লালমনিরহাটে “শান্তি, ঐক্য, অধিকার” স্লোগানে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, নিরপরাধ জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তি, এবং চাকরিচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যকে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় লালমনিরহাট জেলা শহরের মিশন মোড় গোলচত্বরে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ, লালমনিরহাট জেলার উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদ, লালমনিরহাট জেলার সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম (রিপন)-এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিপাহী সাইফুল ইসলাম, মনির হোসেন, দিলপিয়ার রহমান, শফিকুল ইসলাম, লায়েক আতিকুল ইসলাম, হাবিলদার আফজাল হোসেন, সিপাহী নুরুজামান, হাবিলদার শচীন্দ্র নাথ রায়ের সহধর্মিণী বিউটি রানী রায় প্রমুখ। এ সময় বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বিডিআর সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদ, লালমনিরহাটের জেসিও মো. আব্দুস ছামাদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ছিল একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এ ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। পরবর্তীতে তৎকালীন সরকার এই ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ১৮,৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে চাকরিচ্যুত করে এবং অনেককে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়। এতে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বক্তারা নিম্নলিখিত দাবি উত্থাপন করেন:
১। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
২। প্রহসনের বিশেষ আদালত বাতিল করতে হবে।
৩। চাকরিচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যকে সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
৪। স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৫। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদ মর্যাদা দিতে হবে।
৬। নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনে নিহত বিডিআর সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসন করতে হবে।
৭। যারা সাজা ভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন এবং যারা এখনো মামলার জটিলতায় আটক আছেন, তাদের জামিন বা মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত সদস্যরা দাবি করেন, দীর্ঘ ১৫ বছরেও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সঙ্গে কোনো রাষ্ট্রবিরোধী বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সম্পৃক্ততা প্রমাণ হয়নি। দ্রুত তাদের পুনর্বহাল নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।