ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রোববার সংঘটিত ওই হামলায় অন্তত চারজন নিহত ও ৬৭ মানুষ আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, হামলা টানা ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে। এতে একটি কার্ডিওলজি ক্লিনিক, একাধিক কারখানা ও আবাসিক ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ৫৯৫টি ড্রোন এবং ৪৮টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী অন্তত ৫৬৮টি ড্রোন এবং ৪৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল রাজধানী কিয়েভ। স্থানীয় সময় ভোরে বিস্ফোরণের শব্দ, আকাশে ড্রোন এবং বিমান প্রতিরক্ষার গর্জনে কেঁপে ওঠে কিয়েভ।
পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার হামলার পর রাজধানী কিয়েভ ও এর আশপাশের এলাকায় গতকালই সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। জরুরি সেবাদানকারী সংস্থা জানিয়েছে, দেশজুড়ে অন্তত চারজন নিহত এবং ৬৭ জন আহত হয়েছেন। কিয়েভ সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর টকাচেঙ্কো জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ১২ বছরের এক শিশুও রয়েছে, যদিও এটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রাশিয়ার জ্বালানি আয় বন্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান। জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এখনও মস্কোর বিরুদ্ধে কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপে রাজি করানো যায়নি। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জি৭ ও জি২০-এর শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করি।
রোববারের হামলার সময় প্রতিবেশী পোল্যান্ডও তাদের আকাশপথ বন্ধ করে দেয় এবং বিমানবাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের দুটি শহরের আকাশসীমায় বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়, যতক্ষণ না বিপদ কেটে যায়।
পশ্চিমা বিশ্বকে কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি মস্কোর
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ পশ্চিমা বিশ্বকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, মস্কোর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে তার জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে। শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ল্যাভরভ বলেছেন, তাঁর দেশের ইইউ বা ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর হামলার কোনো ইচ্ছা নেই। তবে মস্কোর দিকে পরিচালিত যে কোনো ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক জবাব’দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। রাশিয়ার আকাশসীমায় উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার কোনো চেষ্টা হলে তার ফলাফল হবে ভয়াবহ। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, জার্মানি যুদ্ধের ভঙ্গিমায় কথাবার্তা বলছে। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।