নিহত ভিকটিম মঞ্জুর আলম ফেনী জেলার ফেনী সদর থানার লেমুয়া মাষ্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন অটোরিক্সা চালক। তিনি পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গত বছর দেড়েক আগে সাফিয়া আক্তার মনির সাথে ২য় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর থেকে পারিবারিক কলহের জেরে ভিকটিম মঞ্জুর আলম স্ত্রী সাফিয়া আক্তার মনিকে তালাক প্রদান করেন। উক্ত তালাক প্রদানকে কেন্দ্র করে সাফিয়া আক্তার মনি ভিকটিম মঞ্জুর আলমকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।
গত ১০ জুন ২০২৪ইং তারিখে সন্ধ্যা ১৮৩০ ঘটিকা হতে ২২০০ ঘটিকা পর্যন্ত ভিকটিমের পরিবার ভিকটিম মঞ্জুর আলমের কোন সন্ধান না পেয়ে বোগদাদিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে জানতে পারে যে, পুলিশ একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। পরবর্তীতে মঞ্জুর আলমের পরিবার ফেনী সদর হাসপাতালে গিয়ে অজ্ঞাত লাশটি মঞ্জুর আলমের বলে সনাক্ত করেন।
উক্ত ঘটনায় মঞ্জুর আলমের প্রথম স্ত্রী বাদী হয়ে ফেনী জেলার ফেনী সদর মডেল থানায় তিন জনকে এজাহারনামীয় এবং ৩/৪ ‘কে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২২, তারিখ: ১২ জুন ২০২৪ইং, ধারা-৩০২/৩৪ দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি মোঃ আইউব খান প্রকাশ তারা এবং তার সহযোগী চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবর শাহ্ থানাধীন বিশ্ব কলোনী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ০৭ জুলাই ২০২৪ইং আনুমানিক ১৯৪৫ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ১। মোঃ আইউব খান প্রকাশ তারা (৩০), পিতা-মৃত নুরুজ্জামান, এবং সাফিয়া আক্তার মনি (২৬), স্বামী-মোঃ আইউব খান প্রকাশ তারা, উভয়ের সাং-কেরানিয়া, থানা-ফেনী সদর, জেলা-ফেনীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, তারা পরস্পর যোগসাজশে পূর্ববিরোধের জের ধরে ভিকটিম মঞ্জুর আলমকে গত ১০ জুন ২০২৪ইং তারিখ দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে এবং মুখমন্ডল থেতলানো সহ দাঁত উপড়ে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ অজ্ঞাত স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মামলা দায়েরের পর থেকে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে তারা নিজ এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবর শাহ্ এলাকায় আত্মগোপন করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাদের ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।