্তানদের ভোটার করতে হাসপাতালে যাবে ইসি আবারও রিয়ালের সভাপতি নির্বাচিত হলেন পেরেজ এসি তানজিলসহ ৩ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠাল ট্রাইব্যুনাল মান্দা মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজ্জাক ও সম্পাদক পলাশ চৌহালী উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত গার্লফ্রেন্ডকেই বিয়ে করলেন গায়ক দর্শন রাভাল ‘পিনিক’–এ ফার্স্ট লুকে অন্য রকম বুবলী উপার্জন হালাল হলে দোয়া কবুল হয় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের আয়কর নথি জব্দের আদেশ বন্দী বিনিময় সফল হবে, আশাবাদ কাতারের কোথায় আছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী তামিমের হলোটা কী! রূপগঞ্জে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালন পতনের পর স্পেনে মুসলমানের জীবন সাড়া ফেলেছে ফারহান-ফারিণের ‘মনের মাঝে তুমি’
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৮ অপরাহ্ন

ইসলামে স্বাধীনতার মাহাত্ম্য

অনলাইন ডেস্ক
আপলোড সময় : সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

স্বাধীনতার স্বাভাবিক মর্ম পরাধীনতা মুক্ত হলেও এটির বাস্তব মর্ম তা নয়। একটি ভূখণ্ডের মানুষ স্বাধীন মানে তার ওপর কেউ ক্ষমতা চাপিয়ে দিতে পারবে না। তার দেশ সব দেশি ও বিদেশি চাপ থেকে মুক্ত। একজন ব্যক্তির স্বাধীনতা অর্থ সে মুখ খুলে কথা বলতে পারে।

তার মত প্রকাশে কেউ বাধা দেয় না। তার নাগরিক অধিকার রক্ষিত। তার আর্থিক উপার্জনে সে স্বাধীন। সে অবলীলায় ভোট দিতে পারে।

সে তার ধর্মীয় কর্ম বাধাহীনভাবে পালন করতে পারে। এমনি আরো অনেক স্বাধীনতা সে ভোগ করে। অথচ ইসলামে স্বাধীনতা বলতে তা বোঝায় না। ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাধীনতার মাহাত্ম্য হলো, মানুষ আল্লাহ ছাড়া কারো গোলামি করবে না।

মানুষের অধীনতা থেকে সে মুক্ত। মানুষ এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে প্রভু বলে স্বীকার করবে না। তার মানে কোনো অন্যায় বা অনিয়মের কাছে সে মাধা নত করবে না। ইসলামের পরিভাষায় এর নামই স্বাধীনতা।
এই স্বাধীনতা ঈমানের প্রথম বাক্য কালেমা তাইয়িবায় ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, ‘এক আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।’
এই ঘোষণার মাধ্যমে মানুষ সব ধরনের প্রভুর গোলামি থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করে।

প্রতিটি শিশু স্বাধীনভাবেই জন্ম নেয়। পরবর্তীকালে মানুষ মানুষকে নানাভাবে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে। মহানবী (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণে প্রকৃত স্বাধীনতার মর্মার্থ উচ্চারণ করেছেন এভাবে—‘নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের মর্যাদা তোমাদের জন্য হারাম, যেমনিভাবে এই পবিত্র ঈদের দিন, এই হজের মাস ও মক্কা নগরীকে হারাম করা হয়েছে তোমাদের জন্য।’(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭)

ইসলাম মানুষের স্বাধীনতাকে অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ রক্ষায় মারা যায় সে শহীদ, যে ব্যক্তি তার ধর্ম রক্ষায় মারা যায় সে শহীদ, যে ব্যক্তি নিজের প্রাণ রক্ষায় মারা যায় সে শহীদ, যে ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা রক্ষায় মারা যায় সে শহীদ।’

(তিরমিজি, হাদিস : ১৪২১)

ইসলামে ব্যক্তির মতামত প্রকাশ ও গ্রহণ করা এবং চিন্তা ও বিবেকের ব্যাপারে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। একটি সুপ্রসিদ্ধ ঘটনা থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) জনৈক নারী বারিরা (রা.)-কে তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদে বারণ করেছিলেন। বারিরা (রা.) মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছ থেকে জানতে চান এটা কি তার পরামর্শ, না নির্দেশ। তখন মহানবী (সা.) বললেন, ‘নির্দেশ নয়, পরামর্শ।’ এরপর বারিরা (রা.) বলেন, ‘তাহলে আপনার পরামর্শ গ্রহণ করা বা না করার ক্ষেত্রে আমি স্বাধীন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২৮৩)

মহানবী (সা.) সুদীর্ঘ ১৩ বছর আবু জাহেল, আবু লাহাব, উতবা শায়বার মতো জালিমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। মানবতাকে জুলুম, নিপীড়ন ও শৃঙ্খল থেকে মুক্তির এই লড়াই মদিনায় গিয়েও দীর্ঘ ১০ বছর চালিয়ে গেছেন। অবশেষে তিনি সেখানে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র কায়েম করে জাহিলিয়াতের অন্ধকার ও পরাধীনতা থেকে মানুষকে মুক্ত করেছেন। এ জন্য মহানবী (সা.) স্বাধীনতার নিয়ামতকে সুরক্ষার জন্য মদিনা এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদি ও পৌত্তলিকদের সব জাতি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়কে নিয়ে ঐতিহাসিক ‘মদিনা সনদ’ সম্পাদিত করেছেন। তারপর ইহুদিরা এই স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য বহু ষড়যন্ত্র করেছিল। মহানবী (সা.) আল্লাহর আদেশে এই জুলুমবাজ ও কুচক্রী ইহুদিদের মদিনা থেকে বিতাড়িত করেছিলেন এবং মদিনার স্বাধীনতা, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন।

মহানবী (সা.) নিজে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন, তেমনি মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য যারা চেষ্টা করবে, তাদের কাজকে নবীজি (সা.) উত্তম কাজ বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় এক দিন সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত থাকা দুনিয়া এবং এর সব কিছু অপেক্ষা উত্তম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৯২)

প্রত্যেক মানুষ তার বিবেক, চিন্তা-ভাবনা, মত প্রকাশ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে স্বাধীন। এই স্বাধীনতা আল্লাহই মানুষকে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘ধর্ম গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো জরবদস্তি নেই।’ (সুরা : আল বাকারাহ, আয়াত : ২৫৬)

১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে আমরা দেশমাতৃকার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এ বিজয় ছিল একটি নিয়ামতস্বরূপ। বিজয়ের এই দিনে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে বিজয়ের জন্য মহান আল্লাহর শোকর আদায় করা। আর এই বিজয়কে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তৎপর সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য দৃঢ়প্রত্যয় গ্রহণ করা।


এই বিভাগের আরও খবর