কেবিনে সিট খালি নাই। বাধ্য হয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলাম ২ দিন। হাসপাতালের নোংরা পরিবেশের কারনে স্বেচ্ছায় রিলিজ নিয়ে চলে আসি। অথচ প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত করে রাখা ২ টি কেবিন তালাবদ্ধ আছে বছরের পর বছর। যিনি কোনদিন ব্যবহার করেননি আর ব্যবহার করবেন কিনা কেউ বলতে পারবে না। এভাবে ২ টি কেবিন রিজার্ভ রাখাটা অযৌক্তিক। আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বললেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুরপালা গ্রামের গৃহবধু তাবসসুম বেগম।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রায় ২১মাস ধরে নির্ধারিত রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দুটি কেবিন কক্ষ। তবে কোন প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে কোন উল্লেখ নেই। এভাবে মাসের পর মাস দুটি কেবিন কক্ষ বন্ধ থাকায় সাধারণ রোগীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা কাজুলিয়া গ্রামের মোঃ মামুন বলেন, সাবেক বা বর্তমান কোন সরকার প্রধানই স্বাস্থ্য সেবা নিতে এখানে কখনোই আসবেন না। তাই এভাবে দুটি কেবিন কক্ষ নির্ধারণ করে রাখাটা মোটেই ঠিক হয়নি। আমরা একটি নির্ধারিত ফি দিয়ে কেবিনে থাকি। সে ক্ষেত্রে দুটি কেবিন কক্ষ এ ভাবে বন্ধ থাকায় সরকার হাজার হাজার টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। আমরা দ্রæত সময়ের মধ্যে কেবিন কক্ষ দুটি খুলে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিগত সরকারের পতন ঘটার পরেও বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চতুর্থ তলার দক্ষিণ পাশের কেবিন কক্ষ দুটি সেই আগের মতোই বন্ধ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কক্ষ দুটি খুলে দিয়ে রোগীদের সেবার মান বাড়াতে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চতুর্থ তলার দক্ষিণ পাশে দুটি কেবিন কক্ষের সামনে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত কেবিন’ লেখা দেখতে পাওয়া যায়। এলাকাবাসী মনে করছেন এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নির্ধারিত কেবিন। তবে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্বোধনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার কোটালীপাড়া উপজেলায় এসেছেন। কিন্তু এই উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্ধারিত কেবিনে স্বাস্থ্য সেবা বা বিশ্রাম নিতে তিনি কখনোই আসেনি। তবে কেন তার জন্য এই নির্ধারিত কেবিন? এমন প্রশ্ন এখন সাধারণ রোগীদের।
জানাগেছে, ২০২৩ সালের ৭জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে বাস্তবায়িত কোটালীপাড়া উপজেলা ১০০শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নতুন ভবনটির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন থেকেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চতুর্থ তলার দক্ষিণ পাশে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দুটি কেবিন কক্ষ নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা কাজুলিয়া গ্রামের মোঃ মামুন বলেন, সাবেক বা বর্তমান কোন প্রধানমন্ত্রীই স্বাস্থ্য সেবা নিতে এখানে কখনোই আসবেন না। তাই এভাবে দুটি কেবিন কক্ষ নির্ধারণ করে রাখাটা মোটেই ঠিক হয়নি। আমরা একটি নির্ধারিত ফি দিয়ে কেবিনে থাকি। সে ক্ষেত্রে দুটি কেবিন কক্ষ এ ভাবে বন্ধ থাকায় সরকার হাজার হাজার টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। আমরা দ্রæত সময়ের মধ্যে কেবিন কক্ষ দুটি খুলে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মৃদুল কুমার দাসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের বিধান মতে দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর এলাকায় প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাদের জন্য এ ধরণের কেবিন নির্ধারণ করে রাখা হয়। সে মোতাবেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে আমাদের এখানে দুটি কেবিন কক্ষ নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিল। যেহেতু তিনি এখন প্রধানমন্ত্রী নেই সে ক্ষেত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য সেবার আগামী সভায় বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। #