লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার সতী নদীর বিভিন্ন জায়গায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি এবং হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের বেশকিছু বসত বাড়িও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে মৃতপ্রায় সতী নদীর ফসলি জমি থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে অবাধে বালু উত্তোলন করছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের মঙ্গলের ডাঙ্গা নামক এলাকায় সতী নদীতে পাইপ বসিয়ে প্রকাশ্যেই বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। উত্তোলিত বালু নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে জেলার বিভিন্ন এলাকা বিক্রি করে আসছে।
স্থানীয়রা জানায়,মঙ্গলের ডাঙ্গা এলাকার বালু ও ড্রেজার মেশিন মালিক জুলহাস ওরফে হুলাসু (৫০) ও জালাল উদ্দিন(৩৫),এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকেই দাপটের সাথে সতী নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই নানা প্রকার হয়রানি ও নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়।বিগত পতিত সরকারের প্রভাব খাটিয়ে বালু উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী চক্রটি।
এ ব্যাপারে মঙ্গলেরডাঙ্গা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জয়নাল আবেদীন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জয়নাল আবেদীনের জমির সংলগ্ন জমির মালিক পার্শবর্তী হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ী ইউনিয়নের টিটু মিয়া ২০ শতক নদীর জমি থেকে জুলহাস ওরফে হুলাসু এর নিকট বালু বিক্রয় করেন এবং জুলহাস ও জালাল উক্ত সতিনদীতে ০৫টি ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে দিনের পর দিন বালু উত্তোলন করছেন। উত্তোলনকৃত বালু আব্দুর রাশেদ(৫০) ও আব্দুর রশিদ(৪০) দ্বয়ের বাড়ির সামনে রেখে বিক্রি করে আসছে।
ভুক্তভোগী, জয়নাল আবেদীন ও আহসান হাবিব বলেন, আমাদের বাড়ির পাশেই জমি ও নদী থেকে যেভাবে বালু উত্তোলন করছে এতে আমাদের জমি সহ বসতবাড়ি যেকোনো সময় ভেঙ্গে নদীতে মিশে যেতে পারে। আমরা কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাইনি। এসব বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন ও জুলহাস কে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে মদাতী ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশীলদার) বিপুল কুমার রায় জানান, ‘জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দ্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেজার মেশিন মালিকদের বালু উত্তোলন বন্ধ করতে বলি। তারা আমার সাথে অঙ্গীকার করেছে আর বালু উত্তোলন করবেনা। ‘ কিন্তু বাস্তবে উল্টো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রেজার মেশিন এক জায়গা থেকে স্থানান্তর করে অন্যত্র বসিয়ে বহাল তবিয়তে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার’র সাথে ফোনে কথা হলে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।