ভারতের উত্তর প্রদেশে সৎসঙ্গ নামক একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উত্তর প্রদেশের হাথরস জেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিলেন ‘ভোলে বাবা’ নামে এক ধর্মগুরু। ঘটনার পর থেকে আর পাওয়া যাচ্ছে না ভোলে বাবাকে।
তাকে খুঁজছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও বহু বিতর্কে নাম জড়িয়েছে ভোলে বাবার। তার ‘কীর্তি’ নাকি অপার! সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোলে বাবার বিরুদ্ধে অতীতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে আগ্রা, এটাহ্, কাসগঞ্জ, ফারুখাবাদ এবং রাজস্থানেও একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে এর আগে। তবে তার পরেও ‘বাবা’র জ্ঞান বিতরণে কমতি হয়নি।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবা উত্তরপ্রদেশেরই বাসিন্দা। উত্তরপ্রদেশের এটাহ্ জেলার পাতিয়ালি পঞ্চায়েতের বাহাদুর নাগরি গ্রামের এক কৃষকের বাড়িতে তার জন্ম। আসল নাম সুরজপাল সিংহ। পড়াশোনা শেষ করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশে যোগ দেন সুরজ। প্রায় ১৮ বছর উত্তরপ্রদেশে পুলিশের ‘ইনটেলিজেন্স ইউনিট’-এর হেড কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। ভোলে বাবার অনুগামীদের দাবি, অতীতে গোয়েন্দা বিভাগের হয়েও তিনি কাজ করেছেন।
কিন্তু ধর্মীয় বাণী প্রচারের জন্য ১৯৯৯ সালে তিনি নাকি গোয়েন্দা বিভাগের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। চাকরি ছেড়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে নারায়ণ সাকার হরি রাখেন সুরজ। সুরজপাল হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। এর পরে পরেই শুরু সৎসঙ্গের।
তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল ভোলে বাবার (যদিও তখনও তিনি ভোলে বাবা হয়ে ওঠেননি) বিরুদ্ধে। এর পরেই তার চাকরি যায়। জেলেও যেতে হয়। জেল থেকে মুক্তির পরই নাকি নিজেকে ‘সাকার বিশ্ব হরি বাবা’ হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করেন তিনি। পৈতৃক বাড়িতেই আশ্রম খোলেন। হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। দিনে দিনে ভক্ত সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এখন হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, দিল্লিসহ গোটা ভারতে অসংখ্য ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছে স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর।