জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র না হয়েও ছাত্রলীগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন ইউনুস মাতব্বর নামে এক ব্যক্তি। আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও তার আসল নাম আল-আমিন জয় বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, আমরা বিভাগের কটি দিয়েছি সিভি অনুযায়ী, তাতে ইউনুস আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বলে উল্লেখ করেছেন। সে অনুযায়ী আমরা কমিটি দিয়েছি। এখন যদি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টি ক্যাম্পাস প্রশাসন দেখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কারো ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকার সুযোগ নেই।
বিষয়টি নিয়ে আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, শুরুর দিকে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে তাকে দুই-একদিন দেখা গেলেও তাকে কখনও কোনো ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখিনি। কিন্তু তিনি আইন বিভাগের পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করেন।
তবে আইন বিভাগের একটি সূত্র জানায়, আইন বিভাগে ইউনুস মাতব্বর নামে এক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল শুনেছিলাম এবং কিছুদিন পরে তিনি অস্ট্রেলিয়া চলে যান। এই সুযোগে ‘আল-আমিন জয়’ নামে ওই প্রতারক ইউনুসের নাম ব্যবহার করে একটি ফেসবুক আইডি খুলে নিজেকে ওই শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেন। সে শুরুতে বলেছিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। কিন্তু রাজনীতির জন্য তিনি এখানে ভর্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউনুস মাতব্বরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করেন। কিন্তু তিনি যে এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন, সেটা আসলে আমাদের জন্য খুবই লজ্জার।
অন্যদিকে, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস গণমাধ্যমকে বলেন, আইন বিভাগের নথিপত্রে বর্তমানে চলমান শিক্ষাবর্ষের কোনো বর্ষে ইউনুস মাতব্বর নামে শিক্ষার্থী আছে বলে আমার জানা নেই। এমনকি এ নামের কোনো শিক্ষার্থী আগের শিক্ষাবর্ষগুলোতে ছিল বলে মনে হয় না। তারপরও আমি খোঁজ করে দেখব এ নামে কেউ ভর্তি হয়েছিল কিনা।
এছাড়া আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে মাত্র জেনেছি। এ রকম কোনোকিছু আমি জানি না। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ইউনুস যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। একজন বহিরাগত ব্যক্তি কোনোভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী না হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবে না।