হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। রংতুলির আঁচড়ে প্রতিমা গুলোকে নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।পাশাপাশি সাজানো হচ্ছে মন্ডপের প্যান্ডেলগুলো।
জানাগেছে, শারদীয় দুর্গোৎসবের বাকি মাত্র একদিন। আগমীকাল বুধবার দেবীর বোধন ও ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ১২ অক্টোবর একই দিনে নবমী ও ১৩ অক্টোবর দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তাই প্রতিমায় শেষ তুলির আঁচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। রং তুলির আঁচড়ে তাদের হাতে ফুটে উঠছে প্রতিমার মুখমন্ডল। আবার কেউ আঁকছেন চুল, কেউ চোখের পাতা, কারও তুলির নিপুণ ছোঁয়ায় ফুটে উঠছে চোখ। দিন-রাত পালা করে চলছে এ কাজ। দম ফেলার ফুসরত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। প্রতিটি মন্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। পাশাপাশি মন্ডপগুলোর সৌন্দর্য বর্ধন ও আলোকসজ্জার কাজও চলছে একসঙ্গে।
প্রতিমা শিল্পী চিত্তরঞ্জন পাল বলেন, প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে প্রতিমাগুলো রংতুলির কাজ, সাজসজ্জা ও প্যান্ডেল নির্মাণ এবং লাইটিং এর কাজ। আজকের মধ্যেই আমরা আমাদের কাজ শেষ করবো।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাবুলাল ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা কাজ করবেন। মন্ডপগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে বলেছি আমরা। এখানের বর্তমান অবস্থা স্বাভাবিক। সবকিছু ঠিক আছে। তাই মন্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের মাঝে কোনও শঙ্কা নেই। দুর্গাপূজা সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই অংশ নেয় বলে জানান তিনি।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট পংকজ বিহারী ঘোষ অন্ন জানান, চলতি বছর জেলার ৩ উপজেলায় ৫৬২টি মন্ডপে আনন্দঘন পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ২৪৪ টি মন্ডপে, কালিয়া উপজেলায় ১৬৭টি মন্ডপে এবং লোহাগড়া উপজেলায় ১৫১টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর বলেন, ‘এ বছর মন্ডপ গুলোতে পূজার আগে ও চলাকালে এবং পরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি মন্ডপে নারী-পুরুষ আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া সেনাসদস্য, র্যাব, পুলিশ ভ্রাম্যমাণভাবে দায়িত্ব পালন করবে। থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে।’