বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন

টুঙ্গিপাড়ার বর্ণি ইউপি পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে মানুষের ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

 

শাহীন মুন্সী, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ২ নং বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এই সেন্টারের উদ্যোগতা তরিকুল ইসলাম রানার কর্তৃক প্রায় প্রতিদিন বর্ণি ইউপির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ কোন না কোন ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ফি তে মিলছেনা সেবা। বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে ২ শ টাকা হতে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। সেবা গ্রহীতারা বাড়তি টাকা না দিয়ে প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন কৌশলে মাসের পর মাস ঘুরাতে থাকে।

এছাড়াও বড় অংকের পয়সা দিলেই হয়ে যাচ্ছে ১২বছরের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত বয়সের। এমনকি অন্য জেলার বসবাসকারীকে স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে বর্ণি ইউনিয়নের জন্ম নিবন্ধন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানিয়েছে, বর্ণি ইউপির চেয়ারম্যান মিলিয়া আমিনুল হলেও তার স্বামী মোঃ আমিনুল ইসলাম প্রভাববিস্তার করে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোগতাকে দিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

এমনি গুরুত্বপূর্ণ অনিয়ম তুলে ধরে এলাকার সচেতন মহল ও কয়েকজন ভুক্তভোগী ব্যক্তি শামীম শেখ, শরিফুল ইসলাম, নাইম,আলী আজগর, হোসেন, মোঃ নাসির মুন্সী, ইমদাদুল জোমাদ্দার, শামিম মুন্সী, সাব্বির খান, লিমন শরিফ, সুজন মুন্সী, রাসেল শেখসহ আরো অনেকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক, ডি ডি এল জি গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ কারিরা সাংবাদিকদের জানান, লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দেয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ।

সরেজমিনে বর্ণি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে অভিযোগ কারি, এলাকার সাধারণ মানুষ ও ভুক্তভোগী নাসির মুন্সী, লাবনী বেগম ও শ্যামলির সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তবে বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোগতা তরিকুল ইসলাম রানা দাবি করে বলেন, তার সেন্টারে কোন সেবা গ্ৰহীতার কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়না।

উল্লেখ্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন ফি ০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সম্পুর্ন বিনা ফিসে। ৪৫ দিন হতে ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা। জন্ম বা মৃত্যুর ৫ বছর পর জন্ম বা মৃত্যুর সনদ ৫০টাকা। জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন ফি ১০০ টাকা। জন্ম তারিখ ব্যতীত নাম, পিতা- মাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি সংশোধনে ৫০ টাকা। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনের কপি সরবরাহ বিনা ফিসে। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় সনদের নকল সরবরাহ ৫০ টাকা ধার্য করা রয়েছে।

এবিষয়ে বর্ণি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলিয়া আমিনুল বলেন, আমার ইউনিয়নে কোন অনিয়ম হয়না। যারা আমার স্বামী ও ইউনিয়ন পরিষদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে তাদেরও দেখব। আমি ৮ মাস ক্ষমতায় এসেছি যে ভাবে কাজ করছি সেরা চেয়ারম্যানের খেতাব পাব।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ আল- মামুন বলেন, বর্ণি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এর অনিয়মের বিষয়ে এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর