গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে প্রায় সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। সরকারি কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
অপরদিকে অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিনে অনুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার সদর, ঘাঘর বাজার ও এর আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ২শত ৭৮ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও ভাঙ্গারহাটের চারপাশে ৭০ টি, কোটালীপাড়া হাসপাতাল রোড়ে ২০ টি, রাধাগঞ্জ বাজারে ৫০ টি, রাধাগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ১৪ টি, মতিরমোড় থেকে উনশিয়া ঘোষবাড়ি পর্যন্ত ১৫ টি, পিড়াবাড়ি বাজারে ৩০ টি, শুয়াগ্রাম বাজারে ২০টি, কুশলা বাজারে ২০ টি, ধারাবাশাইল বাজারে ২৫ টি, ওয়াবদার হাট বাজারে ২০ টি, রামশীল বাজারে ১০ টি, রামশীল ব্রিজের দু’পাশে ১০ টি, ত্রিমূখী বাজারে ১০ টি, বান্ধাবাড়ি বাজারে ১৫ টি, তরুর বাজারে ৩০ টি, কালিগঞ্জ বাজারে ৩৫ টি, চৌধুরীর হাটে ১০ টি, ধারাবাশাইল থেকে কান্দি সড়কের পাশে ২০ টি, তারাশী থেকে টুপরিয়া বাজার সড়কের পাশে ৪০ টি, কুশলা বাজার থেকে মান্দ্রা পর্যন্ত সড়কের পাশে ৩৫ টি, শিকিরবাজার থেকে বুজুর্গকোনা সড়কের পাশে ২৫ টি অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে।
অপরদিকে ঘাঘর নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল দখল করে প্রভাবশালীমহল বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা গড়ে তুলেছেন।
ঘাঘর বাজারে আমিনুল ইসলাম হাওলাদার, সামসুদ্দিন মিয়া, কাঠ ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানসহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারী জায়গা দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ অভিযোগ রয়েছে। অধিকাংশ দখলদার সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
তবে কাঠ ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান সরকারি জায়গা দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঘাঘর নদীর ভিতরেও আমার দলিলের জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় আমি বহুতল ভবন নির্মাণ করেছি।
দ্রæত সময়ের মধ্যে এসব অবৈধ স্থাপনা উপর অভিযান চালিয়ে দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মান্নান শেখ।
নাম না প্রকাশের শর্তে উপজেলার ঘাঘর বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, শুধু অবৈধভাবে দখলই নয় অনেকে অসংখ্য ব্যবসায়ী সরকারিভাবে একশনা বন্দোবস্ত এনে তা আর নবায়ন করেন নি। অনেকে আবার বন্দোবস্ত নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আধাপাকা ভবন তুলেছেন। আবার কেউ কেউ জায়াগা বন্দোবস্ত এনে স্থাপনা অন্যের নিকট বিক্রি ও ভাড়া দিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করায় খালগুলো সাধারণ মানুষদের ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। আইনকানুন না মেনে সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করায় সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই আমি এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ দখলদারদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত বলেন, শীঘ্রই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।