জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঢাকা কর অঞ্চল দশের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী মহিউদ্দিন খোকা। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হলেও আওয়ামী লীগের আমলে গড়েছেন পাহাড় পরিমান সম্পদ। শুধু তাই নয় কর অঞ্চল দশকে বানিয়েছেন নিজের বাড়ি।
ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কর অঞ্চল দশ ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে নানা অনিয়মকে করেছেন নিয়মে রূপান্তর। এদিকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন এই কর্মচারী। শুধু তাই নয় একাধিকবার দুর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ পড়েছিলো তার বিরুদ্ধে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই কোনো এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় থেমে যেত দুদকের অনুসন্ধান।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, পরিবারের সদস্যদের নামে কিনেছেন কয়েকটি ফ্লাট। মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা উদ্যান এভিনিউ -০১ এর ৭/এ নং ভবনের ৪র্থ তলায় দুইটি ফ্লাট, যার পঞ্চম তলায় বাস করেন এই ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী মহিউদ্দিন। ছেলের নামে কিনেছেন একই ভবনের নবম তলায় ফ্লাট। নিজের টাকায় বাবা, মা, ভাই, বোন ও শ্বশুর শাশুড়ির নামেও কিনেছেন ফ্লাট। চন্দ্রিমা উদ্যানের
এগারো নম্বর সড়কের বি ব্লকের ২১ নম্বর প্লট, দশ নম্বর সড়কের কয়েক শতক জমিতে করেছেন টিন শেড বাসা, নবীনগর হাউজিংয়ে বিলাসবহুল দশ তলা বাড়ি, মোহাম্মদীয়া কাঁচা বাজারে তার নামে কিনেছেন গ-৩৭/৩৮/৩৯/৪০ নং এর ৪টি দোকান। বড় ভাই বেনজিরের নামে কিনেছেন ১টি প্রিমিও সাদা রঙের গাড়ি, যার নম্বর-ঢাকা মেট্রো-গ-৮৬০৫। দুবাইতে রয়েছে তার গাড়ির ব্যবসা। সেই ব্যবসা দেখভাল করেন তার স্ত্রী। শুধু তাই নয়, গ্রামের বাড়িতেও গড়েছেন তিনি সম্পদের পাহাড়। শরীয়তপুরের সখিপুরের মাদবরকান্দি, রাড়িকান্দি, ছৈয়াল কান্দি সহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে পাঁচ কোটি টাকার কৃষি জমি। এসব জমি তার বড় ভাই মনসুর আহম্মেদ, মনির আহম্মেদ ও বেনজির আহম্মেদের নামে দলিল করিয়েছেন মহিউদ্দিন। পরবর্তীতে মহিউদ্দিন তাদের কাছ থেকে দান দলিল বা হেবা দলিল হিসেবে নিয়ে নেন। মায়ের নামে করেছেন এক্সপার্ট ও ইমপোর্টের লাইসেন্স। তার অধিনস্থ পিয়ন শাহিনকে দিয়ে সামলান সব কিছু। ভাড়া দিয়েছেন তিনি কর অঞ্চল-১০ এর সরকারি মাইক্রোবাস। ইসলামী ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংকে খুলেছেন নামে বেনামে একাউন্ট। যেখানে রয়েছে শত কোটি টাকা। তথ্য গোপন করে বানিয়েছেন একাধিক পাসপোর্ট।
অফিসে একাধিকবার গিয়েও সন্ধান মিলেনি তার। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ঢাকা কর অঞ্চল-১০ এর এক কর্মকর্তা বলেন, আ’লীগ সরকারের পতনের পর অসুস্থতার নামে ছুটি না নিয়েই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কর অঞ্চলের মহিউদ্দিন। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি।
মহিউদ্দিনের বক্তব্য জানতে চেয়ে তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করে ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েও কোনো উত্তর মিলেনি।