ঢাকা ০৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
হাসিনাকে ফেরানোর যন্য রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে : দুদক চেয়ারম্যান কুষ্টিয়ায় বিজিবির অভিযান, ১৪ কোটি টাকার চায়না জাল জব্দ সদরপুরে মা-ইলিশ রক্ষায় অভিযান: ৭ জেলেকে কারাদণ্ড, ৫ হাজার মিটার জাল জব্দ সদরপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত সাতক্ষীরায় স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে টিভিসি ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন মুক্তির আগে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে ইসরায়েল রাজধানীতে ধানের শীষে ভোট চাইলেন যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজ হল্যান্ড-মেসির গোল উৎসবের রাতে পেনাল্টি মিসে ম্লান রোনালদো ২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে যা করতে হবে বাংলাদেশকে ইসরায়েলের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়িয়েছে ৬ আরব দেশ

শর্তসাপেক্ষে অস্ত্র ছাড়বে হামাস

  • sharmin sanjida
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার যুদ্ধবিরতি একেবারে দোরগোড়ায়। ইসরাইলি বর্বরতা থেকে শিগ্গিরই মুক্তি পাচ্ছে গাজাবাসী। যুক্তরাষ্ট্র-কাতার-মিসরের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শান্তি প্রস্তাব’ নিয়ে দুদিনের আলোচনার পরেই নতুন দিনের সূর্য উঠবে গাজায়। রোববার সিনাই উপত্যকার শার্ম-এল শেখ শহরে চলা বৈঠকের মাঝে সেই সুবাসই ছড়িয়ে পড়ে বারুদদগ্ধ গাজায়। সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল আল আরাবিয়ার এক ব্রেকিংয়ে বলা হয়-ট্রাম্প প্রস্তাব মেনে ‘শর্তসাপেক্ষে’ অস্ত্র ছাড়তে রাজি হয়েছেন হামাস নেতারা। মিসরে বৈঠকে আসার অগেই তাদের সম্মতির শর্তগুলো হোয়াইট হাউজকে জানিয়েছে হামাস। দাবি মেনে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আল আরাবিয়া। যুদ্ধবন্ধ আলোচনার দিনে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর দিনভর হামলা ও ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভের আগুনের মাঝেই এই শান্তির বার্তা নেমে এলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূখণ্ডে। আল হাদাথ। টাইমস অব ইসরাইল, ওয়াই নেটগ্লোবাল। হামাসের ওই সূত্র আল আরাবিয়াকে নিশ্চিত করেছে , ‘গাজা উপত্যকা থেকে স্থায়ীভাবে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল। কাতারের মাধ্যমে সেই ‘মার্কিন গ্যারান্টি’ এসেছে হামাস কর্তৃপক্ষের কাছে। এই শর্তেই অস্ত্র ছাড়তে সম্মত হয়েছে হামাস। তবে অস্ত্র ছাড়বে আন্তর্জাতিক তত্ত্ববাধানে। ফিলিস্তিন-মিসরীয় একটি সংস্থার কাছে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রও অবগত।’

তিনি জানান, জিম্মি হস্তান্তর ত্বরান্বিত করতে ইতোমধ্যেই ইসরাইলিদের মৃতদেহ সংগ্রহ শুরু করেছে হামাস। মিশনটি সম্পন্ন করতে গাজার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় বিমান হামলা বন্ধের শর্ত দিয়েছে হামাস। মিসরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে এই শর্ত জানিয়েছে হামাস। পাশাপাশি, মৃতদেহ ফেরত দিতে কিছুটা সময় লাগবে। সে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে নমনীয় থাকতে হবে। জীবিত জিম্মিদের একসঙ্গেই হস্তান্তর করা হবে। হামাসের কাছে বন্দি থাকা ইসরাইলের জীবত-মৃত জিম্মিদের তালিকাও মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে দিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনি বন্দিমুক্তি নিয়ে আলোচনাও ইতিবাচক। হামাসের ওই সূত্র আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হলে গাজা উপত্যকা ছাড়বে কিনা তা হামাসের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে তাদের কোনো ক্ষতি করা হবে না বলেও গ্যারান্টি নেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

প্রায় দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসানে মিসরে শুরু হয়েছে হামাস-ইসরাইল নতুন শান্তি-আলোচনা। বাংলাদেশ সময় রোববার দুপুর ১২টার দিকে (মিসরীয় সময় সকাল ৯টা) মিসরের রাজধানী কায়রোতে পৌঁছেছে মার্কিন মধ্যস্থাতাকারী দল। কাতারের মধ্যস্থতাকারীসহ দোহা থেকে কায়রোতে পৌঁছেছে হামাসও। দুদিনের এ অলোচনার প্রধান বিষয় হবে বন্দি ও জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা। এছাড়া যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ‘আন্তঃফিলিস্তিনি সংলাপ’ও আয়োজন করবে মিসর। এর মাঝেই হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। আলোচনা ফলপ্রসূ করতে গাজায় বোমা বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আহবানও আমলে নিচ্ছে না ইসরাইল।

রোববারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। অন্তত ২৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অপুষ্টিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার উপত্যকাটির বিভিন্ন এলাকায় হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ১৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন আহত হয়েছেন।

কায়রোতে শান্তি আলোচনা : গাজা শান্তিচুক্তি আলোচনায় ইসরাইলের প্রতিনিধি হিসাবে অংশ নেবেন কৌশলগতবিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার। বন্দি সমস্যা সমাধানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আস্থাভাজন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন গাল হির্শ। যিনি ইসরাইলের বন্দি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সমন্বয়কারী হিসাবে কাজ করছেন। এছাড়াও রয়েছেন সেনাবাহিনীর বন্দি ইউনিটের প্রধান মেজর জেনারেল নিটজান আলোন এবং শিন বেট নিরাপত্তা সংস্থার একজন প্রতিনিধি। হামাস এখনো তাদের দল সম্পর্কে খুব বেশি কিছু প্রকাশ করেনি। মার্কিন মধ্যস্থতাকারী দলে রয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার উপদেষ্টা জামাতা জ্যারেড কুশনার। এরই মধ্যে ইসরাইল প্রথম ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। শনিবার রাতেই সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, উপত্যকাটি থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে ইসরাইল। একই সঙ্গে হামাস নিশ্চিত করলেই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বন্দি বিনিময় দ্রুত শুরুর আহ্বান জানিয়েছে হামাসও।

ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ : গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ ও গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা কর্মীদের মুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইউরোপ। যুক্তরাজ্য, ইতালি, পর্তুগাল, স্পেনের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে লাখো মানুষ। শনিবার লন্ডনে হওয়া বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে এবং কমপক্ষে ৪৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান এ সংখ্যা ৫০০ বলে জানিয়েছে। পুলিশের তথ্যমতে, স্পেনে ও বার্সেলোনায় প্রায় ৭০,০০০ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। অন্যদিকে মাদ্রিদের সরকার জানিয়েছে, রাজধানীতে প্রায় ৯২,০০০ জন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। তৃতীয়বারের মতো গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে ডাচ জনগণ। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ চলছে ইতালিতে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গাজা অভিমুখে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় হামলা চালানোর সময় থেকে রাজপথে নামা ইতালীয়দের সঙ্গে শামিল হয়ে রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছে দেশটির শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। এদিনের বিক্ষোভে ইসরাইলের সঙ্গে অবিলম্বে অস্ত্রবাণিজ্য বন্ধের দাবি তোলেন শ্রমিকরা।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

হাসিনাকে ফেরানোর যন্য রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে : দুদক চেয়ারম্যান

শর্তসাপেক্ষে অস্ত্র ছাড়বে হামাস

আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার যুদ্ধবিরতি একেবারে দোরগোড়ায়। ইসরাইলি বর্বরতা থেকে শিগ্গিরই মুক্তি পাচ্ছে গাজাবাসী। যুক্তরাষ্ট্র-কাতার-মিসরের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শান্তি প্রস্তাব’ নিয়ে দুদিনের আলোচনার পরেই নতুন দিনের সূর্য উঠবে গাজায়। রোববার সিনাই উপত্যকার শার্ম-এল শেখ শহরে চলা বৈঠকের মাঝে সেই সুবাসই ছড়িয়ে পড়ে বারুদদগ্ধ গাজায়। সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল আল আরাবিয়ার এক ব্রেকিংয়ে বলা হয়-ট্রাম্প প্রস্তাব মেনে ‘শর্তসাপেক্ষে’ অস্ত্র ছাড়তে রাজি হয়েছেন হামাস নেতারা। মিসরে বৈঠকে আসার অগেই তাদের সম্মতির শর্তগুলো হোয়াইট হাউজকে জানিয়েছে হামাস। দাবি মেনে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আল আরাবিয়া। যুদ্ধবন্ধ আলোচনার দিনে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর দিনভর হামলা ও ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভের আগুনের মাঝেই এই শান্তির বার্তা নেমে এলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূখণ্ডে। আল হাদাথ। টাইমস অব ইসরাইল, ওয়াই নেটগ্লোবাল। হামাসের ওই সূত্র আল আরাবিয়াকে নিশ্চিত করেছে , ‘গাজা উপত্যকা থেকে স্থায়ীভাবে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল। কাতারের মাধ্যমে সেই ‘মার্কিন গ্যারান্টি’ এসেছে হামাস কর্তৃপক্ষের কাছে। এই শর্তেই অস্ত্র ছাড়তে সম্মত হয়েছে হামাস। তবে অস্ত্র ছাড়বে আন্তর্জাতিক তত্ত্ববাধানে। ফিলিস্তিন-মিসরীয় একটি সংস্থার কাছে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রও অবগত।’

তিনি জানান, জিম্মি হস্তান্তর ত্বরান্বিত করতে ইতোমধ্যেই ইসরাইলিদের মৃতদেহ সংগ্রহ শুরু করেছে হামাস। মিশনটি সম্পন্ন করতে গাজার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় বিমান হামলা বন্ধের শর্ত দিয়েছে হামাস। মিসরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে এই শর্ত জানিয়েছে হামাস। পাশাপাশি, মৃতদেহ ফেরত দিতে কিছুটা সময় লাগবে। সে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে নমনীয় থাকতে হবে। জীবিত জিম্মিদের একসঙ্গেই হস্তান্তর করা হবে। হামাসের কাছে বন্দি থাকা ইসরাইলের জীবত-মৃত জিম্মিদের তালিকাও মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে দিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনি বন্দিমুক্তি নিয়ে আলোচনাও ইতিবাচক। হামাসের ওই সূত্র আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হলে গাজা উপত্যকা ছাড়বে কিনা তা হামাসের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে তাদের কোনো ক্ষতি করা হবে না বলেও গ্যারান্টি নেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

প্রায় দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসানে মিসরে শুরু হয়েছে হামাস-ইসরাইল নতুন শান্তি-আলোচনা। বাংলাদেশ সময় রোববার দুপুর ১২টার দিকে (মিসরীয় সময় সকাল ৯টা) মিসরের রাজধানী কায়রোতে পৌঁছেছে মার্কিন মধ্যস্থাতাকারী দল। কাতারের মধ্যস্থতাকারীসহ দোহা থেকে কায়রোতে পৌঁছেছে হামাসও। দুদিনের এ অলোচনার প্রধান বিষয় হবে বন্দি ও জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা। এছাড়া যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ‘আন্তঃফিলিস্তিনি সংলাপ’ও আয়োজন করবে মিসর। এর মাঝেই হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। আলোচনা ফলপ্রসূ করতে গাজায় বোমা বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আহবানও আমলে নিচ্ছে না ইসরাইল।

রোববারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। অন্তত ২৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অপুষ্টিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার উপত্যকাটির বিভিন্ন এলাকায় হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ১৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন আহত হয়েছেন।

কায়রোতে শান্তি আলোচনা : গাজা শান্তিচুক্তি আলোচনায় ইসরাইলের প্রতিনিধি হিসাবে অংশ নেবেন কৌশলগতবিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার। বন্দি সমস্যা সমাধানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আস্থাভাজন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন গাল হির্শ। যিনি ইসরাইলের বন্দি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সমন্বয়কারী হিসাবে কাজ করছেন। এছাড়াও রয়েছেন সেনাবাহিনীর বন্দি ইউনিটের প্রধান মেজর জেনারেল নিটজান আলোন এবং শিন বেট নিরাপত্তা সংস্থার একজন প্রতিনিধি। হামাস এখনো তাদের দল সম্পর্কে খুব বেশি কিছু প্রকাশ করেনি। মার্কিন মধ্যস্থতাকারী দলে রয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার উপদেষ্টা জামাতা জ্যারেড কুশনার। এরই মধ্যে ইসরাইল প্রথম ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। শনিবার রাতেই সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, উপত্যকাটি থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে ইসরাইল। একই সঙ্গে হামাস নিশ্চিত করলেই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বন্দি বিনিময় দ্রুত শুরুর আহ্বান জানিয়েছে হামাসও।

ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ : গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ ও গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা কর্মীদের মুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইউরোপ। যুক্তরাজ্য, ইতালি, পর্তুগাল, স্পেনের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে লাখো মানুষ। শনিবার লন্ডনে হওয়া বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে এবং কমপক্ষে ৪৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান এ সংখ্যা ৫০০ বলে জানিয়েছে। পুলিশের তথ্যমতে, স্পেনে ও বার্সেলোনায় প্রায় ৭০,০০০ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। অন্যদিকে মাদ্রিদের সরকার জানিয়েছে, রাজধানীতে প্রায় ৯২,০০০ জন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। তৃতীয়বারের মতো গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে ডাচ জনগণ। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ চলছে ইতালিতে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গাজা অভিমুখে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় হামলা চালানোর সময় থেকে রাজপথে নামা ইতালীয়দের সঙ্গে শামিল হয়ে রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছে দেশটির শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। এদিনের বিক্ষোভে ইসরাইলের সঙ্গে অবিলম্বে অস্ত্রবাণিজ্য বন্ধের দাবি তোলেন শ্রমিকরা।