নওগাঁ জেলার পতœীতলায় সুমন হোসেন মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে দিল অডিও বার্তা, হত্যা ঘিরে রহস্য। ওই যুবকের নাম সুমন হোসেন। তিনি বিল ছাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে বাড়ি ফেরার পথে নাপিত পকুরা এলাকায় সুমনকে হত্যা করে গলায় দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা পরবর্তীতে ফেসবুকে লাইভ দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রাত ১০টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে সুমন বলেন, ছাত্র জনতা ভাইদের অনুরোধ করছি আমাকে বাঁচান। বুলবুল নামের একজন আমার থেকে দশ লাখ টাকা কেড়ে নিয়েছে তারা আমাকে মারার জন্য খুঁজতেছে। আমি জঙ্গলে লুকিয়ে আছি তারা হাতে লাঠি-চাকু নিয়ে আট থেকে দশ জন আছে। ফেসবুক লাইভে তিনি আরো বলেন, বুলবুল আমাকে মেরে ফেলে দিবে। আমার মা, বোন, ভাগিনা তাদের কি হবে তাদের কে দেখবে আমি তো টাকা দিতেই সিএনজি নিয়ে আসতেছিলাম, আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকা আছে বুলবুল ছাড়া কেউ জানে না। বুলবুল আমাকে বাঁচতে দিল না। সে আমার কাছে থেকে এর আগেও ভয়ভীতি দেখিয়ে ৮ লক্ষ টাকা নিয়েছে। টাকার জন্য আমার মান ইজ্জত শেষ করে দিবে বলে সবসময় ভয় দেখায় বুলবুল। সে আমার বাসায় পুলিশ নিয়ে আসবে, আাগে আওয়ামী লীগ এখন বিএনপির লোকজন নিয়ে এসে আমাকে তুলে নিয়ে যাবে বলে ভয় দেখায়।
তার জন্য আজকে আমি টাকা নিয়ে এসেছি দেওয়ার জন্য। আমি বুলবুলের কাছে থেকে মাত্র ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম সেই টাকার সুদ ১৮ লক্ষ টাকা নিচ্ছে, আবার আমাকে মেরে ফেলার জন্য খুঁজতেছে। আমি সিএনজি থেকে নেমে দৌড়ে ধানের ভেতরে শুয়ে থেকে ফেসবুকে লাইভে আছি। যে ভাবেই হোক আমাকে বাঁচান আপনারা। তার কিছু সময় পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নাপিত পকুরা নামক স্থানে গিয়ে কাঠাঁল গাছে রশি দিয়ে ঝুলন্ত আবস্থায় তাকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সুমনকে মৃত ঘোষণা করে।
এলাকাবাসীরা বলছেন, সুমন নজিপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিমি নজিপুর মসজিদ মার্কেটে কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।মৃত্যুর আগে সুমন ফেসবুক লাইভে ছাত্র জনতার কাছে বিচার চেয়েছিল। তার এই রহস্যজনক মৃত্যু এটা পুরোটাই হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
পতœীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ফেসবুক আইডিটি আসলেই সুমনের কিনা কিংবা লাইভের অডিও ওই ব্যক্তিটির কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুলবুল নামে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সুমনের আসলেই কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে।